২৪৪ যাত্রী নিয়ে উদ্বোধনী যাত্রাঃ সপ্তাহে প্রতি সোমবার নিয়মিত চলবে সিলেট-জেদ্দা বিমানের সরাসরি ফ্লাইট চালু
চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী
সিলেট থেকেঃ সিলেট-জেদ্দা রুটে সরাসরি ফ্লাইট চালু করলো বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। সোমবার সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে জাতীয় পতাকাবাহী বিমানের একটি ফ্লাইট (বিজি-২৩৫) ২৪৪ জন যাত্রী নিয়ে জেদ্দার উদ্দেশ্যে উড়াল দেয়। আবহাওয়াজনিত কারণে উদ্বোধনী দিনে বিমানটি ছাড়তে ৪২ মিনিট বিলম্ব হয়।সিলেট এমএজি ওসমানী বিমানবন্দরের পরিচালক হাফিজ আহমদ জানান, সোমবার সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে জেদ্দা অভিমুখী বিমানের ফ্লাইটটি সিলেট থেকে ছেড়ে যায়। রাত ১০টার পর বিমানটি জেদ্দায় অবতরণ করার কথা। এ ফ্লাইট চালুর ফলে যাত্রীরা কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবেন।পর্যটকদের জন্যও এটি বড় সুখবর। ওসমানী বিমানবন্দরের সুযোগ-সুবিধা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামীতে অনেক আন্তর্জাতিক ফ্লাইট এ বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে যাবে।
বিমানের জেলা ব্যবস্থাপক মনসুর আহমদ জানান, উদ্বোধনী দিনে আবহাওয়াজনিত কারণে বিমানটি ছাড়তে ৪২ মিনিট বিলম্ব হয়। এখন থেকে সপ্তাহে প্রতি সোমবার সিলেট থেকে জেদ্দার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট ছেড়ে যাবে বলে জানান তিনি।বিমানবন্দরের সহকারী ব্যবস্থাপক নজরুল ইসলাম জানান, সিলেট এমএজি ওসমানী বিমানবন্দর থেকে জেদ্দায় এবারই প্রথমবারের মতো বিমানের সরাসরি শিডিউল ফ্লাইট চালু হলো। এরআগে সিলেট থেকে জেদ্দায় সরাসরি ফ্লাইট গেলেও সেগুলো ছিল হজ্ব ফ্লাইট (অকেশনাল)। এখন থেকে শিডিউল ফ্লাইটে হজ্ব ও ওমরা যাত্রীদের পাশাপাশি সাধারণ যাত্রীরাও সৌদি আরবে যেতে পারবেন বলে জানান তিনি।এদিকে, এ উপলক্ষে সোমবার সন্ধ্যায় সিলেট এমএজি ওসমানী বিমানবন্দরের ইন্টারন্যাশনাল লাউঞ্জে এক সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিমানের জেলা ব্যবস্থাপক মনসুর আহমদ ভূইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিমানবন্দরের পরিচালক হাফিজ আহমদ। অন্যদের মধ্যে বিমানের স্টেশন ম্যানেজার আব্দুস সাত্তার, এসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)-এর সিলেট অঞ্চলের সভাপতি মো: জিয়াউর রহমান খান রেজওয়ান বক্তব্য রাখেন।বক্তারা সিলেট-জেদ্দা সরাসরি ফ্লাইট চালুর উদ্যোগকে স্বাগত জানান। সভায় আটাব নেতারা সিলেট-মদিনা রুটেও বিমানের সরাসরি ফ্লাইট চালুর দাবি তুলেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালে সিলেট এমএজি ওসমানী বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এ ঘোষণার পর এখান থেকে কয়েকটি সরাসরি ফ্লাইটও অপারেট হয়। এরই মধ্যে ওসমানী বিমানবন্দরে রিফুয়েলিং স্টেশন নির্মিত হয়েছে। রিফুয়েলিং স্টেশন নির্মিত হওয়ার পর এখান থেকে সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের চলাচল শুরুর উদ্যোগ নেয়া হয়। ২০২০ সালের অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২ হাজার ১১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী বিমাবন্দরের নতুন টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের ভিত্তিফলক উন্মোচন করেন।বিমান সূত্র জানায়, কুয়াশার অজুহাতে ২০১১ সালের ১৫ ডিসেম্বর থেকে সিলেট-লন্ডন সরাসরি ফ্লাইট বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ বিমান। ফ্লাইটটি তখন দুবাইয়ে ট্রানজিট দিয়ে লন্ডনে যেত। এ নিয়ে লন্ডন এবং সিলেটে আন্দোলন গড়ে উঠে। প্রায় ৯ বছর পর ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে সিলেট-লন্ডন সরাসরি ফ্লাইট ফের চালু হয়। বর্তমানে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সপ্তাহে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে ৫টি ও ম্যানচেষ্টারের উদ্দেশ্যে দু’টি মিলিয়ে মোট ৭টি ফ্লাইট ছেড়ে যায়। এছাড়া, এখান থেকে সপ্তাহে ১টি ফ্লাইট দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। সোমবার থেকে নতুন করে যোগ হলো জেদ্দা ফ্লাইট।