সুনামগঞ্জে গুচ্ছগ্রামে কর্তৃক ৮বছরের শিশুকে ধষর্ণের অভিযোগ
শামীম আহমদ তালুকদার
সত্যবাণী
সুনামগঞ্জ থেকেঃ সুুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের পুরাতন লক্ষণশ্রী গুচ্ছগ্রামের ১৫নং ঘরের দিনমুজুর বিধবার ৮ বছরের এক কন্যা শিশুকে ধর্ষন করেছে পাশের ১৪নং ঘরের মো. আলাউর রহমানের বিবাহিত ছেলে লম্পট মো. রিপন মিয়া(২৫)। ধর্ষণের ঘটনাটি শুনে তাৎক্ষনিক বৈঠকে বসেন গুচ্ছগ্রাম কমিটির সভাপতি মো. রইছ মিয়া, ৩নং ওয়ার্ডের সম্ভাব্য ইউপি সদস্য প্রার্থী কুতুবপুর গ্রামের মো. মাহবুবুর রহমান চৌধুরীসহ ৪/৫জন সালিশ ব্যক্তিরা। তাদের সময় কালক্ষেপনে ধর্ষনের ঘটনার দুইদিন অতিবাহিত হয় বলে জানান ধর্ষিতার স্বজনরা। অথচ ঘটনাটি ঘটেছে গত পহেলা মে শনিবার দুপুরে।
ধর্ষিতার পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের ন্যায় ৪ সন্তানের জননী ধর্ষিতা শিশুটির মা দিনমুজুর পাথর ভাঙ্গার কাজে বাড়ির বাহিরে কাজের সন্ধানে চলে যাওয়ার পর ঐ শিশুটি তার ঘরে একা ঘুমিয়ে ছিল।এই সুযোগ বুঝে ধর্ষণকারী রিপন মিয়া খালিঘরে ঢুকে শিশুটির মুখে চাপা দিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে শিশুটি অধিক রক্তখননে চিৎকার শুরু করলে ধর্ষনকারী পালিয়ে যায়। শিশুটির মা বাড়িতে এসে তার শিশুকন্যাটির রক্তখনন দেখে এই গুচ্ছগ্রামের সভাপতি রইছ মিয়াসহ গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের বিষয়টি অবহিত করার পরই রইছ মিয়া ও মাহবুবুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে ৪/৫ জনের সালিশ ব্যক্তিত্বরা বৈঠক বসলেও কোন সুরাহা না হওয়ার কারণে ধর্ষনের ঘটনাটি দুদিন অতিবাহিত হয়।
সোমবার সকাল ১১টায় বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের নজরে আসার পর সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলেন এবং তারা নির্যাতিত শিশু ও তার মাকে পরামর্শ দিয়ে শিশুটির মেডিকেল চেকআপের জন্য সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে পাঠান। পরবর্তীতে সেখানকার কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডা. অনুপ তালুকদার শিশুটির প্রাথমিক পরীক্ষা শেষে হাসপাতালের ৪ তলার গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। শিশুটির শারীরিক অবস্থা ভাল না হওয়ায় সে বর্তমানে ৪ তলার গাইনি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।এ ব্যাপারে ধর্ষিতার মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, আমি বিভিন্ন পাথর কোয়ারীতে দিনমুজুরের কামকাজ করে কোনমতে বাচ্ছাখাচ্ছাদের নিয়ে অনহারে অর্ধাহারে জীবন জীবিকা পরিচালনা করে আসছি। এই গুচ্ছগ্রামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দয়ায় একটি টিনসেটের ঘর পাওয়াতে মাথা গোজার ঠাই পেয়েছি। কিন্তু আমার পাশের ঘরে রিপন মিয়া আমার অবুঝ শিশুটিকে খালিঘরে একা পেয়ে কিভাবে ধর্ষণ করতে পারল বলে অঞ্জান হয়ে পড়েন। তিনি এই ধর্ষণকারী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জন্য সরকার ও প্রশাসনের নিকট জোর দাবী জানান।
এ ব্যাপারে ধর্ষণকারীর পিতা মো. আলাউর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগযোগ করা হলে মোবাইল ফোনটি বন্ধ থাকায় বক্তব্যটি নেয়া সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে সালিশ ব্যক্তিত্ব মো. মাহবুবুর রহমান চৌধুরীর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে বৈঠকে উপস্থিত থাকলেও ধর্ষনের ঘটনার বিষয়টি তাদের কেহ অবহিত করেননি। তখন নাকি ধর্ষিতার পরিবারের লোকজন জানান শিশুটি বুকে ব্যাথা অনুভব করে। ধর্ষনের ঘটনা তখন জানতে পারলে নাকি শিশুটিকে হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য পাঠানোর কথা বলতেন।এ ব্যাপারে গুচ্ছগ্রাম কমিটির সভাপতি ও সালিশ ব্যক্তিত্ব মো.রইছ মিয়ার বিরুদ্ধে ধর্ষনের ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন আমরা যারা সালিশে উপস্থিত ছিলাম তাদেরকে হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলাম কিন্তু তারা সময়মতো না গেলে তো আমাদের কিছু করার নেই বলে জানান।এ ব্যাপারে হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার অনুপ তালুকদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, শিশুটিকে গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শহিদুর রহমান জানান ঘটনাটি শুনে তাৎক্ষণিক পুলিশকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।