নতুন মন্ত্রিসভার সদস্য হতে সিলেটের কোন এমপিরা সম্ভাবনাময়?

সত্যবাণী
সিলেট অফিসঃ দেশ স্বাধীন হওয়ার ৫২ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। এ ৫২ বছরে দেশে ১১টি নির্বাচন ও সরকার গঠন হয়েছে। ইতোমধ্যেই ১২তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনে ২২২ আসনে জয়লাভ করে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে আ’লীগ। নিরঙ্কুশ এই জয়ের ফলে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে দলটি। ১০ জানুয়ারি বুধবার শপথ নিচ্ছেন নবনির্বাচিত এমপিরা। আর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নেয়ার কথা।
এবারের নির্বাচনে সিলেট বিভাগ থেকে রেকর্ড পরিমাণ সরকার দলীয় এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। মন্ত্রীসভায় স্থান পাওয়ার সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, স্বাধীনতার পর থেকেই সব সরকারের প্রতিটি মন্ত্রিসভায় সিলেটের রাজনীতিবিদরা যোগ্যতার মাপকাটিতে স্থান পেয়েছেন। প্রতিটি  সরকার প্রধানই পূণ্যভূমি সিলেটকে আলাদা গুরুত্ব দিয়ে গেছেন। পররাষ্ট্র,কৃষি, অর্থ, পরিকল্পনা এমনকি প্রবাসীকল্যাণ বা বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেয়েছেন সিলেটের সুযোগ্য রাজনীতিবিদরা।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আ’লীগ নিরঙ্কুশ জয়ের পর টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। এর পূর্বমুর্হুতে সিলেটজুড়ে আলোচনা চলছে, কারা আসছেন মন্ত্রিসভায়, সিলেট থেকে কে বা কারা শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভায় স্থান পাচ্ছেন?
বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, এবার মন্ত্রিসভায় সিলেটের ‘ক্লিন ইমেজধারী’ ও অভিজ্ঞ সদস্যরা নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পেতে পারেন। এরমধ্যে বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের এমপি ড. একে আব্দুল মোমেন, পরিকল্পনামন্ত্রী ও সুনামগঞ্জ-৩ আসনের এমপি এমএ মান্নান, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ও সিলেট-৪ আসনের এমপি ইমরান আহমদ নতুন মন্ত্রিসভায় আবারও পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে স্থান পেতে পারেন। এই ৩ মন্ত্রী সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে বেশ সুনাম অর্জন করেছেন।
এবার মন্ত্রীসভা থেকে বাদ পড়তে পারেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী ও মৌলভীবাজার-৪ আসনের এমপি শাহাব উদ্দিন। এছাড়া এবার বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী নির্বাচনে জয়ী হতে পারেননি। তাই তার মন্ত্রীসভায় বাদ পড়া নিশ্চিত।
অন্যদিকে, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে স্থান পাওয়ার আলোচনায় রয়েছেন শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। তিনি মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনে আ’লীগ থেকে প্রথম বারের মতো এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। আ’লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে তিনি টানা দু’বার দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও বিসিবি’র নারী উইংসের চেয়ারম্যান। সিলেটের ক্রীড়াঙ্গনেও তার বেশ অবদান রয়েছে। তিনি সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদকেরও দায়িত্বে রয়েছেন।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী হিসেবে বেশ আলোচনায় রয়েছেন সিলেট-৫ আসন থেকে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত এমপি মাওলানা হুছামুদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী। তিনি প্রখ্যাত আলেম ও পীর আল্লামা আব্দুল লতিফ চৌধুরী ফুলতলী (রহ.)’র কনিষ্ঠপুত্র। তাঁর প্রতিষ্ঠিত অরাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ আনজুমানে আল-ইসলাহর কেন্দ্রীয় সভাপতি হুছামুদ্দিন।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন সুনামগঞ্জ-৪ আসনের আ’লীগ থেকে প্রথমবার নির্বাচিত এমপি ড. মোহাম্মদ সাদিক। সিভিল সার্ভিসের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের অধিকারী মোহাম্মদ সাদিক বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি শিক্ষাসচিব ও নির্বাচন কমিশন সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কর্মকমিশনের সদস্য পরে সাংবিধানিক সংস্থাটির চেয়ারম্যান হিসেবেও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন সাদিক। এ সময় তিনি পরিক্ষাপদ্ধতির নানা সংস্কারের জন্য ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হন।
যেভাবে গঠিত হবে নতুন মন্ত্রিসভাঃ
নিয়ম অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন থেকে এমপি নির্বাচিত হওয়ার গেজেট প্রকাশের পর তাঁদের শপথ পড়ানো হবে। এরপর এমপিরা বৈঠক করে সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচন করবেন। রাষ্ট্রপতি সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতাকে সরকার গঠনের আহ্বান জানাবেন। প্রথমে প্রধানমন্ত্রীকে শপথ পড়ানো হবে। এরপর নিয়োগপ্রাপ্ত মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা শপথ নেবেন। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। শপথের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে দপ্তর বণ্টন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। আর এরমধ্য দিয়েই নতুন সরকারের যাত্রা শুরু হবে।
মন্ত্রিসভা গঠন প্রসঙ্গে সংবিধানের ৫৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, মন্ত্রিসভায় একজন প্রধানমন্ত্রী থাকবেন, যিনি সংসদ সদস্য, সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের আস্থাভাজন বলে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রতীয়মান হবেন, রাষ্ট্রপতি তাকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী যেভাবে নির্ধারণ করবেন, সেভাবে অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী, অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীকে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দিয়ে থাকেন।

You might also like