স্পেনের জাতীয় জাদুঘরে অভিবাসীদের আনন্দ উৎসব

কবির আল মাহমুদ
সত্যবাণী

মাদ্রিদ,স্পেন থেকেঃ স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদের প্রাণকেন্দ্র অবস্থিত আন্তর্জাতিক জাদুঘর “রেইনা সুফিয়া যাদুঘর” পরিচলানা কমিটির আমন্ত্রণে বাংলাদেশি মানবাধিকার সংগঠন ভালিয়েন্তে বাংলাসহ অন্যান্য দেশের ৩৫টি সামাজিক ও মানবাধিকার সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে ‘প্রবাসে আনন্দের একদিন’ শীর্ষক এক জমকালো উৎসব হয়ে গেল গত শনিবার রেইনা সুফিয়া যাদুঘর পার্কে। বিভিন্ন দেশের কয়েক’শ প্রবাসী আনন্দের বানে ভাসায় এ আয়োজন। ছিল নারীদের পিঠা প্রতিযোগিতা, সঙ্গীত ও নাচ, সেনেগালের পারসিউশনিস্টলা রুয়েদা, কলম্বিয়া সঙ্গীতডেসি মেসিয়াস গার্সিয়া, কলম্বিয়ান নাচ “কবিতা ভুলে যাওয়া”, প্রবাসী শিল্পীদের সংগীত পরিবেশন, নৃত্য, ইত্যাদি।

প্রবাসী বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের একাধিক সংগঠন প্রতি বছরের ন্যায় এবছরেও আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে আয়োজন করে বিভিন্ন বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের। কিন্তু এবছর মাদ্রিদ প্রবাসীদের আনন্দ ছিল একটু ভিন্ন।শনিবার (১২ জুন) স্থানীয় সময় বিকেল ৪ টায় রেইনা সুফিয়া যাদুঘর পার্ক পরিচালনা কমিটির তত্ত্বাবধানে আয়োজন করা হয় এই প্রবাস উৎসবের। এতে দলমত-নির্বিশেষে যোগ দেন বাংলাদেশ,আফ্রিকা, আলজেরিয়া, মরক্কো, কলম্বিয়াসহ ১৫টি দেশের বিপুলসংখ্যক প্রবাসী। এসময় প্রবাসীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য দেন মিউজিয়ামের প্রধান পরিচালক ম্যানুয়েল বোরজ-ভিল্লে, পরিচালক আনা লঙ্গোনি, রাফায়েল পিমেণ্টেল, ভালিয়েন্তে বাংলার সভাপতি মোহাম্মদ ফজলে এলাহী, রেড ইন্টার লাভাপিসের পেঁপা তররেস, রেড সলিদাদের নিনেস,সেন্ট্রো দে ডোমেষ্টিকর রাফায়েল, মাইতে, মারিয়া দে সোনিয়া প্রমুখ।অনুষ্টানে রেইনা সুফিয়া যাদুঘর এর পরিচালক আনা লঙ্গোনির বিদায় উপলক্ষে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। এসময় বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে তাকে নানা পুরস্কার প্রধান করা হয়।

ম্যানুয়েল বোরজ-ভিল্লে, প্রবাসীদের প্রশংসা করে রেইনা সুফিয়া মিউজিয়ামের বিভিন্ন কার্যক্রমে ওপর সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও স্পেনের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের অবদানের প্রশংসা করেন। তিনি সবাইকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার পাশাপাশি স্থানীয় আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে অনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থেকে প্রতিটি দেশের সম্মান বজায় রাখতে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান।আয়োজনটি উপস্থিত সকলকে কিছুটা সময়ের জন্য হলেও আপ্লুত করে। উৎসবে রেইনা সুফিয়া মিউজিয়ামের কর্মকর্তাসহ প্রবাসী বাংলাদেশিরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।

উৎসবে বিভিন্ন দেশের হরেক রকম খাবারের পাশাপাশি আফ্রিকান, এশিয়ান ,আরাবী ও স্প্যানিশ সংগীত পরিবেশন করা হয়।এসময় বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভালিয়েন্তে বাংলার সাধারন সম্পাদক রমিজ উদ্দিন সরকার ,নারী নেত্রী আফরোজা রহমান, সাংবাদিক কবির আল মাহমুদ, তানিয়া সুলতানা ঝরনা এরিক, শাওন আহমদ, জাবেল ,তেরেসা, দেলোয়ার হোসেন, আল আমিন পালোয়ান , জুলহাস উদ্দিন, মাহমুদা আক্তার, মামুন , গিয়াস উদ্দিন, ইসলাম উদ্দিন,মেরেছে, ঈসা প্রমুখ।

এসোসিয়েশন ভালিয়েন্তে বাংলার সভাপতি মোহাম্মদ ফজলে এলাহী বলেন, প্রবাসে নিজেদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ বাড়িয়ে তোলা এবং বিদেশে দেশের আবহমান সংস্কৃতির ঐতিহ্যকে অগ্রসরমান করা। সেই সাথে ভিনদেশিদের কাছে বাঙালির সংস্কৃতির ঐতিহ্য পৌঁছে দেওয়া এবং পরিবার পরিজন নিয়ে সবাই একসঙ্গে হওয়ার আনন্দটা সব সময় অন্যরকম।বাংলাদেশী নারী নেত্রী আফরোজা রহমান বলেন, করোনার কারণে অনেক দিন পর এরকম একটি সুন্দর এক বিকেলে কাটালো সকলের। এজন্য তিনি রেইনা সোফিয়া জাদুঘর পরিচলনা কমিটিকে ধন্যবাদ জানান।অনুষ্ঠানে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যারা মৃত্যু বরণ করেছেন তাদের আত্মার শান্তি কামনা করে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

উল্লেখ্য ২০১৮ সাল থেকে রাজধানী মাদ্রিদে বসবাসরত অভিবাসীদের নিয়ে প্রতি বছর এই পিকনিক বা আনন্দ উৎসব আয়োজন করে আসছে রেইনা সুফিয়া যাদুঘর পরিচলানা কমিটি। শুদু মাত্র গত বছর করোনার জন্য এই অনুষ্ঠান করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া রেইনা সুফিয়া যাদুঘর কেন্দ্রিক ৩৫টি মানবাধিকার সংগঠন একত্রিত হয়ে অভিবাসীদের দাবী দাওয়া নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।

You might also like