সুনামগঞ্জের জলমহালে জেলেকে জবাই করে হত্যার বিচার চেয়ে বর্মণ কল্যাণ পরিষদের মানববন্ধন

শামীম আহমদ তালুকদার
সত্যবাণী

সুনামগঞ্জ থেকেঃ সুনামগঞ্জের ধর্মপাশার সুনই জলমহালে মৎস্যজীবী শ্যামাচরণ বর্মণ (৬২) কে গলা কেটে হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে সিলেট বিভাগীয় বাংলাদেশ ক্ষত্রিয় বর্মণ সম্প্রদায়ের ইতিহাস অনুশীলন ও কল্যাণ পরিষদের ব্যানারে সুনামগঞ্জে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন বর্মণ সম্প্রদায়ের লোকজন।রবিবার দুপুরে সুনামগঞ্জ শহরের আলফাত স্কয়ারে (ট্রাফিক পয়েন্ট) এই মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের সিলেট বিভাগীয় আহবায়ক সিলেট মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ভবতোষ রায় বর্মণ রানা, সিলেটের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মো. আব্দুল করিম,নিহত শ্যামাচরণের ছেলে চন্দন বর্মণ, সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক সুধির রঞ্জন বর্মণ, সদস্য সচিব বীরলাল বর্মন, লেখক সজল চন্দ্র সরকার, সংগঠনের সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা শাখার সভাপতি রাজ কুমার বর্মণ ও সাধারণ সম্পাদক লিটন বর্মন প্রমুখ।প্রসঙ্গত, সুনামগঞ্জের ধর্মপাশার সুনই জলমহাল নিয়ে দুই মৎস্যজীবী সমিতির দ্বন্দ্ব চলছিল দুই বছর ধরে। জলমহালের খাজনা পরিশোধ করে দুই পক্ষই মহালের মালিকানা দাবি করে আসছে। সম্প্রতি চন্দন বর্মণের পক্ষ স্থানীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ও তাঁর ভাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেলন হোসেন রোকনের বিরুদ্ধে জাতীয় প্রেসক্লাবে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছিল।

এই দ্বন্দ্বের জের ধরে গত ৭ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮ টায় জলমহালে পাড়ে থাকা চন্দন বর্মণের পক্ষের মাছের খলায় আগুন ধরিয়ে দেয় প্রতিপক্ষ। প্রতিপক্ষের লোকজন সুনই গ্রামের সুনই মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লি. এর সভাপতি চন্দন বর্মনের পিতা শ্যামাচরন বর্মণকে গলা করে হত্যা করে। এসময় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়। জলমহালে থাকা একপক্ষের স্থাপনা (খলা) পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ওই রাতেই ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে পুলিশ ২৩ জনকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করে।
এ ঘটনায় ধর্মপাশা থানায় গত ৯ জানুয়ারি শনিবার সুনামগঞ্জ-১ আসনের স্থানীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, তাঁর ভাই ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেলন হোসেন রোকন, আরও দুই ভাই মোবারক হোসেন মাসুদ ও মোবারক হোসেন যতনসহ ৬৩ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় এজাহার নিয়ে যান নিহতের ছেলে চন্দন বর্মন। পুলিশ তাদের মামলা আমলে নেয়নি। কিন্তু পরদিন অজ্ঞাতনামা ৬৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে পুলিশের একজন সাব ইন্সপেক্টরকে বাদী করে থানায় একটি মামলা।এরপর গত ১৪ জানুয়ারি ধর্মপাশা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন নিহতের ছেলে চন্দন বর্মন। কিন্তু থানায় একটি মামলা চলমান থাকায় থানা থেকে আদালতে প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত আদালতে দাখিল করা মামলাটি স্থগিত এবং থানা থেকে প্রতিবেদন আসার পর এ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে মর্মে আদেশ দেন আদালত।

You might also like