সুমা বেগমের ঘাতক স্বামীকে যাবজ্জীবন দন্ড দিয়েছে আদালত

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

লন্ডন : সুমা বেগমের হত্যাকারী, ঘাতক স্বামী আমিনান রাহমানকে যাবজ্জীবন দণ্ড দিয়েছেন লন্ডনের ওল্ড বেইলি আদালত। মঙ্গলবার সাজা ঘোষণার আগে একই আদালতে মামলার শুনানি হয়। সাজা ঘোষণার সময় বিচারক তাকে ‘এভিল ম্যান’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, লাইসেন্সে মুক্তির জন্যে আবেদন করার আগে ৪৭ বছর বয়সী আমিনানকে অন্তত ২২ বছর জেল খাটতে হবে।আদালতে জানানো হয়েছে, ২০২৩ সালের ২৯শে এপ্রিলে আমিনান রহমানের স্ত্রী ২৪ বছর বয়সী সুমা বেগম ভিডিও কলের মাধ্যমে তার বয় ফ্রেন্ডের সাথে আলাপে ছিলেন। তাকে ওড়না দিয়ে দম বন্ধ করে হত্যার পর স্যুটকেসে ভরেন ঘাতক স্বামী। তখন অপর প্রান্তে তা সুমা বেগমের বয় ফ্রেন্ড শাহীন মিয়ার মোবাইলে সব রেকর্ড হয়ে যায়।সুটকেসে ভরে সুমা বেগমের দেহ রিভার লি’তে ফেলে দেন ঘাতক আমিনান রহমান। এর দশ দিন পর একজন পথচারী থেমস নদীতে সুটকেসটি ভাসতে দেখতে পান। আদালতের শুনানিতে আরো জানানো হয়, ২০১৯ সালে লন্ডনে অবস্থানরত আমিনান রাহমানের সাথে বাংলাদেশ থেকে সুমা বেগমের বিয়ে হয়েছিল টেলিফোনে। ২০২০ সালে বিলেতে আসার পর স্বামী-স্ত্রী হিসেবে তাদের সংসার জীবন শুরু হয় ব্রিস্টলের সমারসেটে। সেখানে আমিনান শেফের কাজ করতেন। ২০২৩ সালের এপ্রিলে তারা লন্ডনে আসেন এবং ইস্ট লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটসের ডকল্যান্ড এলাকায় তাদের দু সন্তান নিয়ে বসবাস শুরু করেন। ২০২১ সাল থেকে সুমা বেগেমের সমবসয়ী সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাসরত শাহীণ মিয়া নামে এক পুরুষের সাথে অনলাইনে পরকীয়া শুরু হয়েছিল। ঘটনার দিন অর্থাৎ ২৯শে এপ্রিল মধ্যরাতে তাদেরকে ভিডিও কলে পেয়ে যান স্বামী আমিনান রাহমান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দুই সন্তানের সামনেই গলায় ওড়না পেঁচিয়ে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন তিনি। তারপর সন্তান কোলে নিয়ে সেই লাগেজ নিয়ে বের হন তিনি।আদালতে, সুমা বেগমের মা রেহানা বেগমের পক্ষে একটি বিবৃতি পড়ে শোনান নিহত সুমার সৎ ভাই আব্দুল আমিন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, দেশে থাকতে সুমা বেগম সব সময় হাসিখুশি ছিলেন। পরিবারের সঙ্গে সব সময় কাটাতে ভালোবাসতেন। কিন্তু ব্রিটেনে আসার থেকে তিনি পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন না। তবে যখনই কথা বলতেন, তখনই একটি চাপা দু:খ প্রকাশের চেষ্টা করতেন। পরিবারের সদস্যরা বিশ্বাস করেন, বিলেতে আসার পর থেকেই সুমা বেগমের উপর নির্যাতন করতে শুরু করেন তার ঘাতক স্বামী আমিনান রাহমান।

You might also like