১৩ কোটি টাকা আত্মসাতের দায়ে একজনের ১০ বছর কারাদণ্ড

সিলেট অফিস 
সত্যবাণী
সিলেট নগরির মেন্দিবাগ শাখার ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ১২ কোটি ৭১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় সাবেক এক ব্যাংক কর্মকর্তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও অপর জনের ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অপর ২ আসামীকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
১৭ এপ্রিল বুধবার দুপুরে সিলেট বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোঃ শাহাদৎ হোসেন প্রামানিক এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. আহম্মদ আলী।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হচ্ছেন- সিলেট নগরির দরগা মহল্লার পায়রা ৭৫ নং বাসার মৃত এএইচ মিছবাহ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর ছেলে নগরির মেন্দিবাগ শাখার ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিঃ’র সাবেক ম্যানেজার এ জেড নিয়াজ আহমেদ চৌধুরী (বর্তমানে চাকুরীচ্যুত) এবং নগরির ঝরনারপারের ৫৩নং বাসার মৃত মুফতি আব্দুল কাদেরের ছেলে মুফতী মো. আব্দুল খাবির। এরমধ্যে আসামী এজেড নিয়াজ আহমেদ চৌধুরী বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।
খালাসপ্রাপ্তরা হচ্ছেন, চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার রঘুনাথপুর গ্রামের মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ’র ছেলে সিলেট নগরির মেন্দিবাগ শাখার ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিঃ’র সাবেক সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার (বর্তমানে কুমিল্লা শাখা) এবং সিলেট নগরির শেখঘাট এলাকার শামস উদ্দিন আহমদের ছেলে নগরির মেন্দিবাগ শাখার ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিঃ’র সাবেক ক্যাশ অফিসার (বর্তমানে ময়মনসিংহ ভালুকা শাখা) মো. জাহেদ রুমী।
মামলার অভিযোগগঠন এর সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা যায়, উক্ত আসামীরা ২০০৯ সালের ১৫ মার্চ থেকে ২০১১ সালের ২১ ডিসেম্বর তারিখের মধ্যে সিলেট নগরির মেন্দিবাগ শাখার ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিঃ’’র নিজ নিজ পদে কর্মরত থেকে একে অপরের যোগসাজসে ভুয়া ‘এফডিআর’ দেখিয়ে প্রতারণামূলকভাবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ১২ কোটি ৭১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। এ ঘটনায় ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিঃ’র সিলেট মেন্দিবাগ শাখার এসিসট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং শাখা ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আব্দুল বাছিত বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় একজনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন ( নং-১৪ তাং-১৪-০৭-২০১৩)।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ১৪ ডিসেম্বর সিলেট জেলা কার্যালয়ের সমন্বিত দুর্নীতি দমন কমিশন বর্তমানে দুদক টাঙ্গাইল সজেকার উপ-পরিচালক রেভা হালদার ৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র নং-৪১৫) দাখিল করেন এবং ২০১৮ সালের ২৫ অক্টোবর আসামীদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন (অভিযোগগঠন) করে আদালতে এ মামলার বিচারকার্য শুরু হয়।
দীর্ঘ শুনানী ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বুধবার আদালত আসামী এজেড নিয়াজ আহমেদ চৌধুরীকে পেনাল কোড-এর ৪০৯ ধারায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, আত্মসাৎকৃত অর্থের সমপরিমান ১২ কোটি ৭১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৪৬৭ ধারায় ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করেন। অপর আসামী মুফতী মো. আব্দুল খাবিরকে পেনাল কোড-এর ৪০৯ ধারায় ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। অপর আসামী মুহাম্মদ  আকবর হোসেন এবং মো. জাহেদ রুমীকে অত্র মামলা হতে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়েছে।
মামলা পরিচালনা করেন দুদক পিপি অ্যাডভোকেট নাহিদা চৌধুরী এবং আসামীপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মিছবাহুর রহমান আলম।

You might also like