সাংবাদিক ফতেহ ওসমানী হত্যা মামলায় ৬ জনের যাবজ্জীবন

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ সিলেটে সাংবাদিক ফতেহ ওসমানী হত্যা মামালায় ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছেন আদালত। এছাড়া এ রায়ে ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদ- দেয়া হয় আসামিদের। ৩১ অক্টোবর সোমবার সকাল ১১টার দিকে এ রায় ঘোষণা করেন সিলেটের বিশেষ জেলা জজ ও জননিরাপত্তা বিঘœকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস। আদালতের বেঞ্চ সহকারী এস এম আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।রায় ঘোষণার সময় দ-িত মো. কাশেম আলী কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। তিনি জৈন্তাপুর থানার আদর্শগ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে। এছাড়া অপর আসামি সাদ্দাম, সুমন, স্বপন, রাসেল ও শাহ আলম পলাতক রয়েছেন।

২০১০ সালের ১৮ এপ্রিল রাতে সাংবাদিক ফতেহ ওসমানী তার বন্ধু আব্দুল মালেককে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে বাসায় ফিরছিলেন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে নগরির শাহী ঈদগাহস্থ শাহ মীর (রহঃ) মাজারের সামনের রাস্তায় পৌঁছুলে ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন। ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে ফতেহ ওসমানী ও তার বন্ধু আব্দুল মালেক আহত হন। ২৮ এপ্রিল রাতে ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।এ ঘটনায় নিহত ফতেহ্ ওসমানীর ছোট ভাই আল-ফরহাদ মতিন বাদী হয়ে ছিনতাইকারী ও সন্ত্রাসী সাদ্দাম ওরফে টাইগার সাদ্দাম ও কাশেমের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৮/১০ জনকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন। ফতেহ ওসমানী মারা যাওয়ার পর পুলিশ মামলাটিতে ৩৯৬ ধারাটি যুক্ত করে। পরে ২ দফা তদন্ত শেষে প্রথমে কোতোয়ালি থানার এসআই মোজাহারুল ইসলাম ও পরে এয়ারপোর্ট থানার এসআই আব্দুল আলীম মামলার সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন।
চার্জশিট যাদের নামে করা হয়েছে, তারা হলেন- সুনামগঞ্জ সদর থানার মঙ্গলকাটা বাজার এলাকার দুর্লভপুর গ্রামের হানিফ মিয়ার ছেলে বর্তমানে নগরির ইলাশকান্দি আলতু মিয়ার কলোনির বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেন ওরফে টাইগার সাদ্দাম (২২), জৈন্তাপুর থানার আদর্শগ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে মো. কাশেম আলী (২২), সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভরপুর থানার আমতলী গ্রামের রাজন মিয়ার ছেলে বর্তমানে শাহপরাণ থানার টুলটিকর এলাকার বাসিন্দা সুমন (২২), নগরির আরামবাগ ১৩ নম্বর বাসার সিরাজ মিয়ার ছেলে স্বপন মিয়া (২৫), কিশোরগঞ্জ সদর থানার নগুয়া গ্রামের আজিজুর রহমান ওরফে আব্দুল আজিজের ছেলে বর্তমানে শাহপরাণ থানার বটেরতল বাবু মিয়ার কলোনির বাসিন্দা মো. ফয়ছল আহমদ রাসেল (২৩) ও সুনামগঞ্জ জেলার দিরাইয়ের ভাটিপাড়ার (গণকা) জাহান নুরের ছেলে বর্তমানে উত্তর বালুচর আল-ইসলাহর বাসিন্দা শাহ আলম (২৪)।ওই আসামিদের মধ্যে ৪ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরমধ্যে কাশেম আলী ও সুমন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। এরপর উল্লেখিত আসামিদেরকে অভিযুক্ত করে ২০১৩ সালের ২১মে চার্জ গঠন করে আদালত এ মামলার বিচারকার্য শুরু করেন। মামলায় ২৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ২২ জন সাক্ষী সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এ রায় ঘোষণা করা হয়।সিলেট বিশেষ জেলা জজ ও জননিরাপত্তা বিঘœকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট মো. মফুর আলী এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

You might also like