ছাতকে পিয়াইন নদী হতে অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলন মসজিদ,কবরস্থান,রাস্তা ও বসত ঘর নদী গর্ভে

শামীম আহমদ তালুকদার
সত্যবাণী

সুনামগঞ্জ থেকেঃ সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের গোয়ালগাঁও গ্রাম দিয়ে বয়ে যাওয়া পিয়াইন নদীর গোয়ালগাঁও নামক স্থান হতে কতিপয় অবৈধ বালি ব্যবসায়ীদের যোগ সাজসে প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত বালি শ্রমিকরা নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় হাটু ও কোমর সমান পানি হতে বালতির মাধ্যমে কখনও জনমানুষের অগোচরে ড্রেজিং মেশিন লাগিয়ে বালি উত্তোলন করার অভিযোগ উঠেছে। ফলে গোয়ালগাঁও গ্রামের পিয়াইন নদীর তীরে অবস্থিত মসজিদ কবরস্থান, রাস্তা ও গার্ডওয়াল সহ প্রায় শতাধিক বসত ঘর নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। নদী তীরকর্তী কয়েক হাজার মানুষ ঝুঁকিপূর্ন অবস্থায় বসবাস করলেও স্থানীয় প্রশাসন সহ সংশিষ্টদের কোন গুরুত্বপূর্ন পদক্ষেক নিচ্ছননা অভিযোগ ভোক্তভোগীদের। প্রতিদিন নদীর তীরের লোকজন তাদের বসত ঘর ও রাস্তায় ফাটল দেখা দেয়ায় ডাক চিৎকার দিয়ে বালি উত্তোলনকারী শ্রমিকদের বাধা নিষেধ দিলেও তারা বাধা নিষেধ মানছেন না। এতে নদী ভাঙ্গন দেখা দেয়ায় নদী তীরের মানুষজন এখন আতংকের মধ্যে বসবাস করছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখহাসিনা গৃহহীন হতদরিদ্র মানুষকে নিরাপদ আবাসনের আওতায় এনে গৃহ নির্মান করে দিলেও সংশ্লিষ্টরা সরকারি বিভাগ ও জনপ্রতিনিধি নদী গর্ভে বিলিন হওয়া পরিবারগুলোর কথা গুরুত্ব দিচ্ছেন না।জানা যায়, বালি শ্রমিকরা প্রতিদিন অপরিকল্পিত ভাবে বালি উত্তোলন করে কাঠের নৌকা, বাল্কহেড ও ইঞ্জিন চালিত নৌকা বোঝাই করে অন্যত্র বিক্রি করার ফলে পাহাড়ী ঢলের পানিতে স্থাপনা গুলি নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়বে।

এ বিষয়ে ছাতকের ব্যবসায়ী গোয়ালগাঁও গ্রামের বাসিন্দা আলহাজ বিলাল মিয়া জানান, নদী হতে বালি উত্তোলন করায় আমার বাস ভবনের ফ্লোরে এবং দেয়ালে ফাটল ধরে। ভবনটি ঝুঁিকপূর্ন হয়ে পড়ায় আমি আমার পরিবার পরিজন নিয়ে বাধ্য হয়ে ছাতক শহরে বসবাস করতে হচ্ছে। আমার বাড়ির সামনের রাস্তাটি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে পথচারিরা আমার বাড়ির ভিতর দিয়ে চলাচল করছেন। এছাড়াও গ্রামের অসহায় কয়েকটি পরিবার নদী ভাঙ্গনের ফলে ভিটামাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।
একই গ্রামের বাসিন্দা সামছুজ্জামান রাজা জানান, আমাদের বাপ দাদার স্থাপিত কবরস্থানটি নদী গর্ভে চলে যাওয়ায় আমরা শংকিত রয়েছি। এব্যাপারে গ্রামের প্রায় শতাধিক ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের স্বাক্ষরসহ আলহাজ বিলাল মিয়া বাদী হয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২১ ইং তারিখে ছাতক থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অনুলিপি সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ছাতক সার্কেল ও ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর প্রেরন করা হয়।ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রহমান জানান, নদী গুলো রক্ষা করার জন্য অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলন বন্ধে শীঘ্রই ভ্রাইম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হবে।ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ নাজিম উদ্দিন জানান, বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

You might also like