হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু আজ

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

সৌদি আরবঃ ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক…’ ধ্বনিতে মুখরিত পবিত্র মক্কার অলিগলি ও কাবা চত্বর।বিশ্বের নানা প্রান্তের মুসলমানরা সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে হাজির হয়েছেন মক্কায়।সৌদি আরবের স্থানীয় এবং বিশ্বের ১৬০ দেশের ২০ লক্ষাধিক ধর্মপ্রাণ মুসলমান আজ থেকে পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা করবেন।আজ রবিবার সকাল থেকে মিনার উদ্দেশে যাত্রার মধ্য দিয়ে হজের মূল কার্যক্রম শুরু হবে। ৭ ও ৮ জিলহজ হাজিরা মিনার তাঁবুতে অবস্থান করবেন। এরপর পর্যায়ক্রমে আরাফাতের ময়দানে অবস্থান, মুজদালিফায় রাতযাপন এবং জামারাতে কঙ্কর নিক্ষেপ, কোরবানিসহ নানা আনুষ্ঠানিকতা পালন করবেন হাজিরা। জামারাতে কঙ্কর নিক্ষেপের মধ্য দিয়ে ১২ জিলহজ শেষ হবে হজের আনুষ্ঠানিকতা।পবিত্র হজপালনের জন্য ইতিমধ্যে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে হজযাত্রীরা সৌদি আরব পৌঁছেছেন। বাংলাদেশ থেকে এবার ১ লাখ ২২ হাজার ৫৫৮ জন হজপালন করবেন।সৌদি আরবে এ বছর ২৭ জুন হজ অনুষ্ঠিত হবে। পরের দিন ২৮ জুন সৌদি আরবে ঈদুল আজহা। আর বাংলাদেশে ঈদুল আজহা ২৯ জুন।

হজের যাবতীয় প্রস্তুতি প্রসঙ্গে সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রী ডা. তৌফিক আল রাবিয়া বলেন, রবিবার থেকে বিশ্বের লাখো মুসলিমের লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত হবে মক্কা। এ বছর ৩২ হাজারের বেশি স্বাস্থ্যকর্মী হজযাত্রীদের সেবা দেবেন। হজপালনে আল্লাহর অতিথিদের সব ধরনের সহযোগিতা করতে সরকার ও সৌদির জনগণ অংশ নেবে।পবিত্র স্থানগুলোতে পরিবহনব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে আল-রাবিয়া বলেন, মিনা, আরাফাত ও মুজদালিফার মতো স্থানগুলো একটি সমন্বিত পরিবহনব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। তা ছাড়া এক স্থান থেকে অন্যস্থানে যাওয়ার জন্য থাকবে ট্রেন ও বাস।মন্ত্রী হজযাত্রীদের জন্য করা বিস্তৃত ব্যবস্থাপনা সম্পর্কেও কথা বলেন। সব জায়গাতেই বিশেষ করে মিনায় সব ধরনের সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো হাজযাত্রীদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা।আল-রাবিয়া জোর দিয়ে বলেন, তার মন্ত্রণালয় আল্লাহর অতিথিদের স্বস্তি নিশ্চিত করতে ও হজে একটি সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে। এ ক্ষেত্রে কয়েক বছর ধরেই পরিশ্রম করছে সৌদি সরকার।

চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের হজে যাওয়ার জন্য সৌদি সরকারের সঙ্গে চুক্তি হয়। সে লক্ষ্যে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে চূড়ান্ত নিবন্ধন শুরু হয়। গত বছরের চেয়ে চলতি বছরের হজের খরচ অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় ৯ দফা সময় বাড়িয়েও কাক্সিক্ষত কোটা পূরণ করা যায়নি। সরকারি ও বেসরকারি দুই ক্যাটাগরিতে মোট নিবন্ধন করেছেন ১ লাখ ১৯ হাজার ৪৮৬ জন।এর মধ্যে হজযাত্রীদের সঙ্গে গাইড হিসেবে গেছেন ২ হাজার ৭১৫ জন। সরকারি ব্যবস্থাপনায় গাইড থাকবেন ২২৮ ও বেসরকারিভাবে থাকবেন ২ হাজার ৪৮৭ জন। হজযাত্রী, গাইডসহ মোট যাত্রী ১ লাখ ২২ হাজার ৫৫৮ জন। ওই হিসাবে ৪ হাজার ৯৯৭টি কোটা ফাঁকা রয়েছে। এ ফাঁকা কোটা সৌদি সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরত দেওয়া হয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারীর পর এবারই বড় পরিসরে হজের আয়োজন করা হয়েছে।সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২২ সালে ৯ লাখ ২৬ হাজার, ২০২১ সালে প্রায় ৫৯ হাজার এবং ২০২০ সালে মাত্র এক হাজার লোক হজপালন করেন। করোনা মহামারীর আগের বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে প্রায় ২৫ লাখ লোক হজপালন করেছিলেন। সামর্থ্যবান মুসলিম নারী-পুরুষের জন্য জীবনে একবার হজপালন ফরজ।

You might also like