অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের মৃত্যুতে যুদ্ধাপরাধ বিচারমঞ্চ যুক্তরাজ্য শাখার শোক প্রকাশ
মতিয়ার চৌধিুরী
সত্যবাণী
লন্ডনঃ দেশবরণ্যে আইনজ্ঞ বাংলাদেশের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে যুদ্ধাপরাধ বিচারমঞ্চ যুক্তরাজ্য শাখা। ৩০সেপ্টেম্বর বুধবার সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রেরিত এক শোক বার্তায় যুদ্ধাপরাধ বিচারমঞ্চের প্রেসিডেন্ট সাংবাদিক মতিয়ার চৌধুরী ও সেক্রেটারী মানবাধিকারনেত্রী রুমী হক অ্যাটর্নি জেনারেলের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জোনিয়েছেন।
শোক বার্তায় তারা বলেন মাহবুবে আলমের মৃত্যুতে জাতি তার এক শ্রেষ্ট্র সন্তানকে হারিয়েছে। মাহবুবে আলম অত্যন্ত নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ছিলেন একজন সৎ ও আদর্শ মানুষ ।আজীবন জাতির জনকের আদর্শের অনুসারী এই আইনজ্ঞ কোনোদিন অন্যায়ের সাথে আপোষ করেননি। তিনি আমৃত্যু দেশ ও জাতির কল্যাণে নিবেদিত ছিলেন। তার মৃত্যুতে দেশ একজন আদর্শ মানুষকে হারালো।’ মাহবুবে আলম ২০০৯ সালে অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পান।তিনি পদাধিকার বলে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যানও ছিলেন।অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে সর্বোচ্চ আদালতে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার বিচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন মাহবুবে আলম। এছাড়া সংবিধানের পঞ্চম, সপ্তম, ত্রয়োদশ ও ষোড়শ সংশোধনী মামলা পরিচালনাও করেন তিনি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের মামলায়ও যুক্ত ছিলেন মাহবুবে আলম। আলোচিত বিডিআর বিদ্রোহ হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবীর দায়িত্বে ছিলেন তিনি। তিনি এক মেয়াদে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এবং এক মেয়াদে সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন।
মাহবুবে আলমের জন্ম ১৯৪৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মৌছামান্দ্রা গ্রামে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৮ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স এবং ১৯৬৯ সালে লোক প্রশাসনে ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে ১৯৭২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি নেন। ১৯৭৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে এবং ১৯৮০ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আইন পেশা পরিচালনার অনুমতি পান মাহবুবে আলম। ১৯৯৮ সালে তিনি আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে ১৯৯৮ সালের ১৫ নভেম্বর থেকে ২০০১ সালের ৪ অক্টোবর পর্যন্ত অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন মাহবুবে আলম। ২০০৭ সালে দেশে জরুরি অবস্থা জারির আগে তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ছিলেন। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় যাওয়ার পর ২০০৯ সালের ১৩ জানুয়ারি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পান মাহবুবে আলম। তার পর থেকে টানা ১১ বছর তিনি এ দায়িত্বে ছিলেন। ৪ সেপ্টেম্বর জ্বর নিয়ে ঢাকা সিএমএইচে ভর্তি হয়েছিলেন মাহবুবে আলম। সেখানে নমুনা পরীক্ষায় তার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৮ সেপ্টেম্বর তার শারীরিক অবস্থার হঠাৎ অবনতি হলে গত ১৮ সেপ্টেম্বর আইসিইউতে নেওয়া হয়, সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক পুত্র ও এক কন্যা রেখে গেছেন।