বাংলাদেশ সেন্টারের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
লন্ডন: পূর্ব লন্ডনের লন্ডন এন্টারপ্রাইস একাডেমীতে বাংলাদেশ সেন্টার এর বার্ষিক সাধারণ সভা (AGM) অনুষ্ঠিত হয় রবিবার (২০শে অক্টোবর ২০২৪) বাংলাদেশ সেন্টারের সিনিয়র সহ সভাপতি জনাব মোহাম্মদ মুহিবুর রহমান মুহিবের সভাপতিত্বে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। বিপুল সংখ্যক মেম্বার, সাংবাদিক ও কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে সভায় ম্যানেজম্যেন্ট কমিটির ২০২৩ -২০২৪ বার্ষিক রিপোর্ট পেশ করেন বাংলাদেশ সেন্টার এর সেক্রেটারি অধ্যাপক শহীদুর রহমান। রিপোর্টের উপর সদস্যদের আনীত বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন অধ্যাপক শহীদুর রহমান। একাউন্টস এন্ড অডিটস রিপোর্ট এর উপর আলোচনা করেন চীফ ট্রেজারার ফাইজুল হক। বিষয় ভিত্তিক আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন জনাব সিরাজুল ইসলাম (সাবেক ট্রেজারার), জনাব অলি খান (MBE, চেয়ারপারসন বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশন), জনাব মিঠু চৌধুরী (সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশন), জনাব এম. এ. মুনিম (OBE, সাবেক সভাপতি বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশন)। আরো বক্তব্য রাখেন সর্ব জনাব আবুল কালাম আজাদ ছোটন, হাবিবুর রাহমান ময়না, মিসেস ফেরদৌস রহমান, নাসির আলী শাহ, মোহাম্মদ শামীম আহমেদ, ইসবা উদ্দিন আহমদ, হেলাল খান, কবির উদ্দিন, মোস্তফা মিয়া, মুজাহিদুল ইসলাম, মিসবা রহমান, বাংলাদেশ সেন্টারের চীফ এক্সিকিউটিভ সৈয়দ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান। আরো বক্তব্য রাখেন জনাব আব্দুল ওয়াদুদ, ইফতিখার আহমেদ, ওহিদ উদ্দিন, শামসুল আলম লিটন, সাঈদ চৌধুরী, নাসির উদ্দিন, আশিকুর রহমান, শওকত মাহমুদ টিপু, আব্দুল করিম, আবু জাফর মোহাম্মেদ আব্দুর রহমান, দুলাল উদ্দিন রায়হান, এ.কে. আব্দুল্লাহ, জবরুল ইসলাম, ডাক্তার মাসুক আহমদ, আখতার হোসেন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
দোয়া পরিচালনা করেন মৌলানা জেহাদী।
অনুষ্ঠানে বিষয় ভিত্তিক আলোচনা সাপেক্ষে সাবেক সেক্রেটারি জনাব দেলোয়ার হোসেন কর্তৃক সেন্টার এর তালা পরিবর্তন করা, এবং চীফ এক্সিকিউটিভের অফিসে তালা ঝুলিয়ে তাঁকে অফিসে আসা থেকে বিরত রাখার তীব্র নিন্দা জানানো হয়। সেন্টারের তালা পরিবর্তন করে সেন্টারকে একটি প্রবেশ নিষেধ (no-go) সেন্টারে পরিণত করার জন্যে দেলোয়ার হোসেন ও তাঁর সমর্থকদের কঠোর সমালোচনা করা হয়। এই তালাবদ্ধতার কারণে যেমন সেন্টার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের বাস্তবায়ন বা সেবা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছেনা, চীফ এক্সিকিউটিভ তাঁর দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না, তেমনি নির্বাচিত প্রতিনিধিরা বা ট্রাস্ট্রিরা তাঁদের সংবিধিবদ্ধ কর্তব্য পালনেও ব্যর্থ হচ্ছেন। সেই কারণেই বার্ষিক সাধারণ সভায় উপস্থাপনের জন্য জরুরী ডকুমেন্টস সমুহ যেমন বিগত ২৬শে নভেম্বর ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত দ্বিবার্ষিক সভার মিনিটস, ২০২৩-২৪ সালের আয় ব্যয়ের হিসাব, একাউন্টস, ব্যালান্স শীট সহ সকল অত্যাবশ্যকীয় কাগজ পত্র সংগ্রহ করা যায়নি।
এই অচলাবস্থা এবং নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টির সকল দায়ভার দেলোয়ার হোসেনকেই নিতে হবে। এবং অবিলম্বে জনাব মোস্তাফিজুর রহমানের অফিসের তালা সহ সকল দরজার চাবি ম্যানেজমেন্ট কমিটির কাছে অবিলম্বে হস্তান্তরের জন্য সাধারন সভা একটি সর্বসম্মত প্রস্তাব গ্রহণ করে। প্রস্তাবে বিগত দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভার মিনিটস, এবং সংবিধানের ১৬ ধারার বাধ্যবাধকতা অনুসারে:
১. আয় ব্যয়ের হিসাব
২. ব্যালান্স শীট
৩. বার্ষিক-অডিটরস রিপোর্টস
৪. অডিটরস নিয়োগ ও অডিটরসদের রিমোনারেশন নির্ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র যেমন কমপক্ষে তিনটি কোটেশন সংগ্রহ প্রভৃতি যেহেতু দেলোয়ার হোসেনের তালাবদ্ধতা ও হটকারী কর্মকান্ডের কারণে সংগ্রহ করা যায়নি। যেহেতু পক্ষপাতদুষ্ট অডিটর অফিস আয় ব্যয়ের হিসেবে নিকেশ, একউন্টস, অডিটরস-র্রিপোর্ট সরবরাহে সহযোগিতা করেনি। তাই উক্ত অডিট অফিসকে পূনরায় অডিটর হিসাবে নিযুক্ত না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এবং আইনি-বাধ্যবাধকতা নিরসনকল্পে কোম্পানী হাউস, চ্যারিটি কমিশনের সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টি তাঁদেরকে অবগত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সকল আবশ্যকীয় ডকুমেন্টস যেমন একাউন্টস, অডিটরর্স রিপোর্ট, ব্যালান্স শীট প্রভৃতি সংগ্রহ করে তা ম্যানেজমেন্ট কমিটির আসন্ন মিটিংয়ে অনুমোদন করে আগামী বার্ষিক সভায় অনুমোদনের জন্য পেশ করতে হবে। এবং কোম্পানি হাউস ও চ্যারিটি কমিশনকে হালনাগাদ রাখতে হবে। প্রয়োজন হলে সংবিধানের ১০ ও ১১ ধারা বলে চ্যারিটি কমিশননের সাথে পরামর্শ সাপেক্ষে আগামী তিন মাসের ভিতরে আরেকটি সাধারণ সভা AGM করা যেতে পারে।
অন্য এক প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে জনাব দেলোয়ার হোসেন কর্তৃক গঠিত কমিটটিকে অসাংবিধানিক এবং অবৈধ ঘোষণা করে সেই কমিটির গৃহীত সকল কার্যক্রম অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হয়।
সদস্যদের দ্বারা আহুত বিগত ১৪ই অক্টোবর অনুষ্ঠিত রিক্যুইজিশন মিটিং এর সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে সদস্যদের দ্বারা আনীত এক প্রস্তাবের উপর আলোচনার পর গৃহীত এক সিদ্ধান্তে ২৬শে নভেম্বর ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত দ্বিবার্ষিক সভায় ত্রুটি পূর্ণ নির্বাচনকে বাতিল যোগ্য অভিহিত করে যথা শ্রীঘ্রই নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠান করে নুতন কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়। নতুন সদস্য পদের জন্য অপেক্ষমান যে সব আবেদনকারী তাঁদের ফি ইতোমধ্যেই পরিশোধ করেছেন, তাঁদের সদস্য পদ সাংবিধানিক শর্ত সমূহ যথাযথভাবে পূরণ সাপেক্ষে মঞ্জুর করা হয়। এই মর্মে আরো বলা হয় মেম্বারশীপের কোন লিমিটেশন থাকবেনা। যারা বিভিন্ন ক্যাটাগরি থেকে মেম্বার হতে চান তাঁদের সদস্য পদের জন্য আবেদন সাংবিধানিক শর্ত পূরণ সাপেক্ষে মঞ্জুর করা হবে।
ব্যাংক ম্যান্ডেট নিয়ে বর্তমান বিতর্কের অবসনকল্পে পুরাতন ব্যাংক ম্যান্ডেট বাতিল করা হল। নতুন ব্যাংক ম্যান্ডেট গ্রহণ না করা পর্যন্ত ব্যাংক একাউন্টে সকল প্রকার transection বন্ধ রাখতে ব্যাংকে এডভাইস করার জন্য সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সংবিধিবদ্ধ পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচন যথারীতি সংবিধানের ৩৮ থেকে ৪০ ধারা সমূহের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়। ইতিপূর্বে কাউন্সিল অব ম্যানেজমেন্ট কমিটির সিদ্ধান্ত অনুসারে নিয়োগপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনার জনাব মদরিস আলী ও জনাব রফিকুল হায়দার নির্বাচনী প্রক্রিয়া যেমন নমিনেশন গ্রহণ, স্ক্রুটিনি প্রভৃতি সম্পন্ন করেন (as per schedule)।
সভায় উপস্থিত জনাব হেলাল খান (বাংলাদেশ সেন্টারের পার্মান্যান্ট মেম্বার, বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় কম্যুনিটি নেতা) বাংলাদেশ সেন্টার এর ব্যবস্থাপনা পরিষদ গঠন সংক্রান্ত মতপার্থক্য নিরসনের লক্ষ্যে উভয় পক্ষ থেকে ৫ জন প্রতিনিধি নিয়ে সমঝোতা মিটিং এর জন্য প্রস্তাব করেন। তাঁর প্রস্তাব সর্ব সম্মতি ক্রমে গৃহীত হয়।
এই সমস্যা নিরসনের উপায় সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক শহীদুর রহমান জানান তিনটি উপায়ে এই সমস্যের সমাধান করা যেতে পারে:
১. সংবিধানের ৪২ ধারার অধীনে নোটিশ দিয়ে ৪৪ ও ৪৫ ধারা সমূহের আওতায় কমিটি গঠন।
২. সাংবিধানিক ভাবে ডিসপুট (dispute) বা মতো পার্থক্য নিরসনের লক্ষ্যে মেডিয়েশন ও সালিশ নিস্পত্তি (Arbitration)।
৩. সর্বসম্মত ভাবে নতুন নির্বাচন (AGM & election) করে কমিটি গঠন।
অধ্যাপক শহীদুর রহমান আরো বলেন বাংলাদেশ সেন্টার বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন সংগ্রাম সহ বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই সেন্টার গুটি কয়েকশ মেম্বাররের ব্যক্তিগত শখের খেলাঘর হতে পারে না। তাই কেবল মাত্র সদিচ্ছা ও বাংলাদেশী কমিউনিটির বৃহত্তর স্বার্থে সকল ভেদাভেদ ও মত পার্থক্যের উর্ধে উঠে আলোচনার মাধ্যমেই এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভভ।বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করূন চীফ এক্সিকিউটিভ জনাব সৈয়দ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে।