বিশ্বের শীর্ষ ভ্রমণবান্ধব দেশ পর্তুগাল
শাহ মো:তানভীর
সত্যবাণী
লিজবন থেকে: প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপর ইউরোপের দেশ পর্তুগাল। সাগর, পাহাড়, নদী আর সবুজের সমারোহে অপরূপ দৃশ্য। প্রকৃতির এমন সৌন্দর্য ভ্রমণ পিপাসুর দৃষ্টি কাড়ে। হৃদয় জুড়ায়। তা ছাড়া বছরের বেশির ভাগ সময় এখানকার আবহাওয়া সহনীয় উষ্ণ থাকায় ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে প্রধান গন্তব্য হয়ে উঠেছে পর্তুগাল।
আটলান্টিক সাগর ঘেঁষে দেশটির অবস্থান। ফলে দেশটিতে রয়েছে বিস্তীর্ণ সমুদ্র সৈকত। একই সাথে পর্তুগালের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখ লাখ পর্যটক ছুটে আসেন এখানে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইউরোপের এই দেশটির রাজস্ব আয়ের বড় একটি অংশ আসে পর্যটন খাত থেকে। তবে করোনাভাইরাসের মহামারীতে পর্যটকদের ভ্রমণে বাধা-নিষেধ থাকায় চিরচেনা চিত্র পুরোপুরি বদলে যায় ২০২০ সালে। দেশটির রাজস্ব আহরণেও প্রভাব পড়ে। আশা করা হচ্ছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবারো পর্তুগালের বিস্তীর্ণ সৈকত পর্যটকদের পদভারে মুখরিত হবে। ফের ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে ইউরোপের প্রধান গন্তব্য হবে পর্তুগাল। তারই ইঙ্গিত মিলেছে ভ্রমণ পিপাসুদের এক অনলাইন জরিপেও।
ইউরোপীয় সেরা গন্তব্য ওয়েবসাইটের ব্যবহারকারীরা পর্তুগালকে তাদের প্রথম পছন্দ হিসেবে বেছে নিয়েছেন। একই সাথে পর্তুগালের ব্রাগা, পর্তু, ক্যাসকাইস ও আলগার্ভের সমুদ্র সৈকত; মাদেইরা ও আজোরেসকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত জায়গা হিসেবে পছন্দের তালিকায় রাখা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, বছরে ছয় মিলিয়ন বা ৬০ লাখেরও বেশি ভ্রমণকারী ওই সাইটটি ব্যবহার করে থাকেন। তাদের মতে, পর্তুগাল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সমুদ্র সৈকত, সুস্বাদু খাবার ও সমৃদ্ধ ইতিহাসের জন্য আলাদা স্থান করে নিয়েছে।
পর্যটকদের মতে, ‘আপনি যদি পর্তুগালে ঘুরতে যান, তাহলে অবশ্যই ব্রাগা শহরে যাবেন। ওই শহরটি ভিজিট ছাড়া আপনার কাছে ভ্রমণ অপূর্ণ থেকে যাবে। কেননা ব্রাগা শহরটি ইউরোপের মধ্যে সেরা গন্তব্য হিসেবে মনোনীত হয়েছে।’অপর দিকে পর্তু শহরটি ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে ইউনেস্কোর তালিকাভুক্ত। কাসকাইস ও আলগার্ভের সমুদ্র সৈকতগুলো, সূর্যের তাপ রশ্মি উপভোগের প্রধান কেন্দ্র। আর যারা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সবুজের সমারোহ উপভোগ করতে চান তারা যেন পর্তুগালের বিখ্যাত দু’টি দ্বীপ আজোরস ও মাদেইরাতে যান।
গত কয়েক মাসের ট্র্যাফিক ও গবেষণার তথ্যের ভিত্তিতে ইউরোপে পর্যটকদের কাছে র্যাঙ্কিংয়ে পর্তুগালের পর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ফ্রান্স। তারপরে পর্যায়ক্রমে গ্রিস, ইতালি ও ক্রোয়েশিয়া।
ট্যুরিজম দ্য পর্তুগালের সভাপতি লুস আরাজাতো বলেন, এই র্যাঙ্কিং প্রমাণ করে যে করোনা মহামারীর কারণে যা কিছু হয়েছে তা সত্ত্বেও পর্যটকরা পর্তুগালকে ভুলেননি। তারা উদগ্রীব হয়ে আছেন এখানকার পর্যটন কেন্দ্রে ফিরে আসার জন্য। তিনি পর্যটকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে আপনাদের যথাযথ নিরাপত্তার সাথে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত থাকবো।’ তিনি আরো বলেন, ‘শ্রেষ্ঠ গন্তব্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় নিঃসন্দেহে আমাদের দেশের অবস্থানকে ইউরোপের মধ্যে আরো সুসংহত করবে।’