ইউরোপ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বেরিয়ে এলো ব্রিটেন

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

লন্ডনঃ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে অর্ধশতকের অংশীদারীত্বের ইতি ঘটিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচ্ছেদ হওয়ার পর যুক্তরাজ্যের নতুন যুগ শুরু হয়েছে। শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ১১টা থেকে দেশটি ইউরোপের আইন অনুসরণ বন্ধ করে দিয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপি ও বিবিসির খবরে এমন তথ্য মিলেছে। ভ্রমণ, বাণিজ্য, অভিবাসন ও নিরাপত্তা সহযোগিতার ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে এখন ভিন্ন আইন মেনে চলবে ব্রিটেন। অর্থাৎ ইউরোপের একক বাজার ও কাস্টমস ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে এসে নিজের মতো করে চলবে দেশটি।

প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, যুক্তরাজ্য তার নিজ হাতে স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে। দীর্ঘ ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর আমরা নিজেদের কাজগুলো ভিন্ন ও ভালোভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হব। তবে এরপরও ব্রিটেন মিত্র ও বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ব্রিটিশ মন্ত্রীরা হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, নতুন আইন কার্যকর হতে যাওয়া ও পরিবর্তিত শর্তে মহাদেশটির সঙ্গে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে আসছে সপ্তাহ ও দিনগুলোতে বেশ কিছু ঝামেলা পোহাতে হবে ব্রিটিশ কোম্পানিগুলোর। কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলেন, বন্দরগুলোতে ধীরগতির আশঙ্কার মধ্যেই সীমান্ত ব্যবস্থা প্রস্তুত আছে।

২০১৬ সালে ব্রেক্সিটের গণভোট হওয়ার সাড়ে তিন বছর পর গত ৩১ জানুয়ারি ২৭ সদস্যের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক এই সংঘ থেকে বের হয়ে আসার ঘোষণা দেন ব্রিটিশ কর্মকর্তারা।কিন্তু গত ১১ মাস তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য আইন মেনে আসছিল। যদিও একই সময়ে দুপক্ষের মধ্যে ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে।বাণিজ্য আলোচনা সফলভাবে শেষ হওয়ায় ক্রিসমাসের দিন তারা একটি চূড়ান্ত চুক্তিতে সম্মত হয়েছে। পার্লামেন্টের সায় আসার পর বুধবার থেকে ব্রিটেনে যা আইন হিসেবে কার্যকর হচ্ছে।

নতুন রীতির অধীন ব্রিটিশ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ইউরোপীয় অভ্যন্তরীণ বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশের সুযোগ পাবে। যার অর্থ– ব্রিটেন ও মহাদেশটির মধ্যে পণ্যের সীমান্ত পার হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো আমদানি-শুল্ক থাকছে না।কিন্তু ব্যবসা ও ইউরোপীয় দেশগুলোতে লোকজনের ভ্রমণের ক্ষেত্রে আরও বেশি নথিপত্রের ঝামেলার বিষয়টি রয়ে গেছে। এ ছাড়া ব্যাংকিং ও সেবাখাতে কী ঘটতে যাচ্ছে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা কাজ করছে– ব্রিটেনের অর্থনীতির জন্য যা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।বিবিসির রাজনৈতিক প্রতিনিধি জেসিকা পার্কার তার বিশ্লেষণে বলেন, এতে অনেকের মনে বিপুল আশাবাদ জাগলেও অন্যদের মধ্যে গভীর অনুশোচনা কাজ করছে।‘বাণিজ্য, ভ্রমণ, নিরাপত্তা ও অভিবাসনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এলেও মহামারী করোনার কারণে সমাজের বড় একটি অংশ স্তব্ধ হয়ে আছে।’আগামী মাসগুলোতে এই পরিবর্তন আরও স্পষ্ট হয়ে আসবে বলে তিনি মনে করেন।

You might also like