ছাতকে মাজার মাহফিলের শিরনী বাঁশবাগানে-চরম উত্তেজনা

শামীম আহমদ তালুকদার
সত্যবাণী

সুনামগঞ্জ থেকেঃ সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার খুরমা উত্তর ইউনিয়নের রাজারগাঁও গ্রামে গুলমান শাহ (র:) মাজারে ইসালে সাওয়াব মাহফিলে ৫শত ব্যাগ শিরনি পরিত্যাক্ত স্থানে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় দু’পক্ষের মধ্যে পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।জানা যায়, গত ২৩ ফেব্রুয়ারী মাজারে ইসালে সাওয়াব মাহফিল অনুষ্টিত হয়। এই মাহফিলে সুষ্ট ভাবে শিরনী বিতরনের জন্য মাহফিলের আগে গ্রামের দুই পঞ্চায়েতের সমন্নয়ে এক সভা অনুষ্টিত হয়। সভায় শিরনী বিতরণের জন্য বিতরনকারীদের একটি তালিকা করার সিন্ধান্ত হয়। তালিকা তৈরি করার জন্য গ্রামের মসজিদে যান তাজ উদ্দিন, এনাম, হাবিবুল্লাহসহকয়েকজন।

অভিযোগ উঠেছে তালিকা প্রণয়ন করতে বাঁধা প্রদান করেন একই গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর আলমসহ কয়েকজন। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে বাক বিত-া হয়। শেষে মুরব্বিয়ানদের সমন্নয়ে জাহাঙ্গীর আলমকে শিরনী বিতরনকারীদের তালিকা করতে বলা হয়।  ভুক্তভোগীদের অভিযোগ জাহাঙ্গীর আলম শিরনী বিতরন না করে মসজিদের বারান্দায় তালাবদ্ধ করে রেখে দেন। মসজিদের বারান্দায় ঔই শিরনী নষ্ট হয়ে দুর্র্গন্ধ বের হয়। স্থানীয় ইউপি সদস্য খলিলুর রহমান ও মুরব্বিয়ানদের মধ্যস্থ্যতায় শিরনী বের করা হয়। কিন্ত ভুক্তভোগীদের অভিযোগ নষ্ট হওয়া ওই শিরনী বের করার সময়ও বাঁধা প্রদান করেন সাবুল মিয়া। শেষে মুরব্বিয়ানরা অনেক আনয় বিনয়ের করে পরিত্যাক্ত একটি জায়গায় ফেলে দেন ওই শিরনী। এর পর থেকে বিভিন্নভাবে তাদের হুমকি ধমকি প্রদর্শন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।এ ঘটনায় গত ২৫ ফেব্রুয়ারী রাজারগাঁও গ্রামের মৃত. আশকর আলীর ছেলে এনাম উদ্দিন বাদী হয়ে  ছাতক থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। এতে একই গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম, লায়েক মিয়া, আমির, জমির, তোফায়েল আহমদসহ ১১জনকে অভিযুক্ত করা হয়। অভিযুগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ছাতক থানার এসআই আসাদুজ্জামান।

এ বিষয়ে রাজাগাঁও গ্রামের তাজ উদ্দিন বলেন, ওয়াজ মাহফিলে শিরনীর জন্য এনাম উদ্দিন একটি গরু দান করেন। কিন্ত গরুটি এনাম উদ্দিনের নানা বাড়ীতে জবাহ করার কারনে মসজিদের বারান্দায় তারা শিরনী তালাবদ্ধ করে রাখেন। এনাম উদ্দিন বলেন, অত্যন্ত দু:খ জনক ঘটনা। আমার নানা বাড়িতে গরুটি জবাহ করায় শিরনী বিতরন না করে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। এতগুলো শিরনী নষ্ট হয়ে গেলো।  এখন আমাদেরকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধমকি দেওয়া হচ্ছে। আমি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করি।এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলম এর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পুরান মৈশাপুর গ্রামের লাল মিয়া বলেন, একজন ওলির মাজারে শিরনী বিতরনকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে সৃষ্ট ঘটনা দু:খ জনক।  এগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাড়া হচ্ছে। যা গ্রাম ও এলাকার জন্য মানহানিকর। তিনি উভপক্ষকে সহনশীল হওয়ার আহবান জানান। এবং বিষয়টি সমাধানের জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।এ বিষয়ে খুরমা উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য খলিলুর রহমান বলেন, বিষয়টি আপোষ মিমাংশা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। খুরমা উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে রিসিব না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।এ বিষয়ে ছাতক থানার এসআই আসাদ্দুজ্জামান অভিযোগ ও ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সত্যতা স্বীকার করেছেন। ছাতক থানার ওসি মাহবুবুর রহমান সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যস্ত থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

You might also like