সাবেক রাষ্ট্রদূত ডঃ তোজাম্মেল টনি হকের ইন্তেকাল: লন্ডন বাংলাদেশ হাই কমিশনের শোক

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী 

লন্ডন: বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করার সংগ্রামের উদ্যোক্তা ও নেতৃত্ব দানকারী বৈশ্বিক সংগঠন ‘অরগ্যানাইজেশন ফর দ্য রিকগনিশন অব বাংলা এজ এন অফিসিয়াল ল্যাঙ্গুয়েজ অব দ্য ইউনাইটেড ন্যাশনস’ কেন্দ্রীয় সংসদের প্রেসিডেন্ট, ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত ,বৃটেনে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ডঃ তোজাম্মেল টনি হক এমবিই যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম নগরীতে গতকাল ৯ মে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে শেষ নিঃশ্বাস করেন।
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রা’জিউন।মৃত্যুকালে
তাঁর বয়স হয়েছিলো ৮৪ বছর। মৃত্যুকালে তিনি সহধর্মিণী মিসেস হক এবং এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তান রেখে গেছেন।
যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী বার্মিংহামে অভিবাসী তোজাম্মেল টনি হক পেশায় একজন শিক্ষক ছিলেন। বার্মিংহামের একটি সেকেন্ডারি স্কুলের হেড টিচার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৭১ সালে বৃটেনে তিনি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম একজন সংগঠক হিসাবে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন ।

রাষ্ট্রপতি জেনারেল হোসাইন মুহাম্মদ এরশাদ সরকারের আমলে তিনি ফ্রান্সে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ লাভ করেন। কূটনীতিক-এর দায়িত্ব পালন শেষে তোজাম্মেল টনি হক এমবিই জাতিসংঘের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইউনেস্কো (UNESCO)-এর এশিয়া-প্যাসিফিক রিজিয়নে প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

উল্লেখ্য, তোজাম্মেল টনি হকের দেশের বাড়ি রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ জেলায়। দীর্ঘদিন যাবৎ তিনি সপরিবারে বার্মিংহামে অভিবাসী ছিলেন।

হাই কমিশনার মুনা তাসনিমের শোক

এদিকে,  যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রবাসী সংগঠক জনাব তোজাম্মেল টনি হক এমবিই-এর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম। এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, জনাব টনি হক যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অন্যতম প্রধান প্রবাসী সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। পরর্বতীতে তিনি ইউনেস্কোতে তাঁর কুটনৈতিক প্রজ্ঞার মাধ্যমে বাংলাদেশে শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক স্বার্থ রক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। বার্মিংহামে বসবাসকারী জনাব হক ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের কাছে ছিলেন একজন পরম শ্রদ্ধার মানুষ। তিনি বার্মিংহামবাসীসহ ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের যেকোন স্বার্থ সুরক্ষায় ও কল্যাণে সবসময় নিবেদিততিপ্রাণ ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে জাতি একজন শ্রেষ্ঠ সন্তানকে এবং বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যে বসবাসকারি বাংলাদেশি ভাই ও বোনেরা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রবাসী সংগঠক এবং কমিউনিটির একজন অত্যন্ত প্রিয় ও আস্থাভাজন ব্যক্তিত্ব এবং নেতৃত্বকে হারালো।

হাই কমিশনার বলেন, প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক চিন্তা-চেতনার এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের মুল্যবোধের ধারক-বাহক মরহুম টনি হক মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসী সংগঠক হিসেবে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য বাংলাদেশে এবং বাংলাদেশি-ব্রিটিশদের মধ্যে চির-স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। আমি মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি ও বাংলাদেশ হাইকমিশন, লন্ডনের পক্ষ হতে তাঁর শোক-সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। আমি মহান আল্লাহ তা‘য়ালার দরবারে মরহুমের জান্নাতুল ফেরদৌস প্রাপ্তির জন্য দোয়া করছি।

আরও শোক

অর্গ্যানাইজেশন ফর দ্য রিকগনিশন অব বাংলা এজ এন অফিসিয়াল ল্যাঙ্গুয়েজ অব দ্য ইউনাইটেড ন্যাশনস কেন্দ্রীয় সংসদের প্রেসিডেন্ট তোজাম্মেল টনি হক এমবিই’র মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট কে এম আবু তাহের চৌধুরী এবং সেক্রেটারি জেনারেল তফজ্জুল হোসেন চৌধুরী।
এক শোকবার্তায় নেতৃদ্বয় মরহুমের রূহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
সংগঠণের পক্ষে আরো শোক প্রকাশ করেছেন -প্রেস সেক্রেটারী শেখ মোঃ মফিজুর রহমান ,কামরুল হাসান চুনু ,ফয়জুর রহমান চৌধুরী এমবিই ,সৈয়দ আব্দুল ক্বাইয়ুম কয়ছর ,আবু তাহের এমবিই ,মাসুদ আহমদ ও মকিস মনসুর সহ সকল কেন্দ্রীয় ও শাখার নেতৃবৃন্দ ।
বিবৃতিতে তারা বলেন -বৃটেনে বাংলাদেশী কমিউনিটির সেবায় মরহুমের অবদান ভুলে যাওয়ার নয় ।মহান আল্লাহ তাঁর জীবনের সকল ভুল ত্রুটি মাফ করে দিন ও বেহেশত নছিব করুন ।

 

You might also like