উহানের খবর প্রকাশ করায় সাংবাদিকের ৫ বছরের কারাদণ্ড
আন্তজার্তিক ডেস্ক
সত্যবাণী
চীন: গত ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরেই প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে।মূলত এরপর থেকেই তা সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।দুই শতাধিক দেশে তাণ্ডব চালিয়ে এখনো ক্ষান্ত হয়নি প্রাণঘাতী এই ভাইরাস।এ দিকে উহানে করোনা সংক্রমণের ঘটনা প্রকাশ্যে আনায় চীনে এক নারী সাংবাদিককে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত এই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ভুয়া তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে আগেই মামলা দায়ের করা হয়েছিল।আদালতে তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।ফলে অনেকেই এর সমালোচনা করে বলছেন,সাংবাদিকের এই সাজার ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে আরও একবার দেখিয়ে দিল যে,চীনে মতপ্রকাশের কোনো স্বাধীনতা নেই।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, সাংবাদিক ঝাং ঝান আগে ছিলেন একজন আইনজীবী। পরবর্তীকালে তিনি আইনের পেশা ছেড়ে সাংবাদিকতার জগতে আসেন। উহানে করোনা ভাইরাসের খবর প্রকাশ করায় কয়েক মাস আগেই তাকে আটক করেছিল স্থানীয় প্রশাসন। তারপর থেকে গত ছয় মাস ধরে ওই নারী সাংবাদিক সাংহাইয়ে বন্দি রয়েছেন।চীনে সরকার বা প্রশাসনের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললে বা সমালোচনা করলে তাকে শাস্তির আওতায় আনা নতুন কোনো ঘটনা নয়। উহানে কোভিডের খবর প্রকাশ্যে আনায় একই কারণে ঝাং ঝানের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হয়েছে। এ কারণে ছ-মাসেরও বেশি সময় ধরে বিচারাধীন অবস্থাতেও তাকে বন্দি থাকতে হয়েছে।সরকার পক্ষের অভিযোগ অনুযায়ী, সামাজিক মাধ্যম উইচ্যাট, টুইটার ও ইউটিউবকে কাজে লাগিয়ে নিজের লেখা ও ভিডিওর মাধ্যমে একাধিক সংবাদমাধ্যমসহ বিভিন্ন মানুষের কাছে তথ্য সরবরাহ করেছেন ঝাং ঝান। উহানকে কোভিড-১৯ মহামারির হটস্পট হিসেবে তুলে ধরে ফ্রি রেডিয়ো এশিয়া ও ইপোক টাইমসকে সাক্ষাতকারও দিয়েছেন তিনি।
চীনের মানবাধিকার সংগঠন চাইনিজ হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার্স বলছে, ঝাং ঝান একা নয়, কোভিডের খবর প্রকাশ করায়।এর মধ্যেই চীনে একাধিক সাংবাদিক গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাদের পরিবারের সদস্যদের ওপরও সরকারের পক্ষ থেকে হেনস্থার ঘটনা ঘটেছে। এসব নিয়েও খবর প্রকাশ করেছিলেন ঝাং ঝান। সে কারণেই চীনা সরকারের রোষানলে পড়তে হয়েছে তাকে।মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, হংকংয়ের আন্দোলনকারীদের নিয়ে খবর প্রকাশ করায় এর আগে ২০১৮ সালেও একবার ঝাং ঝানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।গার্ডিয়ান জানিয়েছে, করোনার খবর করতে উহানে গিয়ে চলতি বছর বহু সাংবাদিক গ্রেপ্তারের মুখে পড়েছেন। চলতি বছর হংকংয়ে জাতীয় নিরাপত্তা আইন কার্যকর হওয়ায়, সেখানেও একাধিক সাংবাদিক গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।