ছাতক-সিলেট রেললাইন পরিদর্শনে রেল ও এডিবি’র প্রতিনিধি দল

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ ছাতক-সিলেট রেললাইন সংস্কার ও পুনরায় সচলের লক্ষ্যে সরেজমিন পরিদর্শনে ছাতকে পরিভ্রমণ করেছেন রেল ও এশিয়ান ডেভেলপম্যান্ট ব্যাংক (এডিবি)’র প্রতিনিধি দল। ছাতক-সিলেট রেললাইন আধুনিকায়ন করার গৃহীত পরিকল্পনার কথা জানালেন প্রতিনিধি দলের কর্মকর্তারা। সব ঠিকঠাক থাকলে ২০২৩ সালের জুন-জুলাই মাসের মধ্যে ছাতক-সিলেট রেল লাইনের আধুনিকায়নের কাজ শুরু হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রতিনিধি দলের প্রধান সিলেট-শায়েস্তাগঞ্জ রেললাইনের দায়িত্বে থাকা সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসাইন।ছাতক থেকে সংবাদদাতা জানান, গতকাল সন্ধ্যায় ছাতকবাজার রেলওয়ে স্টেশনে জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সুধীজনদের সাথে মতবিনিময়কালে ছাতক-সিলেট রেললাইন পুনরায় চালু করার বিষয়ে এসব সম্ভাবনার কথা বলেন তিনি। এরআগে সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় ছাতক-সিলেট রেললাইনের ক্ষতিগ্রস্ত ছাতক-আফজলাবাদ অংশ পরিদর্শন করেন। মতবিনিময়কালে তিনি মুঠোফোনে সুনামগঞ্জ-৫ আসনের এমপি মুহিবুর রহমান মানিকের সাথেও এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বলেন, সিলেট-ছাতক রেললাইনের মধ্যে বন্যায় অধিক ক্ষতি হয়েছে ছাতক-আফজলাবাদ ১২ কিলোমিটার, আংশিক ক্ষতি হয়েছে আফজলাবাদ থেকে খাজাঞ্চি পর্যন্ত আরো ১২ কিলোমিটার। ক্ষতিগ্রস্ত লাইন মেরামতের জন্য ইতোমধ্যেই একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সিলেট-ছাতক রেললাইনকে আধুনিকায়ন এবং সুনামগঞ্জ পর্যন্ত বর্ধিতকরণে আরো একটি নুতন প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। মতবিনিময়কালে উপস্থিত স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ছাতক রেল-এর ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং পর্যাপ্ত রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমা হওয়ার বিভিন্ন ইতিবাচক দিক তুলে ধরেন। রেললাইনটি বন্ধ থাকায় বৃহত্তর ছাতক অঞ্চলসহ এই লাইনে যাতায়াতকারী জনসাধারণ মারাত্মক দুর্ভোগে রয়েছেন বলে বক্তারা উল্লেখ করেন।স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ছাতক থেকে দোয়ারাবাজার হয়ে সুনামগঞ্জ-মোহনগঞ্জ রেললাইন সম্প্রসারণে জোরালো যুক্তি তুলে ধরেন। নেতৃবৃন্দ জাতীয় অতি মূল্যবান সম্পদ ভোলাগঞ্জ-ছাতক পরিত্যক্ত রোপওয়েকে ক্যাবল কার স্থাপনের মাধ্যমে পর্যটন খাতে নিয়ে আসারও দাবি জানান। পরে বন্ধ থাকা দেশের একমাত্র রাষ্ট্রীয় কংক্রিট স্লিপার কারখানা পরিদর্শন করে কারখানাটি পুনরায় চালু করার ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলেন প্রতিনিধি দলের কর্মকর্তারা।

প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন আরো জানান, ইতোমধ্যে কংক্রিট স্লিপার কারখানায় ১৫ হাজার স্লিপার তৈরির ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ সময় রেলওয়ের সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন, রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন সহকারী প্রকৌশলী জুয়েল হোসেন, ঊর্ধ্বতন সহকারী প্রকৌশলী জুলহাস মাহমুদ, সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী (ছাতক) জুবায়ের আহমদ সর্দার, এডিবি’র কনসালটেন্ট রাকিবুল ইসলাম। বক্তব্য রাখেন ছাতক পৌরসভার সাবেক মেয়র আবুল ওয়াহিদ মজনু, ছাতক প্রেসক্লাব সভাপতি সৈয়দ হারুন-অর রশীদ, পৌর কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন সুমেন, আ’লীগ নেতা আফজাল হোসেন, ব্যবসায়ী নুরু মিয়া তালুকদার, ছাতক ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক শামছু মিয়া প্রমুখ।এ সময় সাংস্কৃতিক সংগঠক তপন তরফদার, আ’লীগ নেতা আব্দুল আওয়াল, ছাতক প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম, অর্থ সম্পাদক বিজয় রায়, ছাতক ডিড রাইটার সমিতির সেক্রেটারি রঞ্জন কুমার দাস, সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম আজির, ডিড রাইটার সাহাব উদ্দিন, রেলওয়ের উপ সহকারী প্রকৌশলী আব্দুন নূর, ছাতক রেলওয়ের মহব্বত আলী, শওকত আলী, সুহেল আহমদ, আরিফ আহমদ, আবু বক্কর সিদ্দিক, দিলোয়ার হোসেনসহ স্থানীয় লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

You might also like