আ’লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে হবিগঞ্জে ২ শতাধিক আহত

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ হবিগঞ্জ শহরে আ’লীগ ও বিএনপি’র মধ্যে ২ ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে অন্তত ২ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। ২০ আগস্ট রোববার শহরের শায়েস্তানগর এলাকায় বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যে ৭টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছুলে তা ত্রিমুখী সংঘর্ষে রূপ নেয়। আ’লীগের ৩ জনকে গুরুতর আহতাবস্থায় সিলেটে পাঠানো হয়েছে।হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানান, শনিবার হবিগঞ্জ শহরে বিএনপি’র সন্ত্রাস-নৈরাজ্যের প্রতিবাদে রোববার বিকেলে শায়েস্তানগর পয়েন্টে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে আ’লীগ। সমাবেশ শেষে আ’লীগের নেতাকর্মীরা রড-রামদা-লাঠিসোটা নিয়ে মিছিল সহকারে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে হামলা করে ভাংচুর চালায়। এছাড়াও ওই এলাকার বিএনপি নেতাদের বাসাতেও হামলা চালায় তারা। একপর্যায়ে বিএনপি পাল্টা আক্রমণ করলে তা ভয়াবহ সংঘর্ষে রূপ নেয়। বিএনপি প্রচুর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে প্রথমে নীরব ভূমিকা পালন করে। পরে কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ অবস্থায় জেলা বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ও সাবেক মেয়র আলহাজ্ব জিকে গউছের বাসার সামনে অবস্থান নেয় বিএনপি নেতাকর্মীরা। এ সময় পুলিশ জেলা বিএনপি কার্যালয়ের রাস্তার মুখে এবং আ’লীগ সার্কিট হাউজের সামনে অবস্থান নেয়। পরে পুলিশ জেলা বিএনপি’র ২ নেতাকে ডেকে এনে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিলে বিএনপি অবস্থান থেকে সরে যায়।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সংঘর্ষ শুরু হওয়া মাত্রই আশেপাশের দোকানপাট ও মার্কেট বন্ধ করে দেয়া হয়। এছাড়া যান চলাচলও একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ওই এলাকা পুরোপুরি রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। যে কারণে শহরবাসীর মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে।বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, আ’লীগ-ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা তাদের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। এরপর শায়েস্তানগর এলাকার ঘরবাড়িতেও হামলা চালানো হয়। অথচ পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করেছে।জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. আলমগীর চৌধুরী বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সমাবেশ করেছি। সমাবেশ শেষে শান্তিপূর্ণ মিছিল বের করি। এ সময় হঠাৎ বিএনপি নেতাকর্মীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকলে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে আমাদের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তাদেরকে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তবে হতাহতের সঠিক তথ্য এখন দেয়া সম্ভব নয়।বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সমবায় সম্পাদক, সাবেক পৌর মেয়র জিকে গউছ বলেন, আ’লীগ নেতাকর্মীরা মিছিল সহকারে লাঠিসোটা নিয়ে হঠাৎ আমাদের দলীয় কার্যালয়ে হামলা করে। অফিসে ব্যাপক ভাংচুর করেছে। আমার বাসায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে। পুলিশও তাদের সাথে সংঘর্ষে যোগ দেয়। হামলায় পৌর কাউন্সিলর শফিকুর রহমান সিতুসহ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ বদিউজ্জামান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দু’পক্ষকে ফিরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। বর্তমানে সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে।

You might also like