১২ বছরে ওসমানী বিমানবন্দরে যাত্রী বেড়েছে ৪ গুণ

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

সিলেট: সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত ১২ বছরে যাত্রী বেড়েছে ৪ গুণ। ২৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকালে বিমানবন্দরের কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে এ তথ্য জানান বিমানবন্দরের পরিচালক মো. হাফিজ আহমদ।

তিনি জানান, ২০১১ সালে যেখানে এ বিমানবন্দরে যাত্রীর সংখ্যা ছিলো ২ লাখ, সেখানে চলতি বছরের প্রথম নয় মাসেই এ বিমানবন্দরের সেবা নিয়েছেন প্রায় সাড়ে ৫ লাখ যাত্রী। বছর শেষে এ সংখ্যা ৮ লাখে পৌঁছুবে বলে তিনি আশাবাদী।

তিনি বলেন, সিলেটের সন্তান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন ও বিমান ও পর্যটনবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উন্নয়নের ব্যাপারে সবসময়ই আন্তরিক। এছাড়া বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিকতা ও প্রচেষ্টায় দিন দিন ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রীসেবার মান বৃদ্ধি পাচ্ছে।

নিরাপত্তাব্যবস্থা প্রসঙ্গে সিভিলে এ্যাভিয়েশনের উপ-পরিচালক এমএ গনি বলেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কোনো ঘাটতি নেই। পুরো বিমানবন্দর সিসি ক্যামেরার নজরদারিতে রয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিতে কর্মীরাও অত্যন্ত তৎপর।

এ প্রসঙ্গে বিমানবন্দরের পরিচালক মো. হাফিজ আহমদ ভ্রমণের সময় যাত্রীদের নিজ পরিচয় নিশ্চিত করার আহবান জানিয়ে বলেন, যাত্রীরা জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স এই ৩টির যেকোনো একটি যেনো ভ্রমণের সময় সাথে রাখেন।

ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দর্শনার্থীদের দুর্ভোগ প্রসঙ্গে বিমানবন্দরের পরিচালক বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে ৩০ মিটারের মধ্যে দর্শনার্থীদের প্রবেশ না করতে দেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ কারণে দর্শনার্থীদের দূরে সরিয়ে রাখা হয়।

তিনি বলেন, তারপরও দর্শনার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবে বিমানবন্দরের পোর্চকে সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই শুকনো মৌসুমে এর কাজ শেষ হয়ে যাবে জানিয়ে বিমানবন্দরের পরিচালক মো. হাফিজ আহমদ বলেন, এটি সম্পন্ন হলে দর্শনার্থীদের দুর্ভোগ অনেকাংশেই কমে যাবে। পাশাপাশি বিমানবন্দরটিও আরও দর্শনীয় হয়ে উঠবে।

ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ থমকে যাওয়া প্রসঙ্গে মো. হাফিজ আহমদ বলেন, ২০২০ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া প্রকল্প এ বছরের জুনেই শেষ হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু নানা কারণে কাজ শেষ হয়নি। এখন নতুন করে আবার কাজ শুরু হবে। তিনি জানান, এ পর্যন্ত প্রকল্পের ২২ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।

গণশুনানিতে সৌদি আরবের যাত্রী হাবিবুর রহমান কাস্টমসে দীর্ঘসূত্রতার অভিযোগ করে বলেন, কাস্টমসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এর জবাবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেন, মূলত মধ্যপ্রাচ্যের রুট ধরেই দেশে বিমানপথে চোরাচালান হয়ে থাকে। এ কারণে এ রুটের যাত্রীদের ইমিগ্রেশনের সময় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। ফলে কখনও কখনও একটু বেশি সময় নিতে হয়।

দীর্ঘদিন ধরে ওমরাহ কাফেলা নিয়ে সৌদি আরবে যাতায়াত শাহ আলমের। তার অভিযোগ, অনেক সময় দেখা যায় বিমানে সিট খালি থাকে। কিন্তু বুকিং করতে গেলে টিকিট পাওয়া যায় না। তার এ অভিযোগের জবাবে বিমান সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, এমনটি খুব কমই ঘটে। ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের স্টেশন ম্যানেজার আবদুস সাত্তার এ অভিযোগের জবাবে বলেন, অনেকেই শেষ সময় টিকিট বাতিল করেন। তখন ওই সিটটি শূন্য থাকে। এর বাইরে সিট সাধারণত শূন্য থাকে না।

এছাড়া গণশুনানিতে অংশ নিয়ে যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামের যাত্রী শহীদ মিয়া, ম্যানচেস্টারের যাত্রী হারিস মিয়া ওসমানী আন্তজার্তিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপনায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তবে আলমগীর কবির নামের যুক্তরাজ্যের অপর এক যাত্রী বিমানবন্দরে ওয়াশরুমের অপ্রতুলতা নিয়ে নিজের অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।

৩ মাস আগের গণশুনানির অভিযোগের অগ্রগতি জানাতে গিয়ে মো. হাফিজ আহমদ বলেন, যুক্তরাজ্যে নির্ধারিত হারের অতিরিক্ত পণ্য নেয়ার ক্ষেত্রে আগে প্রতি কেজির ক্ষেত্রে যেখানে যাত্রীকে ৩০ ডলার করে দিতে হত, এখন সেক্ষেত্রে ১৫ ডলার দিতে হয়। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সেটি আরও কমিয়ে ১২ ডলার করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।  হাফিজ আহমদ জানান, ওসমানী বিমানবন্দরে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে অত্যাধুনিক ব্যবস্থা করা হয়েছে।

গণশুনানিকালে বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা এবং বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস বাংলা ও নভো এয়ারের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, সাঈদ চৌধুরী টিপু, দৈনিক সিলেটের ডাকের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক এম এ ওয়াহিদ, সিনিয়র সাংবাদিক আনাস হাবিব কলিন্স এবং দক্ষিণ সুরমা উপজেলা প্রেসক্লাব, সিলেট’র নির্বাহী সদস্য ও শুভ প্রতিদিনের স্টাফ রিপোর্টার এম আবু বক্কর তালুকদার প্রমুখ।

You might also like