বর্ণবাদী আক্রমন না অন্য কিছু ? লন্ডনে শেতাঙ্গ প্রতিবেশীর ছুরিকাঘাতে ব্রিটিশ বাংলাদেশী রইস উদ্দিন নিহত
মতিয়ার চৌধুরী
সত্যবাণী
লন্ডন: ইংল্যান্ডের রাজধানী পুর্বলন্ডনের নিউহ্যাম এলাকায় শেতাঙ্গ প্রতিবেশীর ছুরিকাঘাতে রইস উদ্দিন (৪৮) নামের এক ব্রিটিশ বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেন্ট্রেল লন্ডনের সেন্ট বাথ হাসপাতালে গেল সোমবার লন্ডন সময় সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যু হয় বলে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়।নিহত রইস উদ্দিন পরিবার নিয়ে পূর্ব লন্ডনের নিউহাম কাউন্সিলের কাস্টমস হাউস এলাকায় বসবাস করতেন । ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একজন সংবাদ মাধ্যমকে জানান গেল শনিবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় ভবনের দরজা খোলা রাখা নিয়ে রইস উদ্দিনের সঙ্গে তর্কে জড়ান শেতাঙ্গ ওই প্রতিবেশী। একপর্যায়ে তিনি রইস উদ্দিনকে ছুরি দিয়ে আঘাত করেন। তাৎক্ষনিক পুলিশে কল করলে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয় এবং জরুরী এম্বেলেনেস আহত রইস উদ্দিনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, পুলিশ হামলাকারীকে আটক করে।রইস উদ্দিনের ঘনিষ্ট বন্ধু রাজ হাসান বলেন, ‘রইস উদ্দিন আমাকে ফোন করে ঘটনা জানিয়ে বিল্ডিংয়ের নিচে আসতে বলেন। আমি ও রইস উদ্দিনের ছেলে বিল্ডিংয়ের নিচে আসলে হামলাকারী শেতাঙ্গ আমাদের প্রতি বর্ণবাদী ভাষায় গালিগালাজ করে এবং হাতে থাকা ছুরি নিয়ে রইস উদ্দিনের ওপর চড়াও হয় । হামলাকারী প্রথমে রইস উদ্দিনের মুখের ওপর ছুরিকাঘাত করে। রইস উদ্দিন মাটিতে পড়ে গেলে তার বুকসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কুপিয়ে গুরুতর আহত করে । বাবাকে বাঁচাতে ১৬ বছর বয়সী ছেলে এগিয়ে এলে তাঁকেও ছুরিকাঘাত করে ওই শেতাঙ্গ। আমাকেও আঘাত করার চেষ্টা করে, তবে সফল হয়নি। পরে অন্য প্রতিবেশীরা পুলিশে কল করলে পুলিশ এসে হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।’
নিউহাম কাউন্সিলের বাঙ্গালী সিভিক মেয়র রহিমা রহমান বলেন, তারা এ হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে জেনেছে তিনি তার টিমসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন। পরিদর্শন শেষে বিস্তারিত বলতে বলা যাবে। এ ঘটনায় বাংলাদেশি কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কাষ্টমসহাউস এলাকার বাসিন্দারা আতংকিত হয়ে পড়েছেন এবং দোষীব্যক্তির বিচার দাবি করেছেন। পুলিশকে সঠিক তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে প্রতিবেশীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ অবশ্য সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তদন্ত করছে। কোন কোন মহল এই ঘটনাকে বর্ণবাদী আক্রমন হিসেবে চিহ্নিত করতে চাইছেন। অন্যন্য প্রতিবেশীরা জানান ফ্লাটের মেইন দরজা খোলা রাখা নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথাকাটা কাটি থেকে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। তবে ওই এলাকায় বসবাসকারী পাকিস্তানী নাগরিক মাহমুদ খান ও আফ্রিকান নাগরিক আলবার্ট বলেন এই আক্রমনকে এই মূহুর্থে বর্ণবাদী বলা কঠিন। তদন্ত নাহওয়া পযর্ন্ত কোন মন্তব্য করা ঠিক নয়। পুলিশী তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। রইস উদ্দিনের দেশের বাড়ি বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলায়। তিনি ২০০৯ সালে পর্তুগাল থেকে অভিবাসী হয়ে লন্ডনে আসেন। দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে ১৫ বছর ধরে লন্ডনে বসবাস করছেন।