স্থায়ী কমিটিতেও ৩ পদ শূন্য মেয়াদ শেষ হলেও হয়নি পূর্ণাঙ্গ কমিটি
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
ঢাকাঃ দলের জাতীয় কাউন্সিলের তিন বছর পর দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির শূন্য দুটি পদে দুইজনকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি।তবে এমকে আনোয়ার, আসম হান্নান শাহ ও তরিকুল ইসলামের মৃত্যুতে এখনো দলের স্থায়ী কমিটির তিনটি পদ শূন্য রয়েছে। আর এই শূন্য পদগুলো জাতীয় কাউন্সিলের আগেই, নাকি পরে পূরণ করা হবে সে বিষয়ে দলটির সিনিয়র নেতারা কিছুই জানেন না।বিএনপির সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, এটা বলা মুশকিল। কারণ স্থায়ী কমিটির সদস্য কাউন্সিলে নির্ধারণ করা হয়। আর সেটা না হলে চেয়ারপার্সন স্থায়ী কমিটির সদস্য নির্বাচিত করতে পারেন। কিন্তু সেটা (কাউন্সিল) করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ করোনাভাইরাসের জন্য আইনগতভাবে এধরণের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ রয়েছে।যদি কাউন্সিলের আগেই স্থায়ী কমিটির শূন্য পদগুলো পূরণ করা হয় তাহলে কারা আসছেন এই পদগুলোতে? এ নিয়ে বিএনপির ভিতর ও বাইরে নানা রকম জল্পনা-কল্পনা চলছে।
বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, স্থায়ী কমিটিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমানের নাম আলোচিত হচ্ছে। অন্য যাদের নাম আলোচনায় রয়েছে, তারা হলেন- বিএনপির বর্তমান কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, বরকত উল্লাহ বুলু এবং মোহাম্মদ শাহজাহান।এদিকে দল থেকে পদত্যাগ করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান। তবে তিনি পদত্যাগ করলেও তার পদত্যাগপত্র এখনো গৃহীত হয়নি।
এছাড়া বিএনপির বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের মেয়াদ শেষ হলেও এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেনি দলটি। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ দলের ৬ষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে বিএনপির নতুন কমিটি গঠিত হয়। ওই সময় থেকেই দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, যুব বিষয়ক সম্পাদক, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক এবং সহ-ছাত্র বিষয়ক সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদও ফাঁকা রাখা হয়েছিলো। পরবর্তীতে এসব পদে কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে পদ রয়েছে মোট ১৯টি। গত কাউন্সিলের পর স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে ১৭ জনের নাম ঘোষণা হয়। দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান (সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান) তারেক রহমান, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, তরিকুল ইসলাম, লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আসম হান্নান শাহ, এম কে আনোয়ার, মির্জা আব্বাস, রফিকুল ইসলাম মিয়া, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নাম ছিল সেখানে।
তবে এম কে আনোয়ার, আ স ম হান্নান শাহ ও তরিকুল ইসলামের মৃত্যুতে এখন দলের স্থায়ী কমিটির তিনটি পদ শূন্য রয়েছে।অন্যদিকে চলতি বছরের শেষ দিকে কিংবা আগামী বছরে বিএনপির ৭ম জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। আর এজন্য সারাদেশে দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর কমিটি দ্রুত করা হচ্ছে। তবে ওই সময় দেশে করোনাভাইরাস থাকলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সভা কিংবা সমাবেশ করে দলটির কাউন্সিলের কথা ভাবা হচ্ছে।
বিএনপির জাতীয় কাউন্সিলে বিষয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সাংগঠনিক কার্যক্রম কাউন্সিলের একটা অংশ। অর্থাৎ আমাদের দেশব্যাপী প্রতিটা জেলা, উপজেলা বা থানার যতটা ইউনিট আছে সেগুলো কাউন্সিলে পূর্বেই সম্পন্ন করতে হয়। সেই কাজটা আমাদের শুরু হয়েছে। আমি বলব, বিশ্ব পরিস্থিতি ও বাংলাদেশের পরিস্থিতি আমাদের কখন কাউন্সিল করার সুযোগ সৃষ্টি হবে সেজন্য আমাদেরকে অপেক্ষা করতে হবে। একটা সময় কাউন্সিল হবে।তিনি বলেন, বিএনপি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল। এর একটা কাউন্সিল ভার্চুয়াল বা অনলাইনে হয় না। কাউন্সিল মানে হলো ব্যাপক। প্রায় চার হাজারের মতো কাউন্সিলর আছে। তারপরে ডেলিগেইট। আপনারা জানেন যে, আমাদের কাউন্সিলে লাখ লাখ লোক সমবেত হয়। সব কিছু আপনাদের বিবেচনায় রাখতে হবে।