সিসিক নির্বাচন:বিএনপি’র বিদ্রোহীদের ওপর শাস্তি চলতি সপ্তাহেই

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ সিলেট সিটি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া অর্ধশতাধিক প্রার্থীর ওপর কঠোর শাস্তির খড়গ এ সপ্তাহেই ঘোষণা করা হতে পারে। এরপরও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর চিন্তা নেই প্রার্থীদের। বিদ্রোহীদের মধ্যে ১১ জনকে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও ৭ জনকে জেলা ও নগর বিএনপি নির্বাচন থেকে বিরত রাখার ব্যাপারে রাজি করালেও সর্বশেষ মাত্র দু’জন মনোনয়ন জমা থেকে বিরত থাকেন। বাকিরা দলের নির্দেশ অগ্রাহ্য করে জোর কদমে নির্বাচনে রয়েছেন।সিটির ৪২টি ওয়ার্ডের চার-তৃতীয়াংশ বিএনপি’র প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্ধিতায়। তাদের অভিযোগ-রাজনীতিতে ত্যাগীদের যথাযথ মূল্যায়ন হয় না। কী বিএনপি, কী আ’লীগ।জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী ও কাউন্সিলর এডভোকেট রোকশানা বেগম শাহনাজ এবার সাধারণ ওয়ার্ডে নির্বাচন করছেন।

তিনি বলেন, আমরা কোনো দলে বা কোথাও যাইনি, জনগণের সঙ্গে আছি। গণতন্ত্র মানেই ‘ফর দ্য পিপল, অব দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল।’ আমরা এর মধ্যেই আছি। দলের আন্দোলনের জন্যও জনগণের দরকার আছে। অনেকটা একই রকম বক্তব্য নগর মহিলা দলের সভাপতি সালেহা কবির শেপির। সাবেক এই মহিলা কাউন্সিলর এবারও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন।সব প্রার্থীর প্রশ্ন, যেখানে ত্যাগের মূল্যায়ন নেই, সেখানে ত্যাগের পথে হাঁটবে কে? তাই দল, রাজনীতির জন্য নির্বাচন বর্জনে না গিয়ে ভোটের মাঠে তৎপর অনেকে। তাদের মতে, রাজনীতির নিয়ামক শক্তি হলো জনগণ। জনগণকে মাঠে রেখে নির্বাচন বর্জন করা যায় না। তাদের সঙ্গে নিয়ে বয়কট করা যেতে পারে। তবে সেই সময় এখন আর হাতে নেই।এসব প্রার্থীদের মুখে প্রয়াত মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, সিলেট বিএনপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি প্রয়াত খন্দকার আব্দুল মালিক, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আব্দুল গফ্ফার, আলী আহমদ, পদত্যাগী বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট শামসুজ্জামান জামান, সদ্যসাবেক নগর বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকীসহ আরও অনেকের ত্যাগ ও তাদের অবমূল্যায়নের কথা। ত্যাগীদের অবমূল্যায়নের কথা স্বীকার করেছেন দলের কয়েকজন সিনিয়র নেতাও।

জেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আব্দুল গফ্ফার বলেন, কেমন আছি, কোথায় আছি এটা দেখেই তো বুঝতে পারছেন মূল্যায়ন নাকি অবমূল্যায়ন হয়েছে আমার। লন্ডনে অবস্থানরত জেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ বলেন, শুধু বিএনপি নয়, গোটা রাজনীতিতেই ত্যাগীদের মূল্যায়ন নেই।পদত্যাগী বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট শামসুজ্জামান জামান বলেন, ত্যাগ ও ভোগ পরস্পরবিরোধী ও সাংঘর্ষিক। তাই এই দু’য়ের একত্র বাস কখনোই হয় না। রাজনীতির অভ্যন্তরেও এই দুই আদর্শের লড়াই বর্তমান। যার যেটা পছন্দ সেটা বেছে নিচ্ছেন। ভোগীদের কাছে মূল্যায়নের আশা করা ত্যাগীদেরই ভুল।নগর বিএনপি’র সদ্যসাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকী বলেন, তছনছ হয়ে পড়া বিএনপিকে নগরে সংগঠিত ও শক্তিশালী করলাম। শ্রম-ঘাম দিলাম, রাত-দিন খাটলাম, পকেটও খালি করলাম দলের পেছনে। অথচ সর্বশেষ দেখি আমিই নির্বাচনের প্রার্থীতার অযোগ্য, সবাই আছে, আমি নেই।জেলা বিএনপি সভাপতি কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, দলের পক্ষ থেকে সতর্কতা ও চিঠি দেয়া শেষ। এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুসারে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।অপর এক সূত্র জানায়, ২ জুন আজীবন বহিষ্কারের নোটিশ যাবে বিএনপি’র কাউন্সিলর প্রার্থীদের হাতে।

You might also like