সাম্প্রদায়িক অপশক্তি বিনাশে সরকার বদ্ধপরিকর : ড. হাছান মাহমুদ

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

ঢাকাঃ তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড.হাছান মাহমুদ বলেছেন,বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সরকার দেশে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে সমূলে বিনাশে বদ্ধপরিকর।তিনি বলেন, যারা ভোটের সময় ভারতবিরোধী,হিন্দুবিরোধী শ্লোগান দেয়, তারাই সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়াতে পরিকল্পিতভাবে নানা অঘটন ঘটানোর অপচেষ্টা লিপ্ত। গত দুর্গাপূজার সময়ও তারা সেই অপচেষ্টা চালিয়েছে।সেসময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যেভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে দাঁড়িয়েছিল,সবসময়ই তারা সেভাবেই পাশে দাঁড়াবে। সরকার এই অপশক্তি নির্মূলে বদ্ধপরিকর।

মন্ত্রী শুক্রবার সকালে রাজধানীর চকবাজারে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন।ড. হাছান বলেন, হাজার বছর ধরে এই ভূখন্ডে বসবাসকারী অধিবাসীদেরকে ‘শত্রু’ আখ্যা দিয়ে যে ‘শত্রুসম্পত্তি আইন’ করা হয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই তা সংস্কার করা হয়েছে, সংবিধানকেও মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে।তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সকল সম্প্রদায়ের মানুষের মিলিত রক্তস্রোতে যেমন বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, তেমনি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় আমরা দেশকে ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছুবো।

মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি শৈলেন্দ্রনাথ মজুমদারের সভাপতিত্বে ও অ্যাডভোকেট কিশোর রঞ্জন মন্ডলের পরিচালনায় সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন শিকদার, আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল এমপি, পংকজ দেবনাথ এমপি, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিক, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার প্রমুখ এসময় বক্তব্য দেন।
পরে, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির সাবেক সভাপতি এইচ টি ইমামের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে তার সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তার আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া করেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এসময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, প্রাজ্ঞ ও বিজ্ঞ নেতা এইচ টি ইমামের চলে যাওয়া দেশ ও আওয়ামী লীগের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।বিকেলে ঢাকার বাসাবোতে আন্তর্জাতিক ধর্মরাজিক বৌদ্ধমহাবিহারে প্রয়াত সংঘনায়ক শুদ্ধানন্দ মহাথেরোর জাতীয় অন্তেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দেন মন্ত্রী। সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির নাট্যশালা মিলনায়তনে বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরাম আয়োজিত ষোড়শ আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য ও মুক্ত চলচ্চিত্র উৎসব সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিজয়ী চলচ্চিত্রকারদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়ার প্রাক্কালে দেয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘জাতি হিসেবে ভাষা আর সংস্কৃতি দু’টি আমাদের গর্বের বিষয়। বাঙালিরা মেধাবীও। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার পথে আমরা আজ মধ্যম আয়ের দেশ ও উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলোর সামনে অনন্য উদাহরণ।
স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণে তরুণদের এগিয়ে আসাকে সাধুবাদ জানিয়ে ও তরুণ সৃষ্টিশীল প্রতিভা বিকাশে সংস্কৃতি চর্চার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশময় সাংস্কৃতিক বিপ্লব হলে জঙ্গি-মাদকাসক্তি সব ভেসে যেতো।উৎসব আয়োজক পরিষদের সভাপতি নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, উৎসব পরিচালক সৈয়দ ইমরান হোসাইন কিরমানী, চলচ্চিত্রকার মানজারে হাসীন মুরাদ, জাহিদুর রহিম অঞ্জন, জুনায়েদ আহমেদ হালিম, জহিরুল ইসলাম কচি প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।মুক্ত চলচ্চিত্র, মুক্ত প্রকাশ’ শ্লোগান নিয়ে ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ মার্চ পর্যন্ত প্রদর্শিত ১৩০টি দেশের ৪ শতাধিক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে তুরস্কের ‘আই এম এফ্রেইড টু ফরগেট ইয়োর ফেইস’ ও ‘আল-সিট’ এবং বাংলাদেশের ‘চক্রব্যূহ’ তিনটিকে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার এবং বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা তানভীর মোকাম্মেল ও মানজারে হাসীন মুরাদকে ‘হীরালাল সেন আজীবন সম্মাননা পুরস্কারে’ ভূষিত করেন অতিথিবৃন্দ।

You might also like