হজ-ওমরাহ ব্যবস্থাপনায় আইন হচ্ছে
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
ঢাকাঃ নীতিমালার পরিবর্তে হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন করছে সরকার। এজন্য ‘হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২০’ এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চ্যুয়ার মন্ত্রিসভা বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ও সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রীরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন।বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।তিনি বলেন, এতদিন পর্যন্ত হজ ব্যবস্থাপনাটা চলত একটা নীতিমালার মাধ্যমে। নীতিমালার মাধ্যমে চলার কারণে কিছু অসুবিধা হতো, অ্যাকশন নেয়া যেত না। কিছু অ্যাকশন নিলে তারা (হজ ও ওমরাহ এজেন্সি) আবার হাইকোর্টে গিয়ে রিট করে এগুলোর বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ নিয়ে আসত।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, ২০১১ সালে সৌদি আরব টোটাল হজ ব্যবস্থাপনাটা পরিবর্তন করে দিয়েছে। পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াও এখন আইন করে ফেলেছে। হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে তাল মেলাতে হলে আমাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে একটি লিগ্যাল কাঠামো প্রয়োজন। ২০১২ সালে মন্ত্রিসভার একটা নির্দেশনাও ছিল যে হজ ব্যবস্থাপনায় নীতিমালার পরিবর্তে একটি আইন নিয়ে আসতে হবে। সেটাই আজকে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় নিয়ে এসেছে।আইনের উদ্দেশ্য পূরণে হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব সরকারের ওপর ন্যস্ত থাকবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সরকার হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে সৌদি সরকারের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি, সমঝোতা ও সম্মতিক্রমে সৌদি আরবের যেকোনো স্থানে হজ অফিস স্থাপন ও প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারবে। এই আইনের অধীনে নিবন্ধন ছাড়া কেউ কোনো হাজী বা হজের কোনো লোকজনকে হ্যান্ডেল করতে পারবে না।
‘নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ যদি দেখে কেউ অনিয়ম করছে তবে উপযুক্ত তদন্ত ও শুনানি করে হজ ও ওমরাহ এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে। সরকার দৈব-দুর্বিপাক, মৃত্যু, দুর্ঘটনা, হজযাত্রীদের আকস্মিক প্রয়োজন পূরণ ও অপ্রত্যাশিত ব্যয় নির্বাহের জন্য একটি আপদকালীন তহবিল গঠন করবে।’তিনি বলেন, হজের চুক্তি এখানে হওয়ার পর কেউ গিয়ে যদি ওই দেশেও (সৌদি আরব) ঠকায় সেই অপরাধ এখানে করা হয়েছে বলে গণ্য হবে। সেক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে ক্রিমিন্যাল বা লিগ্যাল বা অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অ্যাকশন নেয়া যাবে। এটা এই হজ আইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। ওখানে তারা ঠকাচ্ছে, তখন এটা কী হবে, সে জন্য তারা (হজ ও ওমরাহ এজেন্সি) অনেক সময় বেনিফিট নিয়ে নিত। এটা আইনে কাভার করে দিয়েছে।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, অনিয়মের জন্য হজ এজেন্সির নিবন্ধন বাতিল করা যাবে এবং সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। ওমরাহ এজেন্সির ক্ষেত্রে নিবন্ধন বাতিল ও ১৫ লাখ টাকা জরিমানা করা যাবে। ক্রিমিন্যাল অফেন্স (ফৌজদারি অপরাধ) করলে পেনাল কোড বা অন্যান্য আইনে তার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেয়া যাবে। আর অপরাধের জন্য কোনো হজ এজেন্সিকে যদি পরপর দুই বছর সতর্ক করা হয় তাহলে লাইসেন্স দুই বছরের জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল থাকবে।‘হজ এজেন্সির অনিয়মের বিষয়ে বলা হয়েছে- হজ ও ওমরাহ যাত্রীদের সঙ্গে চুক্তি ভঙ্গ করা, হজ ও ওমরাহ যাত্রীদের হয়রানি, ভোগান্তি ও আর্থিক ক্ষতিসাধন; অসত্য তথ্য ও প্রতারণার মাধ্যমে নিবন্ধন; আইন বিধি ও সরকারের জারি করা নির্দেশনা ও নিবন্ধন শর্ত লঙ্ঘন।হজ এজেন্সি যদি তাদের স্বত্ব ও নাম পরিবর্তন করতে চায় তবে খসড়া আইন অনুযায়ী নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।