দিরাইয়ে ছাএলীগ নামধারী সন্ত্রাসী সুজন হাজরা ও হৃদয় হোসেন গংদের হামলায় গুরুতর আহত-০১
শামীম আহমদ তালুকদার
সত্যবাণী
সুনামগঞ্জ থেকেঃ সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার চরনারচর ইউনিয়নের এলংজুরী গ্রামের মাঠে হিন্দু সম্প্রদায়ের হরিনাম সংকীর্তণ অনুষ্ঠানে এক কিশোরীকে ইভটিজিং করার সময় গণধোলাইয়ের শিকার হন ছাত্রলীগ নামধারী মাদক সেবনকারী সুজন হাজরা ভূট্রো, হৃদয় হোসেন গংরা। ঘটনাটি ঘটেছিল গত ১৪ মার্চ রাতে এলংজুরী গ্রামের মাঠে হরিনাম সংকীর্তন অনুষ্ঠানে।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ই মার্চ এলংজুরী গ্রামের মাঠে রাতে হরিণাম সংকীর্তণ অনুষ্ঠান চলাকালে ছাত্রলীগ নামধারী সুজন হাজরা, হৃদয় হোসেন গংরা মিলে সেখানে গিয়ে এক কিশোরীকে ইভটিজিংয়ের চেষ্টা চালায়। এ সময় উপস্থিত বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা ভক্তবৃন্দরা সুজন হাজরা ও হৃদয় হোসেন গংদের ইভটিজিং এর বিষয়টি নজরে আসলে প্রথমে তাদেরকে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করে চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু সন্ত্রাসী সুজন হাজরা, সন্দীপ দাস, সন্ত্রাসী হৃদয় হোসেনসহ আরো কয়েকজন উপস্থিত লোকজনের বাধা নিষেধ উপেক্ষা করে পূনরায় ঐ কিশোরীকে উত্যক্ত করার চেষ্টাকালে ভক্তরা তাদের গণধোলাই দিয়ে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করতে বাধ্য করেন।
অভিযোগ উঠেছে এই ঘটনার জেরে গতকাল(বৃহস্পতিবার ১৭ই মার্চ) রাতে এই গণধোলাইয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাএলীগ নামধারী ইভটেজার সুজন হাজরা ভূট্রো, হৃদয় হোসেনের সরাসরি নির্দেশে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সন্দীপ দাস,নিতু রায়,অনিক দাস ও সমীর সহ ১০/১২জনের ভাড়া করা সন্ত্রাসীরা মিলে পেরুয়া গ্রামের বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়ির সোজা রাস্তার পাশে পূর্ব পরিকল্পিতভাব দেশীয় অস্ত্র লাঠিসোটা নিয়ে অবস্থান নেন। ঐ সময় এলংজুরী গ্রামের এক নিরীহ ব্যাক্তি শ্যামারচর এলাকার তার এক বড়ভাইয়ের মোটর সাইকেলে করে শ্যামারচর বাজার হতে নিজ বাড়ি এলংজুরী ফেরার পথে সন্ত্রাসীরা মোটর সাইকেলের গতিরোধ করে নিরীহ ব্যক্তিটির উপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে অর্তকিতে হামলা করে। সন্ত্রাসীরা তাকে বেদড়ক মারপিঠ করে রক্তাক্ত করে মাটিতে ফেলে তার পকেটে থাকা টাকাপয়সা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় তার চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে এসে তাকে উদ্ধার করে শ্যামারচর বাজারে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। আহত ব্যক্তিটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
সুজন হাজরা, সন্ত্রাসী হৃদয় হোসেন গংরা ছাএলীগের নাম ব্যবহার করে শ্যামারচর বাজার সহ আশপাশে দাম্ভিকতা দেখিয়ে নানান অপকর্মসহ এলাকার নিরীহ মানুষজনের উপর একের পর এক হামলা,চুরির ঘটনা ঘটিয়ে নির্বিঘেœ চলাচল করলেও তার বিরুদ্ধে আইন শৃংখলা বাহিনী আজো কোন ব্যবস্থা নেয়নি। সুজন হাজরার মতো নামধারীরা ঐতিহ্যবাহি ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাএলীগের নাম ব্যবহারকার করে ইভটিজিং ও চুরির মতো অনেক অপকর্ম করে দাপটের সাথে এলাকায় চলাচল করছে। তার মতো গুটি কয়েকজন ছাত্রলীগ নামধারী সুজন হাজরাই বর্তমান শেখ হাসিনার সরকারের অনেক অর্জন ও অনেক উন্নয়নকে ম্লান করে দিচ্ছে। এই সমস্ত লেবাসদারীদের বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা না নিলে আগামীতে ওরা দলের জন্য মারাত্মক সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে এমনটাই মনে করছেন এলাকার সাধারন মানুষজন। ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ চরনারচর ইউনিয়নের ললুয়ারচর গ্রামের কামেশ^র হাজরার ছেলে ছাত্রলীগ নামধারী বখাটে সুজন হাজরা ভূট্রো(২২),হাসনাবাজ গ্রামের মো. আবুল মিয়ার ছেলে সন্ত্রাসী মো. হৃদয় হোসেন(২০),শ্যামারচর গ্রামের নিরদ দাসের ছেলে সন্দীপ দাস(২০),পেরুয়া গ্রামের নির্মল রায়ের ছেলে নিতু রায়(২০),শ্যামারচরের সমীর,অরুণ দাসের ছেলে অনিক দাস(২২)সহ অজ্ঞাতনামা মোট ১০/১২জন হামলায় অংশ নেন।
এ ব্যাপারে হামলাকারী ছাত্রলীগ নামধারী সুজন হাজরা ও হৃদয় হোসেনের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তারা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি দিপংঙ্কর কান্তি দে’র গ্রুপের লোকজন হিসেবে দাবী করেন। তারা এলংজুরী গ্রামের এক নিরীহ ব্যক্তির উপর হামলার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আমাদের সাথে গত ৩/৪ দিন পূর্বে এলংজুরী কীর্তন অনুষ্ঠানে অনেক লোকজন খারাপ আচরণ করেছে বলেই আমরা ঐ গ্রামের একজনকে পেয়ে কিছুটা হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি দিপংঙ্কর কান্তি দে জানান, আমাদের ঐহিত্যবাহি সংগঠনের নাম ব্যবহার করে কোন অনৈতিক কাজ করা যাবেনা। যারা নাম ব্যবহার করে এসব করবে সুনিদিষ্ট অভিযোগ ফেলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে চরনারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পরিতোষ রায় জানান, বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য মিটিংয়ে বসেছি দেখি বিষয়টিকে সমাধান করা যায় কিনা। এ ব্যাপারে ঘটনাস্থলে উপস্থিত দিরাই থানার এস আই জাহাঙ্গীর আলম জানান, এমন একটি ঘটনা শুনেই আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। দেখা যাক আমরা এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলেছি বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।