জিয়া-খালেদা-তারেক সবার হাতেই রক্তের দাগ: শেখ হাসিনা

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

ঢাকাঃ বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান,তার স্ত্রী খালেদা জিয়া এবং তাদের ছেলে তারেক রহমান—সবার হাতে রক্তের দাগ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।তিনি বলেন,জিয়াউর রহমান গুম-খুনের রাজনীতি শুরু করে গেছেন।যার ধারাবাহিকতায় খালেদা জিয়া অপারেশন ক্লিনহার্টের নামে মানুষ হত্যা করেছেন।আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছেন।জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সোমবার (৩১ আগস্ট) ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলোচনা সভায় যুক্ত হন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন,জিয়াউর রহমানের যে চরিত্র সেই একই চরিত্র তার স্ত্রী খালেদা জিয়ারও।একের পর এক হত্যাকাণ্ড,অপারেশন ক্লিনহার্টের নামে কত মানুষকে হত্যা এবং সেগুলোর বিচার বন্ধে ইনডেমনিটি আইন করেছিলেন তিনি।বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের ইনডেমনিটি দিয়ে খুনিদের পুরস্কৃত করেছিল জিয়াউর রহমান।আর খালেদা জিয়া ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসেই অপারেশন ক্লিনহার্টের নামে যাদের দিয়ে মানুষ হত্যা করেছে তাদের ইনডেমনিটি দিয়ে পুরস্কৃত করেছে।তারা এভাবেই রাজনীতি করেছে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গুম-খুনের কথা যারা বলে তাদের প্রশ্ন,এই গুম-খুন শুরু করেছে কে? এটা তো জিয়াউর রহমানই শুরু করেছে।সেনাবাহিনীর অফিসাররা ছুটিতে ছিল, চলে আসছে, তাদের মেরে ফেলেছে। তাদের পরিবার লাশও পায়নি। সাধারণ সৈনিক, তাদের হত্যা করেছে, তাদের পরিবার লাশ পায়নি। তারা একটা চাকরিও পায়নি। অমানবিক জীবনযাপন করেছে। এভাবে সারা দেশকে রক্তাক্ত করেছে শুধু ক্ষমতা নিষ্কণ্টক করার জন্য।শিক্ষাদীক্ষা তো নাই।শুধু গুণ্ডামি আর অত্যাচার,খুনের রাজনীতি কায়েম করতে চেয়েছিল।তাদের অপকর্ম ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।

ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে আলোচনায় সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের,সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক,সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন।ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।

শেখ হাসিনা বলেন,জাতির পিতাকে হত্যা করে তারা ভেবেছিল নাম মুছে ফেলবে, আমাদের বিজয়ের ইতিহাস মুছে ফেলবে।লাখো শহীদের মহান ত্যাগ সেটাও মুছে ফেলবে,লাখো মা বোনেরা,তাদের ওপর কী নির্মম অত্যাচার করেছে সেটাও মুছে ফেলবে। যে আদর্শের ওপর দেশ স্বাধীন সেই আদর্শটাই তার ধ্বংস করতে চেয়েছিল।কিন্তু বর্তমান সরকার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে দেশ গড়ে তোলার জন্য কাজ করছে।যে কারণে সরকার গঠনের পর তো প্রতিশোধ নিতে যাইনি।আমরা দেশের উন্নয়নের দিকে নজর দিয়েছি।শিক্ষাদীক্ষার দিকে নজর দিয়েছি।দেশের সম্মান ফেরানোর চেষ্টা করছি।

তিনি বলেন,যে সম্মান ভূলণ্ঠিত করেছিল ১৯৭৫ সালে জাতির পিতার হত্যার মধ্য দিয়ে, আমরা সেই হত্যাকারীদের বিচার করেছি।হত্যাকারীদের বিচারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে যে ন্যায়বিচার হয় সেটা নিশ্চিত করেছি।এখনও আসামিদের কেউ কেউ পলাতক আছে, কিন্তু তারপরেও বিচার করেছি।হ্যাঁ এটা ঠিক,ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।তবে ইতিহাস একদিন বের হবে,এসব খবরও বের হবে।এগুলো পাওয়া যাবে,এটা এক সময় না এক সময় আসবে।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শে পথ চলো

শেখ হাসিনা বলেন,ছাত্রলীগ দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতির পিতার আদর্শ বুকে নিয়ে এগিয়ে যাবে,সেটাই চাই।ত্যাগের মধ্য দিয়েই শান্তি,ভোগের মধ্যে না।বাংলার মানুষের কাছ থেকে বঙ্গবন্ধু কিছু নিয়ে যাননি,দিয়েই গেছেন।শেষ পর্যন্ত রক্তটাও দিয়ে গেছেন। আসলে কোনও আত্মত্যাগ বৃথা যায় না।তিনি যে স্বপ্ন দেখেছেন,এ দেশের মানুষের জীবনমান উন্নত করবেন,ওইটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য।এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে তার স্বপ্নের সোনার বাংলা যেন গড়তে পারি।দেশের ভবিষ্যৎটা যেভাবে আমরা তোমাদের তরুণ প্রজন্মের জন্য গড়ে দিয়ে যেতে চাচ্ছি,ডিজিটাল বাংলাদেশের মাধ্যমে তোমাদের নতুন প্রজন্মের কর্মসংস্থান থেকে শুরু করে শিক্ষা স্বাস্থ্য,সব দিকে আমরা লক্ষ রাখছি।ঠিক সেভাবে দেশটা যেন এগিয়ে যায়,সেটাই তোমাদের কাছ থেকে আমরা আশা করছি।তোমরা সেভাবেই এগিয়ে যাও।

You might also like