সিলেটে ফের আন্দোলনে চা শ্রমিকরা বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ দৈনিক মজুরী ১৪৫ টাকা প্রত্যাখ্যান করে ন্যূনতম ৩শ’ টাকা করার দাবিতে আবারও আন্দোলনে নেমেছে সিলেটের চা শ্রমিকরা। আন্দোলনের একপর্যায়ে তারা সিলেট বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করে মিছিল ও সমাবেশ করেন। ২১ আগষ্ট রোববার সকাল ১১ টা থেকে সিলেট ভ্যালির চা শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে ফের আন্দোলন শুরু করেন। ফের আন্দোলন শুরুর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন চা শ্রমিকের সন্তান ও আন্দোলনকারী দেবাশীষ গোয়ালা। দুপুর ১টা পর্যন্ত বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করে তারা নানা ধরনের শ্লোগান দিতে থাকেনা।দেবাশীষ গোয়ালা গণমাধ্যমকে বলেন, চা বাগান মালিকরা আমাদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ করছেন। ১২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা করে আমাদেরকে দয়া দেখাচ্ছেন। কিন্তু আমরা কারও দয়া চাইনা। আমরা আমাদের ন্যায্য দাবী চাই। বর্তমান যুগে কোথাও এই মজুরি নাই। আন্দোলন প্রত্যাহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যেখানে শ্রমিকের অধিকার বাস্তবায়ন হয়নি, সেখানে প্রত্যাহার নয় প্রত্যাখ্যান হওয়া জরুরি। তাই আমরা আমাদের দাবীতে অনড় অবস্থায় আবারও মাঠে নেমেছি।

আন্দোলনরত আরেক চা শ্রমিক বিষ্ণু লোহার বলেন, কতিপয় নেতাকে বশে এনে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা একধরনের প্রতারণা। আমরা ১৪৫ টাকা মজুরি নয় ৩০০ টাকা মজুরির বাস্তবায়ন চাই।প্রসঙ্গত, ২০ আগস্ট শনিবার বিকেলে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের অফিসে চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে চা-শ্রমিকদের নতুন মজুরি ১৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। পরে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে শ্রমিকদের চলমান কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।এরআগে চলতি বছরের জুন মাসে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন ও মালিকপক্ষের সংগঠন বাংলাদেশ চা সংসদের বৈঠক হয়। সেখানে শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার প্রস্তাব দেন শ্রমিক নেতারা। কিন্তু মালিকপক্ষ ১৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩৪ টাকা মজুরির প্রস্তাব দেয়। যে কারণে শ্রমিক নেতারা তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর আরও এক মাস পার হয়ে যায়, মালিকপক্ষ কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। এর প্রতিবাদে ৯-১২ আগস্ট পর্যন্ত টানা চার দিন প্রতিদিন ২ ঘণ্টা করে ধর্মঘট পালন করেন চা-শ্রমিকরা। তারপরও মালিকপক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো কথা না বলায় ১৩ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের সব চা-বাগানে অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শুরু করেন শ্রমিকরা।