ইতালি-ইংল্যান্ড ফাইনাল মহারণ
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
লন্ডনঃ লন্ডনের বিখ্যাত ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা নির্ধারণী ফাইনাল মহারণে মুখোমুখি হচ্ছে ফুটবলের দুই পরাশক্তি ইতালি ও ইংল্যান্ড।হাইভোল্টেজ এ মহারণ শুরু হবে রোববার (১১ জুলাই) বাংলাদেশ সময় রাত ১টায়।সরাসরি সম্প্রচার করবে সনি সিক্স ও সনি টেন ২ চ্যানেল।
পারফর্মেন্স বিবেচনায় আসরের সেরা দু’টি দলই ফাইনালের রঙিন মঞ্চে উঠে এসেছে। যে কারণে শিরোপা লড়াই উত্তেজনায় ঠাসা ও জমজমাট হবে বলে আশা করছেন ফুটবল বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে সাধারণ দর্শকরা। এবার নিজেদের ইউরোর ইতিহাসে প্রথমবার ফাইনালে এসেছে ইংল্যান্ড। যে কারণে ফুটবলের জনকদের সামনে প্রথম শিরোপার হাতছানি। অন্যদিকে ১৯৬৮ সালে ইউরোর একমাত্র শিরোপা জয় করা ইতালি এবার ৫৩ বছর পর দ্বিতীয় ট্রফি জয়ের মিশনে নামছে।পরিসংখ্যান ও মুখোমুখি লড়াইয়ে ইতালিয়ানদের চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও স্বাগতিকের সুবিধাটুকু কাজে লাগিয়ে বাজিমাত করার আশা ইংলিশদের। ১১ শহরে খেলা হলেও এবার ইংলিশরাই সবচেয়ে বেশি নিজেদের মাঠে খেলার সুবিধা পেয়েছে। ফাইনালসহ মোট ছয়টি ম্যাচ তারা খেলতে যাচ্ছে হোমগ্রাউন্ড ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে। যে কারণে প্রায় ৭০ হাজার দর্শকের সমর্থন পাবেন হ্যারি কেন, রাহিম স্টার্লিং, ম্যাসন মাউন্টরা। তবে সেমিফাইনালে ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে প্রায় ১১ হাজার যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইতালিয়ান সমর্থক মাঠে ছিল। ফাইনালেও তাদের দেখা যাবে।পাশাপাশি ইতালি থেকে এক হাজার দর্শক প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। ইতালির রাষ্ট্রপতি সার্জি মাত্তারেলাও ফাইনাল দেখবেন বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে ফাইনালের উত্তাপ সবখানে ছড়িয়ে পড়েছে। দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে ফুটবল দুনিয়া।
এরই মাঝে ইতালিয়ান সংবাদমাধ্যম দাবি করে বসেছে, ইউরোপিয়ান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফা ষড়যন্ত্র করে ইংল্যান্ডকে শিরোপা জেতাতে চায়। সেমিফাইনালে ডেনমার্কের বিরুদ্ধে ইংলিশরা বিতর্কিত পেনাল্টি পাওয়ার পর এ নিয়ে চারিদিকে বেশ শোরগোল চলছে।পরিসংখ্যানে স্পষ্ট পিছিয়ে থাকলেও ঘরের মাঠে ফাইনাল হওয়ার সুবিধা নিতে মরিয়া ইংল্যান্ড। ওয়েম্বলিতে সর্বশেষ ১৭ ম্যাচের ১৫টিতেই জিতেছে গ্যারেথ সাউথগেটের দল। ম্যাচগুলোতে ইংল্যান্ড গোল করেছে ৪৬টি। হজম করেছে মাত্র ৫টি।ফাইনালের আগে পরিসংখ্যান অবশ্য চোখ রাঙানি দিচ্ছে ইংলিশদের। বড় কোন টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত ইতালিকে হারাতে পারেনি তারা। শুধু তাই নয়, ইউরোতে এর আগে দুইবারের সাক্ষাতে দুইবারই জয় পেয়েছে ইতালি। সবমিলিয়ে মুখোমুখি লড়াইয়েও ইতালিয়ানদের আধিপত্য। এ পর্যন্ত ২৭ দেখায় ইংল্যান্ডের ৮ জয়ের বিপরীতে ইতালির জয় ১১ ম্যাচে। বাকি ৮ ম্যাচ ড্র হয়।
তবে আন্তর্জাতিক প্রীতি ফুটবলে দু’দলের সর্বশেষ দুই সাক্ষাতাই ১-১ গোলে ড্র হয়েছে। ইতালি এর আগে তিনবার ইউরোর ফাইনালে খেলে একমাত্র শিরোপাটি জিতেছে সেই ১৯৬৮ সালে। এরপর ২০০০ ও ২০১২ সালের ফাইনালে হেরেছে। এবার ৫৩ বছরের অপেক্ষা শেষে ইউরোতে দ্বিতীয় শিরোপা জয়ের হাতছানি যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের।অন্যদিকে ইংল্যান্ড তাদের ইউরো ইতিহাসে এবারই প্রথম ফাইনালে এসেছে। শুধু তাই নয়, ইংলিশরা বৈশ্বিক কোন আসরে ৫৫ বছর পর রঙিন এই মঞ্চে এসেছে। ফুটবলের জনকরা তাদের ইতিহাসে একবারই বড় আসরের ফাইনালে খেলেছে। সেটা ১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপ। সেবার ৩০ জুলাই এই ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামেই অষ্টম বিশ্বকাপের ফাইনালে তখনকার পশ্চিম জার্মানিকে অতিরিক্ত সময় ৪-২ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো ইংল্যান্ড। পাঁচ দশকেরও বেশি সময় আগের ট্রফিটাই এখন পর্যন্ত ইংলিশদের একমাত্র অর্জন। এবার একই ভেন্যুতে থ্রি লায়ন্সদের সোনালি প্রজন্ম দীর্ঘ অপেক্ষা ঘোচাতে পারে কিনা সেটাই দেখার।