অ্যাকশনে যাচ্ছে পুলিশ ওসমানী শিশু উদ্যানের সামনে অবৈধ স্ট্যান্ড
চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী
সিলেট থেকেঃ যান্ত্রিক জীবনে একটু স্বস্তির নিশ্বাস ফেলা ও শিশুদের বিনোদন দিতে নগরবাসি ছুটে যান বঙ্গবীর ওসমানী শিশু উদ্যানে। কিন্তু সেখানে গিয়েও পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। কারণ, প্রবেশমুখে পরিবহন শ্রমিকরা স্থাপন করেছেন অবৈধ স্ট্যান্ড।
লেগুনা ও সিএনচিজালিত অটোরিকশা এলোপাতাড়ি করে রাখা হয় উদ্যানের প্রবেশমুখসহ দ’ুপাশে প্রায় আধ কিলোমিটার জুড়ে। ভোর থেকে সেখানে শুরু হয় পরিবহন শ্রমিকদের হৈ-হুল্লুড়, থাকে মধ্যরাত পর্যন্ত। ফলে ওসমানী শিশু উদ্যানে আসা পর্যটক কিংবা ভ্রমণপিপাসুদের পোহাতে হয় চরম ভোগান্তি। তবে আশার কথা। পুলিশ বলেছে, শিগগিরই নাকি তারা অবৈধ এসব স্ট্যান্ড উচ্ছেদে অ্যাকশনে যাচ্ছে। সিলেট মহানগরির ধোপাদিঘির পাড়ে অবস্থিত এই বঙ্গবীর ওসমানী শিশু উদ্যান। মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এমএজি ওসমানীর নামে তারই শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী ২০০০ সালে স্থাপিত হয় এটি। এই পার্ক স্থাপনে ব্যয় হয়েছিল প্রায় ৫ কোটি টাকা। প্রায় ৮ একর আয়তনের এই পার্কে বিভিন্ন বয়সী দর্শনার্থী ভিড় করেন প্রতিদিন। পর্যটন নগরি সিলেটে পর্যটকদেরও আকর্ষণের একটি বড় জায়গা দখল করে আছে এই পার্ক। কিন্তু পার্কটির প্রবেশমুখ পুরোটাই এখন স্ট্যান্ড। ফলে পথচারীদের পাশাপাশি বিপাকে পড়তে হয় পার্কে আসা দর্শনার্থীদের। এই উদ্যানটি মানুষের কাছে শিশু পার্ক হিসেবে পরিচিত। প্রতিদিন বিকেল ও সন্ধ্যা পর্যন্ত শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়েসি নারী-পুরুষ পার্কে আসেন একটু স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে। শুধু এসব স্ট্যান্ড আগত দর্শনার্থীদের অস্বস্তির কারণ।সরেজমিনে দেখা গেছে, পার্কের সামনে রাজপথ দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে গাড়ির অবৈধ স্ট্যান্ড। বন্দরবাজার টু সোবহানীঘাট সড়কের জেলরোড পয়েন্ট থেকে শিশুপার্ক পর্যন্ত সড়কের বড় একটি অংশ জুড়ে দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে লেগুনা, অটোরিকশা ও টেম্পু স্ট্যান্ড। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পার্কের সামনে জুড়ে এসব গাড়ি পার্কিং করা থাকে। চালক ও শ্রমিকরা হাঁক-ডাক করে যাত্রী তুলেন গাড়িতে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পথচারীরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে পার্কের সামনে এসব স্ট্যান্ড বসিয়ে চাঁদাবাজি করছেন কতিপয় পরিবহন শ্রমিক নেতা। অথচ প্রশাসনের তরফে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না।দর্শনার্থীরা বলছেন, পার্কে শুধু নগর নয়, সিলেটের বাইরে থেকেও অনেক দর্শনার্থী আসেন। পার্কের সামনে প্রতিবন্ধকতা থাকা আগতদের বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়। শুধু তাই নয়, এ জন্য পার্কের সুন্দর্যও নষ্ট তো হচ্ছে। এছাড়াও রয়েছে আরও গুরুতর অভিযোগ। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা বলছেন, রাতের বেলা পার্কের সামনেই ফুটপাতে বসে মাদকসেবী পরিবহন শ্রমিকসহ বহিরাগতদের প্রকাশ্যে মাদকসেবনের উৎসব। এ বিষয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি)’র উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব গণমাধ্যমকে বলেন, নগরির সকল গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশ কর্মরত রয়েছেন। তবে বঙ্গবীর ওসমানী শিশু উদ্যানের সামনে ট্রাফিকের কোনো কর্মকর্তা থাকেন না। তিনি বলেন, এ উদ্যানের সামনের অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদে শিগগির-ই উদ্যোগ নেবে পুলিশ। তবে এও বলেন যে, নগরিতে পার্কিং স্পটের স্বল্পতা রয়েছে। ফলে অনেকক্ষেত্রে অবৈধভাবে পার্কিং করা গাড়ি সরানো কঠিন হয়ে পড়ে। এ সমস্যা দূর করতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।