বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লন্ডনে সিপিবি’র প্রতিবাদ সমাবেশ
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
লন্ডনঃ ‘রুখে দাঁড়াও সাম্প্রদায়িকতা’ শ্লোগানকে সামনে রেখে গত ৭ নভেম্বর লন্ডনের মাইক্রোবিজনেস সেন্টারে হয়ে গেলো বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের প্রতিবাদ সমাবেশ। প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজন করে সিপিবি ইউকে। সহযোগিতায় ছিল বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী যুক্তরাজ্য সংসদ,সত্যেনসেন স্কুল অব পারফর্মিং আর্টস ও বাংলাদেশী ওয়ার্কার্স কাউন্সিল ।আমিনা আলীর সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন কমরেড ডা: রফিকুল হাসান খান জিন্নাহ। প্রতিবাদ সমাবেশে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী “আমরা মানুষের জয়গান গাই গেয়ে যাই,আমরা জীবনের জয়গান গাই” সাম্যের ও গণমানুষের গান দিয়ে অনুষ্ঠান সূচনা করে। অত:পর বক্তব্য ও প্রতিবাদি গানের মধ্যদিয়ে সমগ্র অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়ে থাকে। একক ভাবে প্রতিবাদি গান পরিবেশন করেন উদীচী শিল্পী অসীমা দে ও সাম্যের গান পরিবেশন করেন জুবের আক্তার সোহেল সহ সত্যেন সেন স্কুল অব পারফর্মেন্স ও উদীচীর শিশু শিপ্পীরা।
সমাবেশে অন্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হিন্দু এসোসিয়েশনের পক্ষে অমিতাভ বনিক, ঔঁম শান্তি এসোসিয়েশনের সভাপতি স্বরূপ শ্যাম চৌধুরী, সিপিবির শিব শংকর সাহা, বীর মুক্তিযোদ্ধা রাজনীতিক অনিন্দ অলি,কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট ডা:আশফাক,ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধারন সম্পাদক রুবি হক, সাবেক ছাত্রনেতা ও সাংস্কৃতিক কর্মী গোলাম আকবর মুক্তা,কমিউনিটি অ্যক্টিভিস্ট আ ফ ম চুন্নু,উদীচীর সহ সভাপতি নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশী ওয়ার্কার্স কাউন্সিলের সাধারন সম্পাদক সুশান্ত দাস(প্রশান্ত),সত্যেন সেন স্কুল অব পারফর্মিং আর্টসের সভাপতি গোপাল দাস, জাসদ নেতা কবি মুজিবুল হক মনি,উদীচী সভাপতি হারুন অর রশীদ,রাজনীতিবিদ কমরেড আবেদ আলী আবিদ প্রমুখ।সমাবেশে বক্তারা বলেন ৭১ যুদ্ধ করে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। কে সংখ্যা লঘু আর কে সংখ্যাগুরু এসব শোনার জন্যে নয়। কোন সিভিল সমাজে এসব চলেনা। এটা সমাজের দৈন্যতার বিষয়। আবেগ কন্ঠে বলেন আজ এসব বলতে লজ্বা হয় কষ্ট হয়।সাম্প্রদায়িকতা মানুষকে বর্বর ও পাশবিক করে তোলে। মানুষের ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতিকে বিনষ্ট করে। সাম্প্রদায়িকতা কেবল মাত্র মানুষে মানুষে হিংসা, বিদ্বেষ, ঘৃণা, ক্রোধ, মারামারি, কাটাকাটি, হানাহানি সৃষ্টি করতে পারে। এটা মানুষকে সংঘাত ও সংঘর্ষে উৎসাহী করে তোলে। মানুষকে করে সহিংসতাপ্রেমী।
ফলে জাতীয় জীবন স্থবির হয়ে পড়ে। সমাজে অরাজকতা ও নৈরাজ্যের সৃষ্টি হয়। জাতীয় অগ্রগতি থমকে যায়।
বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এদেশে বাপ-দাদারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এক সাথে বাস করে হিন্দু,মুসলিম,বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান আমরা সবাই। এটি আমাদের গৌরব যে আমরা ধর্মনিরপেক্ষ এক জাতি। আমরা বাঙালি জাতি,হার্দিক ভাবেই বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের সাথে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হই। সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও সহযোগিতা আমাদের আদর্শ। পারস্পরিক বিশ্বাস ও আস্থা আমাদের ধর্ম। ৫২, ৬৯, ৭০, ৭১-এ বাঙালি জাতি তাদের অসম্প্রদায়িক চেতনার স্বাক্ষর রেখেছে। তাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আর একতাকে চিরভাস্বর করেছে।কাজেই কিছু কিছু ধর্মান্ধ মানুষের কারণে এই দেশ ও জাতিকে আমরা ধর্মান্ধতার মুখে ঠেলে দিতে চাই না। ইহাতে সরকার দলীয় মানুষের যতোটা মূখ্য ভূমিকা থাকা দরকার ততোটা আমাদের ব্যক্তিগত জীবনেও ধর্মীয় দর্শনের গোড়াতে লক্ষ্য রাখা দরকার অন্যতায় এর ছোবল হতে আমরা রক্ষা পাবনা। চোখে দেখার মতো ৭% জাতি গোষ্ঠীও নি:শেষ হয়ে যাবে।প্রয়োজনে এই মুহুর্তে সরকারের ৭২এর সংবিধান কার্যকর করা দরকার বলে দাবী তোলেন। অবশেষে সুধী সমবেত সহ সকল শিল্পীবৃন্দ মিলে “এলড়াই বাঁচার লড়াই এ লড়াই জিততে হবে” গান পরিবেশনার মাধ্যমে সমাবেশ সমাপ্তি ঘোষনা করা হয়।