ছাতকে নৌ-পথে বাল্কহেডে ডাকাতি:সুকানির হাত পা বেঁধে নগদ টাকাসহ লাখ টাকার মালামাল লুটপাট
শামীম আহমদ তালুকদার
সত্যবাণী
সুনামগঞ্জ থেকেঃ সুনামগঞ্জের ছাতকে সুরমা নদীতে রইছ বডিং সংলগ্ন চৌধুরী ঘাটে একটি বাল্কহেড এর সুকানি ও স্টাফদের হাত, পা বেঁধে জিম্মি করে নগদ অর্থ, মোবাইল ও ডিজেলসহ প্রায় লাখ টাকার মালামাল লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।জানা যায়, এম নং-১৭৯৩৭ বাল্কহেড এর সুকানি হিসাবে বরিশাল জেলার পাতারহাটা থানার চর ডাইয়া গ্রামের আং লতিফ মাঝির ছেলে মো. মাহিদুল ইসলাম দেশের বিভিন্ন স্থানে মালামাল পরিবহন করে আসছেন। সম্প্রতি তিনি ও স্টাফ বাল্কহেড নিয়ে ছাতকে আসেন। গত বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারী) দিবাগত রাত রইছ বডিং সংলগ্ন চৌধুরী ঘাটে খালি বাল্কহেড ভিড়িয়ে স্টাফসহ ঘুমিয়ে পড়েন।
বাল্কহেড এর সুকানি মো. মাহিদুল ইসলামের অভিযোগ রাত আনুমানিক ৩ ঘটিকার দিকে অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জনের সংঘবন্ধ ডাকাত চক্র বাল্কহেড এর দরজার ছিটকারী ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে তাদের বেধড়ক মারপিট করা হয়। রামদা, ডেগার ইত্যাদি অস্ত্র দিয়ে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে তাদের জিম্মি করা হয়। এক পর্যায়ে মাফলার ও গামছা দিয়ে সুকানিসহ স্টাফদের হাত পা বেঁধে ফেলে ওই ডাকাত চক্র। এসময় ৬ টি মোবাইল সেট, ১০০ লিটার ডিজেল ও নগদ ৪ হাজার টাকা, জরুরী কাগজপত্রসহ প্রায় লাখ টাকা মুল্যের মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায় সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র।বাল্কহেড শ্রমিকদের অভিযোগ বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কতৃপক্ষ ছাতক নদী বন্দর হতে শুল্ক আদায়ের রশিদে সাড়ে ৪ হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও ছাতক পৌরসভার নামে পৃথক দুটি রশিদে ৫শত টাকা ও সাড়ে ৪ শত টাকা নেওয়া হয়। অপর দিকে বরিশাল থেকে ছাতক আসা পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে প্রায় ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছাতক অঞ্চলে বাল্কহেড জাহাজ মালামাল পরিবহন করে থাকে। এই কারনে শ্রমিকরা কোন প্রতিবাদ করতে পারেনা। প্রশাসনের কাছে ধন্না দিয়ে কোন সুফল পাওয়া যাচ্ছেনা। নৌ-পুলিশের অবহেলার কারনে এসব চুরি ডাকাতির ঘটনা ঘটছে বলে বাল্কহেড শ্রমিকদের অভিযোগ।
এ বিষয়ে বাল্কহেড এর সুকানি মো. মাহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি। শুধু রাতেই না, দিনেও ডাকাতি হচ্ছে। ছাতক থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।বাংলাদেশ ট্রলার বাল্কহেড শ্রমিক ইউনিয়ন রেজি: নং-৪০৪৩ ছাতক শাখার সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম ইয়াছিন বলেন, ছাতক নৌ-পথে লুকোচুরি করে এখনো চাঁদাবাজি চলছে। বিআইডব্লিউটিএ বেপরোয়াভাবে সাড়ে ৪ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করছে।বাংলাদেশ ট্রলার বাল্কহেড শ্রমিক ইউনিয়ন রেজি: নং-৪০৪৩ কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক আনিছুর রহমান মাস্টার বলেন, বল্কহেড শ্রমিকদের আন্দোলন সংগ্রামের ফসল নৌ-পুলিশ সৃৃষ্টি। কিন্ত তারা শুধুু দিনের বেলা টাকা নেয়। নৌ-পুলিশ তাদের দায়িত্ব পালনের ধারে কাছে নেই। তিনি আরো বলেন, নৌ-পুলিশের গেজেটে উল্লেখ রয়েছে যদি নৌ-পথে মামলা বা কোন সমস্য সৃষ্টি হয় সে ক্ষেত্রে স্থানীয় সংস্থা, সংগঠন ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে এই অন্যায় অপরাধগুলো বের করে আনা। ছাতকের কোন সংস্থা বা সংগঠন যদি নৌ-পুলিশকে সহযোগীতা করতেন ও নৌ-পুলিশ যদি তাদেরকে সহযোগীতা করতো তাহলে কিন্ত সহজেই অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা যেতো।
ছাতক পৌর সভার মেয়র (ভারপ্রাপ্ত) তাপস চৌধুরীর সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে তিনি ব্যস্ত থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কতৃপক্ষ সুনামগঞ্জ নদী বন্দরের পোর্ট অফিসার সুব্রতর এর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে পাওয়া যায়নি। ছাতক নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আবু কাওছার বলেন, নৌ-পথে চাঁদাবাজি বন্ধ রয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডাকাতির ঘটনাটি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি, তবে খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি। ছাতক থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, এ ধরনের কোন ঘটনা আমার জানা নেই।