হাউজিং নিয়ে গবেষণা: বাংলাদেশি যৌথ পরিবারগুলোর প্রতি অংশগ্রহণের আহবান

অংশগ্রহণকারী পরিবার পাবে ১শ পাউন্ডের শপিং ভাউচার

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

লন্ডন: পূর্ব লন্ডনে বসবাসকারী বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীর হাউজিং (আবসান) অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি গবেষণা করছে দ্য ওপেন ইউনিভার্সিটি। ‘আমার বাড়ি আমার জীবন’ (মাই হোম, মাই লাইফ) শীর্ষক এই গবেষণার দ্বিতীয় ধাপে ১০টি যৌথ পরিবারের সাক্ষাতকার নেয়া হবে। জানতে চাওয়া হবে যৌথ পরিবারের বসবাসের সুবিধা ও চ্যালেঞ্জের বিষয়গুলো। এক ছাদের নিচে দাদা-দাদি, বাবা-মা এবং নাতি-নাতনী- কমপক্ষে এই তিন প্রজন্ম বসবাস করছেন -এমন পরিবারগুলো এই গবেষণায় অংশ নিতে পারবেন। আগ্রহীদের পূর্ব লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস, নিউহাম, হ্যাকনি এবং রেডব্রিজ এলাকার বাসিন্দা হতে হবে। এই গবেষণায় অংশগ্রহণকারী প্রতিটি পরিবারকে ১শ পাউন্ড ভাউচার প্রদান করা হবে। ইতমধ্যে এই গবেষণার প্রথম ধাপে ৫০ উর্ধ্ব ৮০ জন বাংলাদেশির সাক্ষাতকার নেয়া সম্পন্ন হয়েছে।

যুক্তরাজ্যের প্রখ্যাত ওপেন ইউনিভার্সিটি গবেষণাটি পরিচালনা করছে।গবেষণায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন ওপেন ইউনিভার্সিটির ফ্যাকাল্টি অব ওয়েলবিং, এডুকেশন এন্ড ল্যাঙ্গুয়েজ স্টাডিস-এর এইউজিং বিষয়ক সিনিয়র লেকচারার ড. মনিক গোপীনাথ।

তিন প্রজন্মের সদস্য নিয়ে একত্রে বসবাসকারী পরিবারগুলোর অভিজ্ঞতা এবং সমস্যা সমাধানের কৌশল সম্পর্কে জানা এই গবেষণার অন্যতম উদ্দেশ্য। যুক্তরাজ্যে নানা চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও দক্ষিণ এশীয় বিশেষ করে বাংলাদেশি অনেক পরিবার এখনও গৌরবের সঙ্গে যৌথ পরিবারে বসাবস করে। এক ছাদের নিচে দাদা-দাদি, বাবা-মা এবং নাতি-নাতনির এই একত্রে বসবাস একটি দীর্ঘস্থায়ী রীতি। যৌথ পরিবারে বসবাসকারী সদস্যরা আর্থিক সংস্থানের ভাগাভাগি, পরিবারের দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়া এবং প্রজন্মগত শিক্ষার ধারাবাহিকতা বজায় রাখার সুযোগ পায়। তবে অনেক পরিবার তাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা, সামাজিক, বিনোদন ও শিক্ষার চাহিদা মেটাতে পর্যাপ্ত স্থান সংকুলানের অভাব অনুভব করেন।

গবেষক ডা. মাহেরা রুবি বলেন, বিভিন্ন প্রজন্মের মধ্যে স্থান ভাগাভাগি করা কখনো কখনো চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি করে। অনেক প্রবীণ সদস্য মন্তব্য করেছেন যে, বাসায় যথেষ্ট জায়গা না থাকার কারণে টয়লেট এবং গোসলের মতো দৈনন্দিন কাজে অসুবিধা হয়, যা তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

গবেষণায় অংশ নেয়া একজন প্রবীণ মন্তব্য করেছেন, “আমরা ছোট একটি ঘরে গাদাগাদি করে থাকছি। তবে পরিবার একসঙ্গে আছে বলে আমরা দুঃখ-কষ্ট ভাগ করে নিতে পারি। কিন্তু যখন একটি ঘরে বেশি লোক থাকে, তখন এমনিতেই নানা সমস্যা হয়। আমার এখন বয়স হয়েছে। চাইলেও সময়মতো টয়লেটে যেতে পারি না; কারণ অন্য কেউ হয়তো টয়লেট দখল করে আছে। এই পরিস্থিতি বশে মানসিক কষ্টদায়ক। কিন্তু বাধ্য হয়ে থাকতে হচ্ছে। ওভারক্রাউডিং ঘরে গোসল করতে গেলেও নানা সমস্যা। ঘরকে আপনি চাইলেও পরিষ্কার কিংবা গুছিয়ে রাখতে পারবেন না।”

বর্তমানে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মানুষের ম্যধ্যে যৌথ পরিবারে থাকার প্রবণতা বাড়ছে। বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের কাছ থেকে অন্য সম্প্রদায়গুলো যৌথ পরিবারে থাকার সুবিধা ও চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে অনেক কিছু শিখতে পারে। যৌথ পরিবারে থাকার চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় কী ধরনের কৌশল অবলম্বন করে পরিবারের সদস্যরা শান্তিপূর্ণভাবে একসঙ্গে থাকতে পারেন, তা জানাও এই গবেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য।

গবেষণায় অংশ নিতে আগ্রহীদের ডঃ মাহেরা রুবির সঙ্গে mahera.ruby@open.ac.uk অথবা বাংলা হাউজিং এসোসিয়েশনের জনাব বশির উদ্দিনের সঙ্গে bashir@banglaha.org.uk – এই ইমেইল ঠিকানায় বা 07962132441 নম্বরে যোগাযোগের অনুরোধ করা হয়েছে।

You might also like