সুনামগঞ্জের চলতি নদীতে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু পাথর উত্তোলন

শামীম আহমদ তালুকদার
সত্যবাণী

সুনামগঞ্জ থেকেঃ সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের কাইয়ারগাওঁ গ্রামের চলতি নদীতে কাইয়ারগাওঁ গ্রামের নদীর পাড় কেটে প্রতিদিন ২০টি বড় বড় বলগেট নৌকায় ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে উত্তোলন করে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকার বালু ও পাথর কাইয়ারগাও গ্রামের একটি প্রভাবশালী দাঙ্গাবাজ চক্র। প্রশাসনের কঠোর নিষেধাষ্ণা অমান্য করে এভাবে নদীর পাড় কেটে নিলেও যেন দেখার কেউ নেই ।ফলে এমন বেপরোয়া নদীর পাড় কেটে গুটি কয়েকজন আঙ্গুল ফুলে গলাগাছ বনে যাওয়ায় তাদের অত্যাচার আর নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন কাইয়ারগাওঁ গ্রামের নিরীহ লোকজন। প্রতিনিয়ত এই গ্রামের নদীর পাড় কেটে বালু ও পাথর উত্তোলন করার সময় পুলিশ অভিযান পরিচালনা করলে ও এই চক্রটি হামলা চালাচ্ছে নিরীহ পরিবারদের উপর।

সরেজমিনে মঙ্গলবার কাইয়ারগাঁও গ্রামে গিয়ে দেখা যাচ্ছে প্রশাসনের চোখ ফাকিঁ দিয়ে দিনদুপুরে অবৈধভাবে বেশ কয়েকটি ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে নদীর পাড় কেটে প্রকাশ্যে দিবালোকে লাখ লাখ টাকার বালু ও পাথর উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছে কাইয়ারগাওঁ গ্রামের ভূমিখেকো প্রভাবশালী মকবুল হোসেন মুগল, শুক্কুর আলী ও ওমরের নেতৃত্বে একটি প্রভাবশালী চক্র।এই ভূমিখেকো চক্রের অত্যচার আর নির্যাতনে কাইয়ারগাওঁ গ্রামের নিরীহ লোকজন কারো প্রতিবাদ করার সাহস না থাকায় তারা বালু ও পাথর উত্তোলন অব্যাহত রাখায় একদিকে যেমন নদী তীরবর্তী গ্রামগুলো হয়ে পড়েছে হুমকির মুখে,দেখা দিয়েছে নদী ভাঙ্গন। আর মকবুল ও শুক্কুর গংরা অল্পদিনে বনে যাচ্ছেন লাখপতি।ইতিমধ্যে পুলিশ কয়েকবার অভিযান চালিয়ে বালু ও পাথর বেশ কয়েকটি বলগেট নৌকা আচক করে জরিমানা করলে থেকে নেই শুক্কুর, মোগল ওমরের নদীর পাড় কাটার মহোৎসব।

তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না করেও গত ২৬ অক্টোবর কাইয়ারগাওঁ গ্রামের ভূমিখেকো প্রভাবশালী মকবুল হোসেন মুগল,শুক্কুর আলী ও নজরুল ইসলাম মানিকের নেতৃত্বে ৩০ জনের একটি দল নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলনের মাধ্যমে জিরো থেকে হিরো বনা সন্ত্রাসীরা চাইনিজ কুড়াল ও রামদা নিয়ে একই গ্রামের নিরীহ মোঃ ফরিদ মিয়া ও তাদের স্বজনদের বাড়িতে প্রবেশ করে হামলা চালিয়ে পরিবারের ৮ জনকে নারীপূরুষকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন। আহত ফরিদ মিয়ার বাড়ির লোক বাড়িঘরে না থাকার সুযোগে সন্ত্রাসীরা ঐ নিরীহ পরিবারের বাড়িঘরে ভাংচুর ও লুটপাঠ করে সোনা গহনা টাকা পয়সা আসবাবপত্র নিয়ে যায়। এ ঘটনায় গুরুতর আহত মো. ফরিদ মিয়া বাদি হয়ে গত ২৭ অক্টোবর একই গ্রামের মো: মকবুল হোসেন (মগল),মো: নজরুল ইসলাম(মানিক), শুক্কুর আলী,মো: ফয়েজ আলী সহ ২৪ জনকে আসামী করে সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৪৮ । মামলা দায়েরের পর গত ২রা নভেম্বর সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমানসহ উচ্চ পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সকল আসামীদের দ্রুত গ্রেফতারের নির্দেশ প্রদান করেন। ঐ রাতেই পুলিশ কাইয়ারগাঁও গ্রামে অভিযান চালিয়ে মো. মুক্তার হোসেন নামে এক আসামীকে গ্রেপ্তার করে।

এই চোরাকারবারীরা গ্রামের মধ্যে প্রভাবশালী হওয়ার দরুণ দীর্ঘদিন ধরে কাইয়ারগাওঁ গ্রামের পাশে চলতি নদীতে নদীর পাড় কেটে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে বলগেট নৌকা দিয়ে প্রতিরাতে লাখ লাখ টাকার বালু উত্তোলন করে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শহীদুর রহমান আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান নদীর পাড় কেটে বালু ও পাথর উত্তোলনে প্রশাসনের নিষেধাষ্ণা অমান্য করে যারা নদীর পাড় কেটে বালু ও পাথর উত্তোলন তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ কঠোর অবস্থানে বলে ও তিনি জানান।এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ কাইয়ারগাওঁ গ্রামের একটি মহল কর্তৃক অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলনের সত্যতা স্বীকার করে জানান প্রতিনিয়ত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হলে তাদের বিষয়ে জেলা প্রমাসনের জরুরী মিটিং হয়েছে বলে ও তিনি জানান। তবে এই নদী তীরবর্তী গ্রামের পাশে যতসব বলগেট নৌকা পাওয়া যাবে সেগুলো সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

You might also like