হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম খুঁজতে তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
জাতীয় সংসদ ভবন থেকেঃ হাসপাতালগুলোর অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম খুঁজে বের করতে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের।সোমবার (১৫ জুন) জাতীয় সংসদে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ দাবি করেন। জিএম কাদের বলেন, বর্তমানে কোভিড-১৯ এর কারণে সারাবিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টি সকলের উদ্বেগের বিষয়। বাংলাদেশের যেকোনো মানুষকে এখন জিজ্ঞাসা করলে তারা এককথায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে গুরুত্ব দেয়ার কথা বলবে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি সম্পূরক বাজেটে তাদের কোনও সংশোধনী বাজেট নেই। তাদের সম্পূরক বাজেট দাবি করতে হয়নি। বাস্তবতা হলো তাদের বাজেট বরাদ্দের চেয়ে খরচ হয়েছে কম। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২৫ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা তাদের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তারা খরচ করতে পেয়েছে ২৩ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা। দুই হাজার ৪১ কোটি টাকা তাদের খরচ কমানো হয়েছে।তিনি বলেন, বাজেটে বরাদ্দ হ্রাস করাকে মিতব্যয়িতা বলার চেষ্টা হলেও প্রয়োজনীয় খরচ না করা হলে তা নেতিবাচক। আর এটা হয় সক্ষমতার অভাবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না। কর্তব্য পালনে আন্তরিকতার অভাব, দুর্নীতি ও দলাদলিতে ব্যস্ত থাকার কারণে এটা হয়। আর খরচ কম হচ্ছে মানে দুর্নীতির মাধ্যমে অপচয় হচ্ছে না সেটা নয়। খরচ যেটা হচ্ছে তার মধ্যেও অপচয়ের খবর আমরা শুনতে পাই।
আসন্ন অর্থবছরে স্বাস্থ্যখাতের বরাদ্দ অপ্রতুল দাবি করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, মানুষ স্বাভাবিকভাবে ধারণা করেছিল এবার স্বাস্থ্যখাতে বিরাট বাজেট দেয়া হবে। কিন্তু দেখা গেল সেখানে বরাদ্দ হয়েছে ২৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের তুলনায় তিন হাজার কোটি টাকার মতো বেশি। আমরা এটা বুঝি যারা বাজেট প্রণয়ন করেছেন তারা দেখেছেন খরচ করতে পারে না তাহলে বাজেট বাড়িয়ে লাভ কী হবে? আমার মনে হয় অর্থমন্ত্রীও এটা মনে করছেন। যার কারণে থোক বরাদ্দ (১০ হাজার কোটি টাকা) দিয়ে এটা রেখে দেয়ার চিন্তা করেছেন। করোনার কারণে এটা কাজে লাগানোর চিন্তা করছেন। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা যদি না থাকে নির্দেশনাহীন অর্থবরাদ্দ কতটা কার্যকর হবে তা সন্দেহের অবকাশ আছে।
তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরে (২০১৯-২০) স্বাস্থ্যখাতে ১০ হাজার কোটি টাকার মতো উন্নয়ন ব্যয় ছিল তা কমিয়ে সাত হাজার ৭০০ কোটি টাকার মতো করা হয়। তারা আড়াই হাজার কোটি টাকা খরচ করতে পারেনি। এর অর্থ হাসপাতালগুলোতে যথাযথ সুযোগসুবিধা দেয়া হয়নি। স্বাস্থ্যখাতেব বরাদ্দের চিত্র দেখলে মনে হয় উন্নয়নের দরকার ছিল কিনা তা তাদের সন্দেহ ছিল।
তার বক্তব্যে দেশের হাসপাতালগুলোর চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে নিজের নির্বাচনী এলাকার লালমনিরহাটের হাসপাতালের চিত্র তুলে ধরেন।বিরোধীদলীয় উপনেতা জানান, সেখানে হাসপাতালে ৩৯টি চিকিৎসক পদের মধ্যে ১১ জন কর্মরত, ৫৪ জন কর্মচারীর মধ্যে কর্মরত ৩৭ জন। এখানে প্রয়োজনীয় ২২ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মীর মধ্যে চারটি পদ আছে। হাসপাতালে ২২ জন ওয়ার্ডবয় ও সমান সংখ্যক আয়ার দরকার হলেও কোনো পদ নেই। নিরাপত্তাপ্রাহরীর পদ নেই। হাসপাতাল থেকে বিভিন্ন সময় মন্ত্রণালয়কে এটা জানালে কোনও সুরাহা হয়নি। হাসপাতালের যন্ত্রপাতির করুণচিত্রও তিনি তুলে ধরেন। দেশের সকল হাসপাতালের চিত্র একই ধরনের বলে দাবি করেন তিনি।