আগামীকাল বাম রাজনীতির বাতিঘর জননেতা অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

ঢাকাঃ সোমবার এদেশের বাম আন্দোলন এবং সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম পুরাধা, মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের উপদেষ্টাপরিষদের সদস্য, ন্যাপের সাবেক সভাপতি জননেতা অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্র্ষিকী ।তিনি ৯৮ বছর বয়সে ২০১৯ সালের ২৩ আগস্ট ইšেতকাল করেন।স্কুল জীবনে তিনি মহাত্মা গান্ধীর প্রতি আকৃষ্ট হন। ১৯৩৭ সালে তিনি অবিভক্ত ভারতে নিষিদ্ধ ঘোষিত বাম ধারার ছাত্র সংগঠন ছাত্র ফেডারেশনের সাথে যুক্ত হন। সেই সময় কলকাতায় কমিউনিস্ট নেতা কমরেড মুজাফফর আহমেদের (কাকা বাবু) সঙ্গে তাঁর পরিচয় ঘটে। সেই সূত্রেই কুঁড়েঘর খ্যাত মোজাফফর আহমদের বাম রাজনীতিতে হাতে খড়ি ।

১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপনা ছেড়ে তিনি পুরোপুরিভাবে রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনে দেবিদ্বার আসনে মুসলীম লীগের জাঁদরেল প্রার্থী মফিজউদ্দিনকে বিপুল ভোটে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫৭ সালের ৩ এপ্রিল পূর্ববঙ্গ প্রাদেশিক পরিষদে অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ আঞ্চলিক স্বায়ত্ত্বশাসনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন।১৯৫৭ সালের ২৭ জুলাই মাওলানা ভাসানী, সীমাšত গান্ধী গফফার খান, ওয়ালী খানসহ সারা পাকিস্তানের প্রগতিবাদীদের সমন্বয়ে ন্যাপ গঠিত হলে অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ ন্যাপের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন। ১৯৫৮ সালে আইউবের সামরিক শাসন মোজাফফর আহমদের বিরুদ্ধে হুলিয়া, গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি এবং ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করে। তিনি আত্মগোপনে থেকে আন্দোলন সংগঠিত করেন। ৮ বছর আত্মগোপনে থেকে ১৯৬৬ সালে আবার প্রকাশ্য রাজনীতিতে ফিরে আসেন। ১৯৬৭ সালে পূর্ব পাকিস্তান ন্যাপের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬৯ এর মার্চ মাসে আইয়ুব খান আহুত গোল টেবিল বৈঠকে অধ্যাপক মোজাফফর দৃঢ় কণ্ঠে পূর্ব বাংলার স্বায়ত্বশাসন ও অন্যান্য রাজনৈতিক প্রশ্নে ন্যাপের বক্তব্য তুলে ধরেন।

১৯৭১ স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল নেতৃত্বের একজন এবং প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ। স্বাধীনতার পক্ষে আšতর্জাতিক সমর্থন আদায়ের জন্য সমাজতান্ত্রিক দূনিয়ার বিভিন দেশ সফর করেন। এ সে সময় তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি হয়ে জাতিসংঘে যান । মুক্তিযুদ্ধের সময় ন্যাপ-সিপিবি-ছাত্র ইউনিয়নের ১৯ হাজার বিশেষ গেরিলা বাহিনী গঠনে তাঁর ভূমিকা ছিল অবিস্মরণীয়।
অধ্যাপক মোজাফফর স্বাধীনতার কথা, আদর্শিক রাজনীতির কথা, সমাজতন্ত্রের কথা বলে তরুণদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করেছেন। তিনি দৃঢ় কণ্ঠে বলেছেন, রাজনীতির অর্থ দেশের সেবা, মানুষের সেবা। পদ বা পদবীর মোহ তাঁকে কখনও আকৃষ্ট করতে পারেনি। সরকার ২০১৫ সালে তাঁকে স্বাধীনতা পদক দেওয়ার ঘোষণা করলে তিনি তা সবিনয়ে গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন। তিনি ঢাকার অদূরে নারায়নগঞ্জস্থ মদনপুরে উপমহাদেশের অন্যতম রাজনৈতিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে ‘সামাজিক বিজ্ঞান পরিষদ’ প্রতিষ্ঠা করেন। আগামীকাল ২৩ আগষ্ট’২১ সোমবার রাত ৮টায় অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্র্ষিকতে ভার্চুয়াল স্বরণ সভা অনুষ্ঠিত হবে ।

You might also like