৭ নম্বর বিপদ সংকেত জারীঃ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে হামুন
নিউজ ডেক্স
সত্যবাণীঃ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ‘হামুন’ আরও শক্তি সঞ্চয় করে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। ঝড়ের কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ উঠছে ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত। ঘূর্ণিঝড়টি ধীরে ধীরে বাংলাদেশ উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। চট্টগ্রাম ও পায়রা বন্দরে ৭ নম্বর, কক্সবাজার ৬ ও মোংলা বন্দরে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ২৪ অক্টোবর মঙ্গলবার এই পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়াবিদ খোন্দকার হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে এবং বর্তমানে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
এটি মঙ্গলবার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৫৫ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪-৮৮ মি.মি.) থেকে অতিভারী (২৮৯ মি.মি.) বর্ষণ অব্যাহত থাকতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোতে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’র প্রভাবে ঢাকাসহ দেশের ১৩টি অঞ্চলের ওপর দিয়ে ঝড়-বৃষ্টি বয়ে যেতে পারে।
আবহাওয়াবিদ খোন্দকার হাফিজুর রহমান আরও জানান, ঢাকা, ফরিদপুর, যশোর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ময়মনসিংহ এবং সিলেট অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে পূর্ব-উত্তরপূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নৌ-বন্দরে এক নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ ড. আবুল কালাম মল্লিক জানিয়েছেন, ২৫ অক্টোবর বুধবার সন্ধ্যায় এটি বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এটি পটুয়াখালীর খেপুপাড়া এবং চট্টগ্রামের মাঝ দিয়ে স্থলভাগে ওঠে আসবে। এ সময় এক থেকে দেড় মিটার উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।