ঈদ পরবর্তী দুর্ঘটনা রোধে সড়কে তদারকি বাড়ানোর নির্দেশ সেতুমন্ত্রীর

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

ঢাকাঃ ঈদ পরবর্তী দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সড়কে তদারকি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ঈদ পরবর্তী নজরদারি কমানোর কারণে সড়কে দুর্ঘটনা বেড়ে যায়। এই দুর্ঘটনাই সবচেয়ে বড় দুর্ভাবনা। দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সড়কে তদারকি বাড়াতে হবে। সেতুমন্ত্রী আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঈদুল আজহা উদযাপন উপলক্ষে সড়কপথে যাত্রী সাধারণের যাতায়াত নিরাপদ ও নির্বিঘœ করায় করণীয় ঠিক করতে আয়োজিত সভা থেকে তিনি এ নির্দেশনা দেন।ওবায়দুল কাদের বলেন, হেলপার যেন ড্রাইভার না হয়, সেদিকে নজর দিতে হবে। হেলপার ড্রাইভার হলে তো দুর্ঘটনা হবেই।ঈদ যাত্রা যানজটমুক্ত রাখতে ঢাকার প্রবেশপথসহ বিভিন্ন পয়েন্ট বাড়তি নজরদারি ও গাড়ি সরবরাহ পর্যাপ্ত রাখার কথা বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।তিনি বলেন, কুমিল্লা থেকে ঢাকায় আসা যায় ৩০/৪০ মিনিটে আর আর ঢাকায় হানিফ ফ্লাইওভার দেড় দুই ঘন্টা বসে থাকতে হয়। গাড়ির চাপে স্থবির হয়ে থাকে হানিফ ফ্লাইওভার। নিচের দিকের কিছু কারণে এই সমস্যাটা হয়। তবে, জাতীয় স্বার্থেই এই সমস্যার সমাধান করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন সেতুমন্ত্রী।

ঈদে ঘরমুখো মানুষের কাছে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে বাস মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া দিতে গিয়ে অনেক সাধারণ যাত্রীর কাছে অর্থ থাকে না। জনগণের স্বার্থে বাস মালিকরা অতিরিক্ত ভাড়া বন্ধে কঠোরভাবে মনিটরং করার অনুরোধ করছি। বিআরটিসিও এই কাজটা করে।সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, ঈদুল আজহায় সড়কে সড়কে পশুবাহী গাড়ির চাপ থাকে, যা রোজার ঈদে থাকে না। পশুবাহী গাড়ি ও পশুরহাট নিয়ে বাড়তি মনোযোগ দিতে হবে। গাজীপুরে বিআরটিএ প্রকল্পে আগে যানজট ছিল এখন নেই। ঈদযাত্রায় বিশেষ করে সমস্যা দেখা দেয় গার্মেন্টসে ছুটির দিনে। বিশেষত চন্দ্রায়।তিনি বলেন, হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় হাঁটতে থাকে। গাড়ি প্রয়োজনের তুলনায় কম থাকে। সেখানে বিআরটিসি গাড়ি রাখতে হবে। শ্রমিকদের বাড়ি যাওয়ার একটা অস্থিরতা থাকে। সেটা সামাল দিতে হবে প্রয়োজনীয় গাড়ি সরবরাহ করে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, হেলমেট ছাড়া কেউ যেন মোটরসাইকেল চালাতে না পারে সেজন্য বিশেষ নজর রাখতে হবে। বিশেষ করে যারা রাজনীতি করে তারা এটা মানতে চায় না। মন্ত্রী সাহেবের লোক অমুকের লোক বলে যেন পার না পায়। দুর্ঘটনাই সবচেয়ে বড় দুর্ভাবনা।সেতুমন্ত্রী বলেন, পশুবাহী গাড়ি তো ধীর গতিতে চলবে। তবে গাড়ির যেন ফিটনেস থাকে। প্রথম কথা ফিটনেস। ঢাকা শহরের লক্করঝক্কর গাড়ি। রং দিয়ে কি করবেন। জীর্ণশীর্ণ চেহারার কতগুলো গাড়ি যেমন মালঞ্চ, প্রতিদিনই দেখি তাকানো যায় না। বাংলাদেশ এত এগিয়ে গেল আর বাসমালিকদের দৃষ্টিভঙ্গি এত নিচে নেমে গেল! পরিস্থিতির তেমন উন্নয়ন হয়নি। রাস্তায় এত ভিজিট করার পরও!ঈদের সময় ঢাকা শহরে রাস্তা খোড়াখুড়ি বন্ধের নির্দেশ দিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, বৃষ্টির সময় খোড়াখুড়িতে শহরে যানজট সৃষ্টি হয়। নির্মীয়মান রাস্তার কাজ অন্তত সাত দিন বন্ধ রাখতে হবে। সিএনজি স্টেশন ঈদের আগে সাতদিন এবং পরে ৫ দিন সার্বক্ষণিক খোলা রাখতে হবে।সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, প্রধান সড়কের পাশে যেন কোরবানির হাট না বসে। এছাড়া বিআরটিএ, পুলিশ কমিশনার, সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সওজ অধিদপ্তর, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে যাত্রী সাধারণের যাতায়াত নিরাপদ ও নির্বিঘœ করার জন্য মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা।এছাড়াও ঈদের দিনসহ এর আগের ৩ দিন ও পরের ৩ দিন মহাসড়কে পশুবাহী গাড়ি ছাড়া ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও লরি চলাচল বন্ধ রাখা হবে। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য-দ্রব্য, পচনশীল দ্রব্য, গার্মেন্টস সামগ্রী, ওষুধ, সার এবং জ্বালানি বহনকারী যানবাহন আওতামুক্ত রাখা।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে সভায় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেন, ডিএমটিসিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক, বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার, বিআরটিসি’র চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান, বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. আতিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মশিউর রহমান রাঙ্গাঁ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহসহ অন্যান্য অংশীজনদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

You might also like