সুনামগঞ্জে বন্যার পানি কিছুটা কমেছে-কিন্তু কমেনি জনদুর্ভোগ
সিলেট অফিস
সত্যবাণী
সিলেট: গত দু’দিন ধরে বৃষ্টি কমায় সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানিও হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে বিপৎসীমার কিছুটা নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ৪৮ ঘণ্টায় পানি কমেছে অনেক। তবে এখনও মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। নদী তীরবর্তী এলাকায় পানি কমলেও হাওর ও নিম্নাঞ্চলের অনেক রাস্তাঘাটে পানি রয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়া সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
টানা বৃষ্টিপাত আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে গত ১৬ জুন থেকে ১৩ জুলাই শনিবার পর্যন্ত পানিবন্দী অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন সুনামগঞ্জ পৌর শহরের পশ্চিম হাজীপাড়ার বাসিন্দারা।
সুনামগঞ্জ জেলা ৩ দফা বন্যা পরিস্থিতির কবলে পড়ে। সব এলাকা থেকে পানি নেমে গেলেও অপরিবর্তিত রয়েছে পশ্চিম হাজীপাড়ার বন্যা পরিস্থিতি।
সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানান, প্রথম দফা বন্যার পানি নামার আগেই আরো দু’বার বন্যা আক্রান্ত হয়েছেন তারা। বসতঘর থেকে পানি নামার কোনো রাস্তা নেই, কারণ আশপাশের সবখানেই পানি।
পশ্চিম হাজীপাড়া এলাকার জনৈক বাসিন্দা গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা খুব খারাপ অবস্থায় আছি। পরিবার-পরিজন নিয়ে চলাফেরা করা খুব কষ্টের। পর পর ৩ দফা বন্যার কবলে পড়েছি। কবে মুক্তি পাবো পানিবন্দী দশা থেকে তা জানি না।
একই এলাকার বাসিন্দা এক গৃহিনী গণমাধ্যমকে বলেন , গত একমাস যাবৎ পানির সঙ্গে যুদ্ধ করছি। ঈদের দিন ঈদ পালন বাদ দিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাই এবং ১০ দিন পরে বাসায় ফিরেছি। বাসায় ফিরে দেখি পানি নামেনি। এখন পর্যন্ত পানিতেই আছি। বাসার সবাই অসুস্থ হয়ে গেছে। কে যে কাকে সামলে রাখবে তা বলা দায়।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, রৌদ্রজ্জ্বল দিনের কারণে ও বৃষ্টিপাত না হওয়ায় অনেক জায়গা থেকে পানি কমে গেছে। বর্তমানে সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে অবস্থান করছে।
সুনামগঞ্জ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আহসান জামিল আনাস গণমাধ্যমকে জানান, আমাদের এলাকায় মূলত পানি নামার কোনো রাস্তা নেই। এই এলাকার পাশেই রয়েছে ঝাওয়ার হাওর, আর হাওর পানিতে পরিপূর্ণ থাকার কারণে পানি নামতে পারছে না। আমাদের পৌরসভার দায়িত্বশীলরা এলাকা পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং পানি যাতে দ্রুত নেমে যায় সে ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রক্রিয়াধীন।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় সুরমা নদীর পানি কমেছে এবং বিপৎসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে আরও কয়েকদিন মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি হলে আবারও নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে।