রাজস্বের আওতা বাড়াতে ১ সেপ্টেম্বর থেকে চিরুনি অভিযান: ডিএনসিসি মেয়র
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
ঢাকাঃ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম কালশীতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন,আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে রাজস্বের আওতা বাড়ানোর জন্য চিরুনি অভিযান শুরু হবে।আমরা বাড়ি-বাড়ি গিয়ে যারা ট্যাক্সের আওতায় আসেনি, তাদেরকে ট্যাক্সের আওতায় আনার ব্যবস্থা নিব।আমরা আজ শুরু করলাম, এটি চলমান থাকবে।আজ সকালে উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টর থেকে ডিএনসিসির বিভাগীয় কর্মকর্তাদের নিয়ে নগরীর বিভিন্ন এলাকার পরিচ্ছন্নতা, মশক নিধন, সড়ক মেরামত, চলমান উন্নয়নমূলক কাজ, অবৈধ ফুটপাত দখল, অবৈধ বিজ্ঞাপনী সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড সরেজমিনে পরিদর্শন করেন।উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টর থেকে শুরু হয় এই পরিদর্শন। এরপর মিরপুর, কচুক্ষেত, মগবাজার, গুলশান হয়ে বনানীতে শেষ হয় বিশেষ এই পরিদর্শন কার্যক্রম।
প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন,আপনারা দেখেছেন সুন্দর ফুটপাতের উপর নির্মাণসামগ্রী রেখে তা নষ্ট করছে।এই শহরে এগুলো বরদাশত করা হবে না। ১ অক্টোবর থেকে আমরা ঝুলন্ত তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। জলাবদ্ধতা নিরসন প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, কালশীতে এক সময় অনেক জলাবদ্ধতা হতো, এখন আর সে রকম নেই। একইভাবে বনানী এয়ারপোর্ট রোডের জলাবদ্ধতাও নিরসন করা হয়েছে। আশকোনায় নতুন খাল খনন করা হয়েছে। মেট্রোরেল প্রজেক্টের কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা নিরসনেরও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।তিনি বলেন, এরপর পরিদর্শনে বের হলে সাথে ম্যাজিস্ট্রেট ও ট্রাক, লোডার, বুল্ডোজার ইত্যাদি থাকবে। সড়ক ও ফুটপাতের উপর নির্মাণসামগ্রী, দোকান বা অন্য কিছু পেলে তা সাথে সাথে নিলামে বিক্রয় করা হবে। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর থেকে আমরা এ অভিযান শুরু করবো।
সকাল সাড়ে সাতটায় মেয়র উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরে যান।সেখানে একটি বাড়ির সামনে অবৈধভাবে ফুটপাত দখল করে নির্মাণ সামগ্রী রাখায় আতিকুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দেন। এরপর উত্তরা পশ্চিম থানার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় থানার পাশে ডাম্পিং করে রাখা গাড়িতে পানি জমে এডিস মশার লার্ভা হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করেন। থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে তিনি এ বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।
মেয়র উত্তরায় খিজির খাল পরিদর্শন শেষে সকাল ৮টায় মিরপুরের কালশী খাল এবং আশেপাশের এলাকা পরিদর্শন করেন। কালশী এলাকার আশেপাশের গলিতে রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে দোকান বসানোর কারণে তিনি ক্ষুব্ধ হন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ডিএনসিসির কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
পরিদর্শনকালে মেয়র আতিকুল ইসলাম মিরপুরের কিছু রাস্তার উন্নয়ন কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দেন। মিরপুর থেকে মগবাজার যাওয়ার পথে কচুক্ষেতে রাস্তার উপর ময়লার ভাগাড় দেখে প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। মগবাজার রেল ক্রসিংয়ের কাছে প্রধান সড়কে ফ্লাইওভারের নিচে রাখা ময়লার কন্টেইনারগুলো সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন। সেখানে একটি সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) নির্মাণ করার জন্য রাজউক ও হাতিরঝিল কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করবেন বলে জানান।
এরপর গুলশান-১ ও গুলশান-২ এর মাঝে স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংক সামনের ফুটপাথ দখল করে রাখা নির্মাণ সামগ্রী দেখে গাড়ি থামিয়ে নেমে পড়েন মেয়র। এ সময় এভাবে ফুটপাত দখল করে বালু রাখায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে ভৎর্সনা করেন মেয়র। কাউকে না পাওয়ায় বালু জব্দ করা হয়। একই সঙ্গে স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের সকল অবৈধ বিজ্ঞাপনী বিলবোর্ড অপসারণ করার নির্দেশ দেন।
পরিদর্শনকালে অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির সচিব রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর সাইদুর রহমান, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিরুল ইসলাম, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবদুল হামিদ মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।