আজমিলা সূর্যমুখী চাষ করে স্বাবলম্বী হতে চায়
শামীম আহমদ তালুকদার
সত্যবাণী
সুনামগঞ্জ থেকেঃ সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে লামাপাড়ার খোলা মাঠ। মাঠের মাঝখানে দাড়িয়ে থাকা সূর্যমুখী ফুলগুলো সকালে সূর্যের সাথে হাসি দিয়ে করে আলিঙ্গন, বিকেলে মাথা নত করে বিদায় নেয় ফুলকলিরা। প্রতিদিন সূর্যমুখী ফুলের অনাবিল হাসিতে যোগদেন উপজেলা প্রকৃতি প্রেমিক নারী, পুরুষ। অসংখ্য লোকের ভীর জমে বিকেলের এই বাগানে। পরিচর্যায় সার্বক্ষণিক ব্যস্ত থাকে আজমিলা বেগম। বাগানের কাজে হাসি মুখে দিনের ক্লান্তি দূর করে। ফটো প্রেমিকদের সাথে কথা বলে আজমিলা। সে বলে, গত বছরে প্রতিবেশী কামালের বাগান দেখে এই উৎসাহ জাগে। আজমিলা কয়েকজনের পরামর্শে স্থানীয় কৃষি অফিসে যোগাযোগ করে বিনামূল্যে ফুলের বীজ, কিছু নগদ অর্থ ও সেই সাথে ইউরিয়া, জিপসাম, টিএসপি, এমপি, বরিক এসিড, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক ও সালফেট সহ ৭ রকমের সার এর সহায়তা পায়। ৩৩শতক ভুমির বর্গা বাবদ ৩০০০, চাষাবাদে ২০০০ টাকা, পানি সেচের ১৫০০, দিনমজুরী খরচ ২০০০, বাছাই ও রোপন কাজে ৩৫০০, টাকা সহ চারদিকে রক্ষণাবেক্ষনের জন্য ২০০০ টাকা সহ সর্ব সাকুল্যে ব্যয় হয়েছে ১৪,০০০টাকা। আজমিলার স্বামী মইন উদ্দিন বলেন, সূর্যমুখী ফুল চাষে আমার স্ত্রীর পরামর্শে অনেক পরিশ্রম করতাছি, আশা করি ভালা ফসল ও দাম পাইমো। আজমিলা বলেন, দাম পাইলে পরিবারের বহু দিনের রেইন পাওনা (ঋণ) শোধ কইরা শান্তি পাইমু। আমি রেইন মুক্ত ওইয়া নিজের পায়ে দারাইতাম চাই।
এই ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা আক্তার আঁখি জানান, সূর্যমুখী ফুল একটি সম্ভাবনাময় ফুল, যা তৈল জাতীয় ফসল । ইহা ব্যবহারে হৃদরোগ আরোগ্যে অত্যন্ত কার্যকর এবং ইহা রান্নার কাজে বিশুদ্ধ তেল। তিনি বলেন, আজমিলার ৩৩ শতক জমিতে প্রায় ৮ মন সূর্যমুখী ফসল হবার সম্ভাবনা রয়েছে। যার মূল্য প্রতি কেজি ১৩০ টাকা দরে, ৩২০ কেজি মূল্য ৪১,৬০০ টাকা। লাভবান হবেন ২৭হাজার টাকার মত। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাশরেফুল আলম বলেন, সূর্যমুখী ফুল একটি তৈল জাতীয় ফসল,রান্নার কাজে বিশুদ্ধ তেলের চাহিদা পূরনে কৃষি বিভাগের উদ্যোগে প্লট প্রদর্শনীর মাধ্যমে কৃষক কৃষানীকে উদ্বোদ্ধ করানোই এর লক্ষ্য। আজমিলার এই বাগান আরো অনেক কৃষানীকে সূর্যমুখী বাগান করতে অনুপ্রানিত করবে।