২১৫ রানে গুটিয়ে গেলো আফগানিস্তান
স্পোর্টস ডেস্ক
সত্যবাণী
বাংলাদেশঃ বাংলাদেশী বোলিং তোপে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ২১৫ রানে অলআউট হয়েছে সফরকারী আফগানিস্তান। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৭ রান করেন নজিবুল্লাহ জাদরান।চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্বান্ত নেয় আফগানিস্তান। বল হাতে নিয়ে ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন বাঁ-হাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। নিজের দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে আফগান ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজকে শিকার করেন সদ্য শেষ বিপিএলের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী ফিজ। মিড উইকেটে বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবালকে ক্যাচ দেন ৭ রান করা গুরবাজ।
ষষ্ঠ ওভারে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দিতে পারতেন আরেক পেসার তাসকিন আহমেদ। কিন্তু ডিপ স্কয়ার লেগে আফগানদের আরেক ওপেনার ইব্রাহিম জাদরানের ক্যাচ ফেলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। জীবন পেয়ে তাসকিনের করা চতুর্থ ওভারে পরপর দুই বলে একটি করে চার-ছক্কা মারেন জাদরান। তবে ১৪তম ওভারে শরিফুল ইসলামের বলে স্লিপে থাকা ইয়াসির আলিকে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন ২৩ বলে ১৯ রান করা ইব্রাহিম। দ্বিতীয় উইকেটে রহমত শাহর সাথে ৬৫ বলে ৪৫ রানের জুটি গড়েন ইব্রাহিম।উইকেটে সেট হয়ে আফগানিস্তানের সচল রেখেছিলেন রহমত ও অধিনায়ক হাসমতুল্লাহ শাহিদি। তবে দলীয় ১০২ রানের মধ্যে এই দুই সেট ব্যাটারকে ফেরান তাসকিন ও মাহমুদুল্লাহ। নিজের ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে রহমতকে ৩৪ রানে থামান তাসকিন। আউট হওয়ার আগে ৬৯ বল খেলে ৩টি চার মারেন রহমত।আর ২৮তম ওভারে প্রথমবারের মত বল করতে এসেই সাফল্যের দেখা পান মাহমুদুল্লাহ।ঐ ওভারের শেষ বলটি কাট করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে আউট হওয়া শাহিদি করেন ২৮ রান।
২৮ ওভার শেষে আফগানিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ১০২। রান রেট ছিলো- ৩ দশমিক ৬৪। এমন অবস্থায় রানের গতি বাড়াতে বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তুলেন নাজিবুল্লাহ জাদরান ও মোহাম্মদ নবি।জাদরান-নবির জুটি ভাঙ্গতে ঘুড়িয়ে ফিরিয়ে বোলিংয়ে পরিবর্তন করেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম। কিন্তু নাজিবুল্লাহ-নবির দৃঢ়তায় ৩৭তম ওভারে আফগানিস্তান রান দেড়শ স্পর্শ করে। তবে ৩৯তম ওভারে আক্রমনে এসে দলকে দারুন এক ব্রেক-থ্রূ এনে দেন তাসকিন। কভার দিয়ে খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ২৪ বলে ২ বাউন্ডারিতে ২০ রান করা নবি। নবি-জাদরান পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৬৩ বলে ৬৩ রানের সংগ্রহ পায় সফরকারীরা।৪৩তম ওভারে নাজিবুল্লাহ তার হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৩তম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পেতে ৭০ বল খেলেছেন জাদরান।
বল হাতে বাংলাদেশের চার বোলার উইকেট পেলেও এ পর্যন্ত উইকেট শুন্য ছিলেন দলের সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ও মেহেদি হাসান মিরাজ। অবশেষে ৪৫তম ওভারে জোড়া উইকেট তুলে নেন সাকিব। ঐ ওভারের তৃতীয় বলে গুলবাদিন নাইবকে ১৭ রানে ও শেষ বলে রশিদ খানকে শুন্য রানে ফিরিয়ে দেন তিনি। নিজের নবম ওভারে এসে প্রথম উইকেট শিকারের আনন্দে মাতেন সাকিব। এতে ৪৫ ওভার শেষে ৭ উইকেটে ১৯৪ রানে পরিণত হয় আফগানরা। শেষদিকে উইকেটে সেট ব্যাটার জাদরানসহ আফগানদের টেল-এন্ডারদের ছেঁটে ঠেলেন মুস্তাফিজ ও শরিফুল। ফলে ৪৯ দশমিক ১ ওভারে ২১৫ রানে অলআউট হয় আফগানিস্তান। আফগানদের পক্ষে সর্বোচ্চ রান করা জাদরানকে ৬৭ রানে থামান শরিফুল। ৮৪ বল খেলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন জাদরান।আর মুজিব উর রহমানকে শুন্য ও ইয়ামিন আহমদজাইকে ৫ রানে আউট করেন মুস্তাফিজ। বাংলাদেশের পক্ষে মুস্তাফিজ ৩৫ রানে ৩টি উইকেট নেন। এছাড়া তাসকিন-সাকিব-শরিফুল ২টি করে উইকেট নেন। ১ ওভার বল করে ১ উইকেট নিয়েছেন মাহমুদুল্লাহ। বাংলাদেশের পক্ষে এ ম্যাচে ১৩৭তম ওয়ানডে ক্রিকেটার অভিষেক হয়েছে মিডল-অর্ডার ব্যাটার ইয়াসির আলির।