সিলেটে বিএনপি’র গণসমাবেশ জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন সিলেট থেকেই শুরু হলো:মির্জা ফখরুল

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণ আন্দোলনের মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে দেশে অবিলম্বে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এই সরকারকে আর রাতের আঁধারে ভোটের বাক্স ভরার সুযোগ দেয়া হবেনা। এবার ওদেরকে শক্তভাবে প্রতিরোধ করা হবে। একটা তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারকে বাধ্য করা হবে।দলীয় চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, তত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা, সংসদকে বিলুপ্ত করে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করাসহ বিভিন্ন দাবিতে সারাদেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে সমাবেশের অংশ হিসেবে গতকাল (১৯ নভেম্বর ) শনিবার বিকেলে সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে বিএনপি সিলেট জেলা শাখা আয়োজিত বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন। জেলা বিএনপি সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী সভাপতিত্বে এবং জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী ও মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকীর যৌথ সঞ্চালনায় গণসমাবেশে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন অনিবার্য। এই সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনেই আমরা নেই। অবশ্যই তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে।

তিনি বলেন, গণতন্ত্র পুণরুদ্ধারে সিলেট থেকে আজ যুদ্ধ শুরু হলো। আ’লীগ সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। এই সিলেট থেকেই মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। ওই যুদ্ধ থেকেই স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে। আজকে এই স্বৈরাচারী আ’লীগ সরকারের বিরুদ্ধে এবং গণতন্ত্র ফেরাতে এই সিলেট থেকেই আবার যুদ্ধ শুরু হলো।গণসমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য গায়েশ্বর চন্দ্র রায়। বিশেষ অতিথি’র বক্তব্য রাখেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, যুগ্ন-মহাসচিব এ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, ফজলুর রহমান, তাহসিনা রুশদীর লুনা ও ড. এনামুল হক চৌধুরী, সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
গণসমাবেশের প্রধান বক্তা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আ’লীগ শুধু খেলার ডাক দেয়। তবে তারা তো দরজা বন্ধ করে খেলায় পারদর্শী। যে কারণে পাপিয়ারা ধরা পড়লে ওবায়দুল কাদের আর তার দলের নেতাদের বুক ধড়ফড় করে। সরকার পুলিশ ও পেটোয়া বাহিনী দিয়ে হামলা করে, বাস ট্রাক বন্ধ করে সমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু জনগণকে আটকে রাখা যায়নি। তারা ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছে। জনগণ সমাবেশ করেছে। বাস ট্রাক বন্ধ করে প্রতিদিন দেশের কত কোটি টাকার ক্ষতি করা হল তার জবাব সরকারকে দিতে হবে।বিশেষ অতিথি’র বক্তব্যে ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, সিলেটবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই এ কারণে যে, আজকের গণসমাবেশে সিলেটের আলিয়া মাদরাসার মাঠ কানায়-কানায় ভর্তি।

ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, আমাদের দলের নেতা কামালকে খুন করা হয়েছে। আসামীরা এখনো অধরা। আমি তাকে স্মরণ করছি। আমরা তার হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসবো।খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেন, মানুষের বয়স বাড়লে মিথ্যা কথা কম বলে, গোনাহ কম করে, কিন্তু আমাদের দেশের সরকার মিথ্যা কথা বলতে চোখ কাঁপে না। এরা দাবি করে ২০১৮ সালে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসেছে। এরা নিজেদের ছাড়া অন্য কারো প্রতি তাদের কোনো মুল্যবোধ নাই।বিএনপি’র নিখোঁজ সাংগঠনিক সম্পাদক এম. ইলিয়াস আলীর পতœী তাহসিনা রুশদীর লুনা বলেন, বর্তমান আ’লীগ সরকার বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের প্রায় ১ হাজার নেতা-কর্মীকে গুম করেছে। অজস্র নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। বিচারবর্হিভূত হত্যাকা- করে এ সরকার মানবতাবিরোধী অপরাধ করছে। তাদের বিচার এ দেশের মানুষ করবে।সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, সিলেটের জনগণ সরকারকে দেখিয়ে দিয়েছে, সিলেটে মাঠি বিএনপির ঘাঁটি। সিলেটবাসী বিএনপি ও বিএনপি’র চলমান আন্দোলনের সবগুলো দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। সিলেটবাসীসহ দেশের সব মানুষ নির্দলীয় তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়। আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে জেল থেকে মুক্ত করবো। তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনবো।সভাপতির বক্তব্যে জেলা বিএনপি সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী সমাবেশে উপস্থিত সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, সকল বাঁধা-বিপত্তি পেরিয়ে লাখ লাখ মানুষের সমাগম প্রমাণ করে দেশের মানুষ আর এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে চায় না।

You might also like