ইসলামোফোবিয়া নিয়ে সিএফবিবি’র ভার্চুয়াল সেমিনার অনুষ্ঠিত
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
লন্ডনঃ বৃটিশ বাংলাদেশী থিংকট্যাংক সেন্টার ফর বৃটিশ-বাংলাদেশীজ (সিএফবিবি)‘র উদ্যোগে ৮ জানুয়ারী ‘ইসলামোফোবিয়া ইন বৃটিশ পলিটিক্স‘ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সিএফবিবি‘র চেয়ারম্যান, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, কাউন্সিলার ড. জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন রেডব্রিজ বারার লিডার কাউন্সিলার জাস আথওয়াল এবং লেবার পার্টির প্রথম বৃটিশ-বাংলাদেশী এনইসি (ন্যাশনাল এক্সিকিটিভ কাউন্সিল) মেম্বার মিস রাহমান। সেমিনারে সিএফবিবি‘র ভাইস চেয়ার বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা দিলওয়ার হোসাইন খান, সেক্রেটারী বিশিষ্ট সাংবাদিক নবাব উদ্দিন সহ অন্যান্য কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ, রাজনীতিবিদ, সমাজসেবী, শিক্ষাবিদ ও পেশাজীবিসহ প্রায় ৭০ জন অংশগ্রহণ করেন।
বক্তারা “ইসলামোফোবিয়াসহ সকল প্রকার বর্ণবাদ সম্পর্কে কনজারভেটিভ পাটির তদন্ত” সম্পর্কিত ‘হোপ নট হেট’ এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা করেন। রিপোর্টে বলা হয়, কনজারভেটিভ পার্টির প্রায় অর্ধেক সদস্য (৪৭%) বিশ্বাস করেন যে ইসলাম “ব্রিটিশদের জীবনযাপনের জন্য হুমকিস্বরূপ”। এতে আরো বলা হয় প্রায় 50% কনজারভেটিভ পার্টির সদস্যরা বিশ্বাস করেন যে ‘ইসলাম বাক স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অসহিষ্ণুতার জন্ম দেয় এবং সহিংস পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানায়’। প্রতিবেদনের উপসংহারে বলা হয়, যতক্ষণ না কনজারভেটিভ পার্টি মুসলমানদের এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর প্রতি বৈষম্যের সংস্কৃতির পরিবর্তন না করবে ততক্ষণ কনজারভেটিভ পার্টি ব্রিটিশ মুসলমানদের আস্থা অর্জন করতে পারবেনা।
অন্যদিকে, বক্তারা লেবার মুসলিম নেটওয়ার্ক (এলএমএন) দ্বারা প্রকাশিত প্রতিবেদনের কথাও তুলে ধরেন। যেখানে বলা হয়েছে মুসলিম লেবার পার্টির প্রায় অর্ধশতাধিক সদস্য নিজের পার্টির মধ্যেই ইসলামফোবিয়ার অস্তিত্ব প্রত্যক্ষ করেছেন। ৪২২ জন মুসলিম সদস্যের প্রতিক্রিয়া নিয়ে একটি সমীক্ষা থেকে প্রায় ৪৮% সদস্য বলেছেন যে তারা ইসলামফোবিয়ার কার্যকরভাবে মোকাবেলা করতে লেবার পার্টির অভিযোগ পদ্ধতিতে আস্থা রাখেন না। প্রায় ৫৫% সদস্য ইসলামফোবিয়াকে কার্যকরভাবে মোকাবেলায় পার্টির নেতৃত্বকে বিশ্বাস করেন না।
মিশ রহমান বলেন, ব্রিটিশ রাজনীতিতে ইসলামফোবিয়া এক ধরণের ‘স্বীকৃত বর্ণবাদ’ হয়ে উঠেছে। মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলি দ্বারা ব্রিটিশ মুসলমানদের সমর্থন গ্রহণের বিষয়টি অনেক দিন কেটে গেছে। ইসলামফোবিয়ার বিষয়ে দলীয় নীতি সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে জনাব রহমান তার হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী বোরিস জনসন যখন পর্দানশীন মুসলিম মহিলাদের ‘লেটারবক্স’ এর সাথে তুলনা করেছিলেন তখন সপ্তাহে ইসলামফোবিক ঘটনা ৩৭৫% বেড়েছে। মিঃ রহমান আশ্বাস দেন যে, তিনি ইসলামোফোবিয়া নিয়ে পক্ষপাতমূলক ধারণা, বিদ্বেষ এবং অসহিষ্ণুতা মোকাবেলায় দলীয় নীতিতে পরিবর্তন আনতে লেবার এনইসি-তে তাঁর সহকর্মীদের সাথে কাজ করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন।এক প্রশ্নের জবাবে, সিএলআর জাস আথওয়াল জোর দিয়ে বলেন যে, ইসলামফোবিয়া বর্ণবাদের এক রূপ এবং এটি আমাদের সমাজে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা বন্ধ করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ডঃ উদ্দিন বলেন, আমাদের সমাজে ইসলোমোফোবিয়াসহ সকল ধরণের বৈষম্য ও বর্ণবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে যাতে সকল মানুষ কোন আতংক ও হয়রানি ছাড়া নিরাপদে বসবাস করতে পারে। তিনি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সকলের প্রতি সিএফবিবির পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি