সুনামগঞ্জ শহরতলীর ২ ইউনিয়নের মানুষের ভরসা ‘হাতে বাওয়া’ নৌকা

সিলেট অফিস 
সত্যবাণী
সুনামগঞ্জ শহরতলির দু’টি ইউনিয়নের ৫টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা ইসলামপুর-হালুয়ারগাঁও সড়ক। ২ বছর আগে জাইকার অর্থায়নে দেখার হাওরের মাঝ দিয়ে ডুবন্ত সড়কটি নির্মাণ করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।
এই সড়ক ধরে শুকনো মৌসুমে প্রায় ৬ মাস সদর উপজেলার লক্ষ্মণশ্রী ইউনিয়নের ইসলামপুর, আব্দুল্লাহপুর ও হালুয়ারগাঁও এবং মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের ইছাগড়ি-কলাউড়া গ্রামের মানুষজন ১৫/২০ মিনিটেই জেলা সদরে যাতায়াত করতে পারেন। রাস্তা শুকনো থাকলে রিকশা, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত রিকশায় যাতায়াত করেন এলাকাবাসী।
কিন্তু বর্ষা বা বন্যায় সড়কটি ডুবে গেলে জেলা শহরের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তখন ‘হাতে বাওয়া’ ছোট ছোট নৌকা দিয়েই দেখার হাওর পাড়ি দিয়ে এলাকাবাসী সুনামগঞ্জে আসতে হয়। শিক্ষার্থীরাও যাতায়াত করে এভাবেই। এরফলে বিভিন্ন সময় হাওরের ‘আফালের’ মুখে পড়ে দুর্ঘটনাও ঘটে।
সরেজমিনে পরিদর্শন করে সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানান, সড়কের মাথায় হাতে বাওয়া অনেক নৌকা বাঁধা। এসব নৌকায় ওই গ্রামগুলো থেকে শিক্ষার্থীরা যেমন স্কুল-কলেজে আসছে, তেমনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও শহর থেকে ওখানে নৌকায় স্কুলে যাচ্ছেন। তবে সচ্ছল মানুষের জরুরি কাজের জন্য হাতে বাওয়া ছোট নৌকা থাকলেও দরিদ্র মানুষের এই সুযোগ নেই। তাছাড়া যাত্রী পরিবহনে ইঞ্জিনচালিত নৌকার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় অনেকেই যাতায়াতে সমস্যায় আছে।
ইসলামপুর গ্রামের সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আজমান হোসেন জানায়, আমরার রাস্তাঘাট ডুইব্যা গেছেগা। পানির লাগি ইস্কুলে যাইতাম পারি না। আমরা গরিব মানুষ, নৌকা নাই, কিচ্ছু নাই। এই সময় আইলে আমরার ইস্কুল বন্ধ দিতে অয়।
হালুয়ারগাঁও গ্রামের আজিজুর রহমানকে দেখা গেল দু’জন সঙ্গী নিয়ে ডুবন্ত সড়ক ধরে কোমরপানি ভেঙে আসছেন। নৌকা না থাকায় এভাবেই তাঁকে জরুরি কাজে যাতায়াত করতে হচ্ছে। আজিজুর রহমান বলেন, আমাদের পাঁচটি গ্রামের একমাত্র রাস্তা এটি। বছরের অর্ধেক সময় বন্যা ও বর্ষায় ডুবে থাকে। আমরা চলাচল করতে পারি না। এবার দু’দফা বন্যায় রাস্তাটি ডুবে আছে। আমরা এখন হাতরাইয়া (সাঁতরে) পার অই।
লক্ষ্মণশ্রী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল অদুদ বলেন, সড়কটি ডুবে গেলে সুনামগঞ্জ জেলা সদরসংলগ্ন শহরতলির দু’টি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের মানুষের ইসলামপুর-হালুয়ারগাঁও যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। তখন নৌকাই তাদের একমাত্র ভরসা। তবে সবার নৌকা নেই, যাত্রীবাহী ইঞ্জিনচালিত নৌকাও নেই। তাই যাতায়াত সমস্যায় ভুগছে এলাকাবাসী।

You might also like