২৯ নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত হলে এলাকার পানি নিষ্কাশনের গুরুত্ব দেবেন রেডিও মার্কার প্রার্থী রাজীব আহসান

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ ‘আগামী ২১ জুন অনুষ্ঠিতব্য পঞ্চম সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ২৯নং ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হলে আমি নবগঠিত ওয়ার্ডের প্রধান সমস্যা পানি নিস্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নে জরুরী ভিত্তিতে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। ওয়ার্ডের জবরদখলকৃত প্রতিটি খাল-নালা ও গোপাট পুনঃউদ্ধার করে পানি চলাচলের সু-ব্যবস্থা করতে সচেষ্ট হবো —ইনশাল্লাহ।প্রতিশ্রুতি রক্ষার্থে ওয়ার্ডবাসীর প্রতি আমার বিন¤্র আহবান,আসন্ন নির্বাচনে আমাকে রেডিও মার্কায় ভোট দিয়ে নির্বাচিত করুন।’ এমন প্রতিশ্রুতি ও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন ২৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মোঃ রাজীব আহসান। যিনি এলাকায় রিমন নামে পরিচিত।

অত্যন্ত সজ্জন, ভদ্র ও মার্জিত চরিত্রের অধিকারী রেডিও মার্কার প্রার্থী রাজীব আহসান একজন উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিত্ব। লেখাপড়া শেষে পারিবারিক ব্যবসায় হাল ধরেছেন। রাজীবের পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোঃ সাইফুল আলম। তিনি সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য এবং দক্ষিণ সুরমা উপজেলা শাখার সভাপতিও। স্বনামধন্য ব্যবসায়ী হিসেবে স্বাধীনতা উত্তর সময়ে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা সিলেটে প্রথম আয়কর দিয়ে সরকারি কোষাগার সমৃদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। পরবর্তীতে তাঁকে অনুসরণ করে অনেকই আয়কর দিতে এগিয়ে আসেন। যে কারণে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোঃ সাইফুল আলম জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারের সময়ে পুরস্কার পেয়েছিলেন। রাজীব আহসানের মা মোছাঃ শাহারা আলম একজন সু-গৃহিনী। ১ ভাই ও ৩ বোনের সংসারে রাজীব জ্যেষ্ঠ। রাজীবের জন্ম ১৯৭৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর। শিক্ষাজীবনে অর্জন করেছেন এম কম ও এমবিএ ডিগ্রি। সুযোগ্য পিতা-মাতার সন্তান রাজীব উচ্চশিক্ষা অর্জন করে কোন সরকারি চাকুরীতে যোগ দেননি। যদিও একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে তার নানা সুযোগ ছিল। কিন্তু চাকুরির চেয়ে পারিবারিক ব্যবসায় জড়িত হতে তিনি স্বাচ্ছন্দ বোধ করেছেন। এরপর থেকেই ব্যবসায় মনোযোগী হন।

পারিবারিক ব্যবস্থাপনায় রাজীব বিয়ে করেছেন রুমানা বেগমকে। রাজীব-রুমানা দম্পতির ২ সন্তান। ছেলে মোঃ সাকিব আহসান আরিব এবং মেয়ে মোছাঃ সামিয়া আহসান আমিরা। দু’জনেই শিক্ষার্থী। এখনও লেখাপড়া করছে। ছেলেমেয়েদের উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে পিতা-মাতার আপ্রাণ প্রচেষ্টা বিদ্যমান।সমাজকর্মী বাবা এবং সু-গৃহিনী মায়ের সন্তান হিসেবে রাজীব শুধু ব্যবসায় নয়, এর পাশাপাশি এলাকার নানা সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সাথেও নিজেকে সম্পৃক্ত রাখেন। তিনি সদ্যবিলুপ্ত বরইকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির দফতর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। বর্তমানে বরইকান্দি ইউনিয়ন ২৮, ২৯ ও ৩০ নং ওয়ার্ডে বিভক্ত হয়ে যাওয়ার দলীয় কমিটি আর পুনর্গঠিত হয়নি। অবশ্য আওয়ামী লীগের ২৯নং ওয়ার্ড কমিটি পুনঃগঠিত হলে তিনি একটি সম্মানজনক পদ পাবেন বলে আশাবাদী। রাজনীতির পাশাপাশি খেলাধুলার সাথেও জড়িত আছেন তিনি। ঐতিহ্যবাহী লাউয়াই স্পোর্টিং ক্লাবের সিনিয়র সহ-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন গত সাড়ে ৩ বছর থেকে।

মহল্লার মধ্যে গড়ে তুলেছেন লাউয়াই ইয়াং ফেডারেশন ক্লাব। এর সভাপতির দায়িত্বে আছেন তিনি। এ ক্লাবের মাধ্যমে বিগত বিভিন্ন সময়ে তিনি সামাজিক কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছেন। ২০২০ সাল থেকে অতিমারী কোভিড-১৯ এর সময় লকডাউনে আটকেপড়া এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ক্রমাগত খাদ্য বিতরণ ও বিভিন্ন পণ্য প্রদান বা অক্সিজেন সরবরাহের ক্ষেত্রেও ভূমিকা রেখে এলাকায় প্রশংসনীয় হন। ২০২২ সালের মে-জুনে ক্রমাগত করালগ্রাসী বন্যায় দুর্যোগকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে তিনি ভুলেননি। ফেডারেশন ক্লাবের সহযোগীদের নিয়ে বানভাসি মানুষের দরোজায় দরোজায় শুকনো ও রান্না করা খাবার নিয়ে গেছেন। নিজে কোমর পানিতে থেকে বাসা-বাড়ির ভেতরে থাকা আধো ভেজা-আধো শুকনো মানুষদের হাতে তুলে দিয়েছেন বেঁচে থাকার সম্বল শুকনো ও রান্না করা খাবার। সাথে ছিল জীবনদায়ী বিশুদ্ধ পানি। আরো ছিল মোমবাতি-ম্যাচ, লবন, চাল, ডাল, মশার কয়েল ইত্যাদি নানা জরুরী পণ্য।
এখানেই শেষ নয়। রাজীব ছিলেন আন্তর্জাতিক সেবামুলক সংগঠন ‘রোটারি ক্লাব অব সিলেট সাউথ’র সাবেক সহ-সভাপতি। র্দীর্ঘ ৭ বছর তিনি এই ক্লাবের সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন।

আলাপ প্রসঙ্গে রাজীব আহসান রিমন বলেন, আমার ওয়ার্ডের মধ্যে কিছু এলাকা আছে, যেখানে উন্নয়নের ছোঁয়া অনেকটা কম লেগেছে। ফলে এসব এলাকার রাস্তাÑঘাট তথা যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন উন্নত নয়। বিগত দেড় বছরের বেশী সময় থেকে আমরা ছিলাম অনেকটা ছিটমহলবাসীর মতো। না ইউনিয়নের না সিটি কর্পোরেশনের বাসিন্দা। যে কারণে জনগণকে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। দেড়টি বছর এই ওয়ার্ডের রাস্তা-ঘাট বা উন্নয়ন বলতে যা বুঝায়, তা দেখ-ভাল করার মতো কেউ ছিল না। ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে কোন কর্মসূচি গৃহিত বা বাস্তবায়িত হয়নি। অনেকটা পিছিয়ে গেছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। আমার দ্বিতীয় কাজ হবে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ। শুধু তাই নয়, ওয়ার্ডটিকে একটি নান্দনিক ওয়ার্ডে রূপান্তরে সিটি কাউন্সিলর হিসেবে আমার যা করণীয়, তা করতে আমি সচেষ্ট থাকবো। ওয়ার্ডের প্রতিটি সড়কে রাতের বেলা নাগরিকদের যাতায়াত সুবিধার লক্ষ্যে সড়কবাতি সংযোজন করবো।
তিনি বলেন, দেশ ও জাতি গড়ার মুল মেরুদন্ড শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন। আমি শিক্ষার উন্নয়নে যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাবো। বিদ্যমান প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে যা যা করা দরকার, তা করতে অবস্থান থেকে যথাসাধ্য চেষ্টা অব্যাহত রাখবো। প্রয়োজনে নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে উদ্যোগ নেবো।

কাউন্সিলর প্রার্থী বলেন, নান্দনিক ওয়ার্ড গড়তে নাগরিকদের বিকেলে বিনোদনের জন্য সম্ভব হলে নতুন একটি পার্ক গড়ে তুলবো এবং বয়স্ক এলাকাবাসীর বিকেলের অবসর কাঠানোর জন্য প্রতিটি মহল্লায় একটি মিনি পাঠাগার গড়ে তোলার চেষ্টা করবো।
মাদকের করালগ্রাস থেকে ওয়ার্ডের যুব ও তরুণ সমাজকে রক্ষার লক্ষ্যে সাধ্যানুযায়ী খেলাধুলার মাঠ বা ক্লাব গড়ে তুলবো। কারণ সমাজবিজ্ঞানীদের গবেষণায় বলা হয়েছে, খেলাধুলা থেকে দূরে থাকলে যুব ও তরুণ সমাজ অপরাধের দিকে ঝুঁকে পড়তে পারে। তাই মেধা ও মননের বিকাশে সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাবো। ভূমির ব্যবস্থা করতে পারলে মিনি সাইজের একটি খেলার মাঠ গড়ে তুলতে পিছপা হবো না।মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, মন্দির, আশ্রম ইত্যাদি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের কল্যাণ ও উন্নয়নে আন্তরিকতার সাথে কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, নির্বাচিত হলে আমি এসব প্রতিষ্ঠানকে অনুকরণীয় রূপে রূপান্তরের চেষ্টা করবো।রাজীব আহসান বলেন, সামাজিক কল্যাণমূলক কর্মকান্ডের মধ্যে ওয়ার্ডের গরীব, দুঃস্থ, অসহায় তথা সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শ্রেণীর নাগরিকদের কল্যাণে সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছি। কারণ, আমি বিশ্বাস করি কোন এলাকার একটি শ্রেণী পিছিয়ে থাকলে গোটা ওয়ার্ড উন্নয়নের দাবী করতে পারে না। তাই আমি নির্বাচিত হলে দারিদ্র বিমোচনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবো। এটা শুধু নীতি-নৈতিকতার বিষয় নয়, ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয়ভাবেও প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। এ কারণে আমার সর্বোচ্চ মেধা ও শ্রম দিয়ে গণমানুষের কল্যাণে ভূমিকা রাখতে কোনভাবেই কার্পণ্য করবো না। বিশেষ করে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, শিক্ষা উপ-বৃত্তি, স্বল্পমূল্যে খাদ্যদ্রব্য কেনার জন্য ন্যায্যমূল্যের বা রেশনকার্ড প্রদান ইত্যাদিসহ সিটি কর্পোরেশন থেকে প্রদেয় সকল নাগরিক সুবিধা জনগণের দোরগোঁড়ায় পৌঁছে দিতে কারো মূখোপেক্ষী হবো না। প্রকৃত ভাতা ভোগীরা যাতে সরকারি সুযোগ-সুবিধা পায়, সে লক্ষ্যে সচেষ্ট হবো।

বিগত দুর্যোগকালীন সময়ের কথা উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, অভিজ্ঞতার আলোকে আমি জানি প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা নানা দৈব-দূর্বিপাকের সময় মানুষ, বিশেষ করে গরীব সাধারণ মানুষ খুবই দুর্ভোগকবলিত হয়। বিগত সময়ে অর্থাৎ করোনাকালে ও ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যাকালে দুর্ভোগকবলিত মানুষের দরোজায় দরোজায় সহকর্মীদের নিয়ে আমি কিছু খাদ্যসামগ্রি পৌঁছে দিয়েছি। প্রত্যয়ের সাথে তিনি বলেন, নির্বাচিত হলে সরকারি সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্ত হয়ে আরো বেশী করে জনসেবায় ব্রতী হতে পারবো।
রেডিও মার্কার কাউন্সিলর প্রার্থী বলেন মহিলা ও শিশুদের চিকিৎসা সেবা সহজলভ্য করতে যথাযথ উদ্যোগ নেবো। ওয়ার্ডের অভ্যন্তরে থাকা কমিউনিটি ক্লিনিককে আরো উন্নত ও সেবামনস্ক করে তুলতে এলাকাবাসী ও সিটি কর্তৃপক্ষের পরামর্শে পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। আমি মনে করি এই কমিউনিটি ক্লিনিককে একটি পুর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে রূপান্তর করতে পারলে ওয়ার্ডবাসীর জরুরী ও তাৎক্ষণিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। আর সুপরিকল্পিতভাবে এই প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারলে আক্ষরিক অর্থে এটি একটি পুর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে রূপান্তরিত হতে পারবে।রাজীব আহসান রিমন সর্বশেষ বলেন, জনকল্যাণে নিজেকে নিবেদিত করার লক্ষ্যে আমাকে রেডিও মার্কায় ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে আমার পক্ষে পরিকল্পিত ও নান্দনিক ২৯নং ওয়ার্ড গঠন সম্ভব হবে।

You might also like