ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আ্যলামনাই ইন দ্য ইউকের তিনমাসব্যাপি দ্বৈত শতবার্ষিকী পালনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
লন্ডন: ১লা জুলাই ১৯২১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করা একদা প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্ম শত বার্ষিকী যৌথভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ইন দ্য ইউকে আগামী তিন মাসব্যাপি বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। তারই শুভ সূচনা ও উদ্বোধন করা হয় গত ১ লা জুলাই শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠার দিনে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী ও সমাবেশের মাধ্যমে। সংগঠনের সভাপতি বীর মুক্তিযাদ্ধা দেওয়ান গৌস সুলতান এবং সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেনের নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য এ র্যালীটি বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে, গান গেয়ে ব্রিকলেন ঘুরে আলতাব আলী পার্কের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। স্থানীয় ও পথচারীরা বিভিন্ন ধ্বনি করে হাত নেড়ে র্যালীর প্রতি সমর্থন জানান।
র্যালীতে অংশগ্রহণ করেন সর্ব জনাব এস বি ফারুক, আব্দুর রাকীব, মারুফ আহমেদ চৌধুরী, ছহুল আহমেদ, প্রশান্ত পুরাকায়স্ত বিইএম, কামরুল হাসান, আবুল কালাম, সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান, আসহাব বেগ, সৈয়দ এনামুল ইসলাম, এ বাসিত চৌধুরী কামরান, মাহারুন মালা, মিজানুর রহমান, এমকে মিলন, সৈয়দ জাফর, রীপা রাকিব, ফখরুল ইসলাম মিসবাহ, কাজী কল্পনা, সৈয়দ ইকবাল, সামিনা দেওয়ান, বেলাল রশীদ, সুপ্রভা সিদ্দীকি, শাহ আকবার আলী, শাহরিয়ার হোসেন, নাজমুল হোসেন সহ বিপুল সংখ্যক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ছাত্রীবৃন্দ।
আলতাব আলী পার্কের সমাবেশে এক সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা বাদ্যের তালে তালে গান-নাচ করেন। এতে শহীদ মিনার ও পার্কে আগত দর্শনার্থীরাও যোগ দিয়ে উল্লাস করেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে তিন মাস ব্যাপী কর্মসূচীর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন সংগঠনের সভাপতি দেওয়ান গৌস সুলতান।
উল্লেখ্য গত ৩০ জুন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আ্যলামনাই ইন দ্য ইউকে তিন মাসব্যাপী অনুষ্ঠানের বিস্তারিত সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ইন দ্য ইউকে হলো যুক্তরাজ্যে বসবাসরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সংগঠন। এ সংগঠনের যাত্রা শুরু ২০১৭ সালে। সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক, অসাম্প্রদায়িক, অলাভজনক এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধসম্পন্ন এ সংগঠনটি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের স্মৃতিজাগানিয়া সোনালী দিন, মধুমাখা রোমাঞ্চ আর আবেগমাখা মুহূর্তসমূহ তথা আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাস রোমন্থনের এক অনুভূতিপ্রবন স্বপ্নীল প্রয়াস। সেই সাথে বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও স্বাধীনতার গৌরবোজ্জ্বল অর্জনকে ধারন, লালন ও বহন করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে আমাদের এই প্রতিষ্ঠান। এ সব অতীত গাঁথার পাশাপাশি ভবিষ্যৎ সম্পর্কেও আমাদের কিছু চিন্তা-চেতনা রয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘আমরা আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে, বিনোদনসহ অব্যাহত বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি ইতোমধ্যে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে চুক্তি করে ১৫ লক্ষ টাকার একটি চিরস্থায়ী আমানত সৃষ্টি করেছি – একটি শিক্ষা তহবিল গঠন করেছি। এই আমানত-তহবিল থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ হতে প্রতি বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ৬ জন মেধাবী কিন্তু অর্থনৈতিকভাবে অনগ্রসর শিক্ষার্থীকে বার্ষিক ১২ হাজার টাকা করে শিক্ষা-বৃত্তি দেওয়া হবে। এই সহায়তা অনাদিকাল পর্যন্ত চলবে। এ খাতে আমাদের আরও অর্থায়নের প্রক্রিয়া ও পরিকল্পনা চলমান রয়েছে।’
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘আপনারা জানেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শতবর্ষ অতিক্রম করেছে ২০২০ সালে। আমাদের জাতির সামাজিক, রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ইতিহাসে তথা রাষ্ট্র বিনির্মানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান অপরিসীম। ইতোমধ্যে আমরা জাতির জনকের শতবর্ষও পেরিয়ে এসেছি। বিশেষতঃ করোনাকালীন বিধিনিষেধ, সীমাবদ্ধতা, নিয়ন্ত্রণ ও অন্যান্য আনুষাঙ্গিক কারণে আমাদের জাতীয় ইতিহাসের এই দুটো মহান অর্জন তথা ঐতিহ্য আমরা তাৎক্ষণিকভাবে পালন করতে পারিনি। তাই আমাদের বর্তমান (তথা তৃতীয়) কার্যকরী পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, ইতিহাসের এ দুটো ঐতিহ্যকে আমরা একত্রে পালন করবো। সে লক্ষ্যে আমরা এ অনুষ্ঠানের নাম দিয়েছি *”দ্বৈত-শতবার্ষিকী”* বা *Duel Centenary*। এ অনুষ্ঠানের ব্যাপ্তি হবে আগামী জুলাই হতে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাস।’
তিনমাসব্যাপী অনুষ্ঠানের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলা হয়, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরুর দিন অর্থাৎ ১লা জুলাই পূর্ব লন্ডনের ব্রীকলেইন এলাকায় একটি র্যালী ও আলতাব আলী পার্কে সমাবেশের মাধ্যমে আমরা এই দ্বৈত শতবার্ষিকী উদযাপনের উদ্বোধন করলাম। অনুষ্ঠানমালায় আরও থাকবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বঙ্গবন্ধুর উপর আন্তর্জাতিক মানের পৃথক পৃথক ওয়েবিনার। এ সব আলোচনায় বাংলাদেশের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের অধ্যাপক, অর্থনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, কূটনীতিক ও মানবাধিকার আন্দলনে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গ যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখবেন বলে আশা করছি। এ সবের আরো বিস্তারিত আগামীতে জানান হবে। এসব ছাড়াও থাকবে সদস্য ও তাদের পরিবারদের জন্যে কিছু বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ড ও অনুষ্ঠান। শেষ পর্যায়ে ১১ই সেপ্টেম্বর বড় একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের এ কর্মসূচীর সমাপ্তি হবে। আমরা আশা করছি এ সমাপ্তি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের অত্যন্ত উচ্চ পর্যায়ের একাধিক অতিথি যোগ দেবেন, যাদের বেশীরভাগই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী।’