চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই সিলেটে চরম ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ সারা বিশ্বে জ্বালানী তেলের সংকট দেখা দেয়ায় দেশেও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে দেশজুড়ে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং চলমান রয়েছে। গত ১৯ জুলাই মঙ্গলবার থেকে সিলেটেও এ পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে।এলাকাভিত্তিক দেড় থেকে দুই ঘন্টা লোডশেডিংয়ের কথা থাকলেও সিলেটে বিদ্যুৎ থাকে না ছয় থেকে আট ঘন্টা। এমনকি বাণিজ্যিক এলাকা জিন্দাবাজার, বন্দর, কালিঘাটেও বিদ্যুৎ থাকে না প্রতিদিন ৭-৮ ঘন্টা। বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নিয়মে চলছে হেরফের। উঠেছে চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুৎ না মেলার অভিযোগও।

গ্রাহকের চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুৎ না মেলায় ঘোষিত লোডশেডিংয়ের সূচি ঠিক রাখতে পারছে না বিদ্যুৎ বিভাগ। ফলে গ্রাহকদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। কর্মকর্তারা বলছেন, চাহিদার বিপরীতে অর্ধেক চেয়েও কম বিদ্যুৎ পাওয়ায় সরবরাহ ঠিক রাখা যাচ্ছে না। ফলে নিত্যনৈমিত্তিক সূচির পরিবর্তন আনতে হচ্ছে।গ্রাহকদের অভিযোগ, ২০ জুলাই বুধবার থেকে সময়মতো লোডশেডিং মানা হচ্ছে না। কোথাও কোথাও ৪ ঘণ্টারও বেশি সময় পর্যন্ত লোডশেডিং হচ্ছে। নগরীর ৪টি ডিভিশনে দফায় দফায় লোডশেডিং করা হয়েছে।উপজেলার গ্রামীণ জনপদে পল্লী বিদ্যুতের আওতাধীন এলাকাগুলোয় লোডশেডিংয়ের তীব্রতা খুব বেশি, গ্রাহকরা প্রতি মুহূর্তে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। দিন কিংবা রাত, সমানতালে লোডশেডিং চলছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টাও ঠিকমতো বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। রাতে প্রচ- গরমে গ্রামীণ জনপদের সাধারণ মানুষদের অবস্থা নাজেহাল।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেটের ১৩টি উপজেলায় লোডশেডিংয়ের অবস্থা একই। দিন-রাত মিলিয়ে বেশিরভাগ সময়ই বিদ্যুৎ থাকছে না। ফলে বাসাবাড়ির ফ্রিজে থাকা খাবার নষ্ট হচ্ছে, ছোট ছোট শিশুরা গরমে কষ্ট পাচ্ছে।বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ-১’র নির্বাহী প্রকৌশলী ফজলুল করিমের দেয়া তথ্য অনুসারে, আগামী ২৪ জুলাই পর্যন্ত নগরের বেশিরভাগ এলাকায় সম্ভাব্য ৪ ঘণ্টা করে লোডশেডিং হবে।

ডিভিশন-২’র নির্বাহী প্রকৌশলী শামস-ই আরেফিন জানান, তার অধীনস্থ এলাকায় ৬০ হাজার গ্রাহকের জন্য ৩৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন। সেখানে পেয়েছেন মাত্র ১৬ মেগাওয়াট। অর্থাৎ চাহিদার ৪৫ ভাগ বরাদ্দ পাওয়া গেছে। আর ৫৫ ভাগ লোডশেডিং করতে হচ্ছে। ফলে এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবাহের পর আরও এক ঘণ্টা বন্ধ রাখা হচ্ছে। নতুন করে বিদ্যুৎ সরবরাহ না মিললে এভাবে চালাতে হবে। শনিবারও সব এলাকায় একই অবস্থা।সিলেটের সব কয়টি বিতরণ অঞ্চলে বরাদ্দ অর্ধেকের কম পাওয়া গেছে, যে কারণে লোডশেডিং বেশি হচ্ছে। একই অবস্থা ডিভিশন-৩ ও ৪ এর আওতাধীন এলাকায়ও। ফলে লোডশেডিংয়ের কোনো রোস্টার থাকছে না।তিনি আরও বলেন, ঘাটতি বেশি থাকায় লোডশেডিংয়ে সময়ের ব্যতয় ঘটছে। ঘাটতি কম হলে লোডশেডিংয়ের মাত্রা কমবে।পিডিবি সিলেট অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদের বলেন, আমাদের অধীনে গ্রাহক আছেন ৪ লাখ ৮৫ হাজার। আর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহক আছেন প্রায় ১৯ লাখ।পিডিবি ও পল্লী বিদ্যুৎ মিলিয়ে চাহিদা প্রায় সাড়ে ৫০০ মেগাওয়াটের।এরমধ্যে শনিবার জেলায় চাহিদা ছিল ১৭৫ মেগাওয়াট। তার স্থলে পল্লী বিদ্যুৎসহ গ্রিড থেকে সরবরাহ করা হয়েছে ৮৭ মেগাওয়াট। এরমধ্যে পল্লী বিদ্যুতের ২৮ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে ১৬ মেগাওয়াট দেয়া হয়েছে। ফলে ৮৮ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে হচ্ছে। এ কারণেই জন ভোগান্তি বেশি হচ্ছে।

You might also like