ইসির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতির কাছে ৪২ বিশিষ্ট নাগরিকের চিঠি
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
ঢাকাঃ নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি এবং অর্থসংশ্লিষ্ট গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তা তদন্ত করতে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেছেন ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিক।শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ১৪ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতির কাছে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে।চিঠিতে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ তদন্তে সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদের অধীনে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠনের আবেদন জানানো হয়।
৪২ জন নাগরিকের পক্ষে ওই চিঠি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক।
সংবাদ সম্মেলনে শাহদীন মালিক বলেন, আমরা সবাই মনে করেছি দায়িত্ব গ্রহণ করার পর নির্বাচন কমিশন যেসব কার্যকলাপ করেছে, সেগুলো গুরুতর অসদাচরণ।সাংবিধানিক পদে যারা আছেন তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করার ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের। দুদক বা পুলিশ এটা করতে পারবে না। রাষ্ট্রপতি এ নির্দেশ দিতে পারেন। এই প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রপতিকে অভিযোগ জানিয়েছি।তিনি বলেন, সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠন করে তদন্ত হওয়া উচিত। আমরা আশা করছি, গুরুতর অসদাচরণের দায়ে তারা দোষী হবেন। সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের সুপারিশ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি তাদের পদ থেকে অপসারণ করবেন।চিঠিতে সই করা বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন- অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, অবসরপ্রাপ্ত সচিব আকবর আলি খান, অবসরপ্রাপ্ত মহা হিসাব-নিরীক্ষক এম হাফিজউদ্দিন খান, মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল, শিক্ষাবিদ রাশেদা কে চৌধুরী।
৪২ বিশিষ্ট নাগরিকদের মধ্যে আরও যারা এই চিঠিতে সই করেছেন তারা হলেন- মানবাধিকারকর্মী হামিদা হোসেন, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, অর্থনীতিবিদ ড. মইনুল ইসলাম, মানবাধিকারকর্মী খুশি কবির, সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির উপাচার্য পারভীন হাসান, সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আহমেদ কামাল, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না, শাহদীন মালিক, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, অর্থনীতিবিদ আহসান মনসুর, সাবেক সচিব আবদুল লতিফ মন্ডল, স্থপতি মোবাশ্বের হাসান, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, অধ্যাপক সি আর আবরার, আইনজীবী সারা হোসেন, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ, লুবনা মরিয়ম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আকমল হোসেন, সোয়াস ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের অধ্যাপক স্বপন আদনান, ব্রতীর প্রধান নির্বাহী শারমিন মুরশিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফিরদৌস আজিম, সাবেক ব্যাংকার সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ, সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, গোলাম মোর্তুজা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, অধ্যাপক শাহনাজ হুদা, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, ক্লিনিকাল নিউরোসাইন্স সেন্টার, বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশনের পরিচালক অধ্যাপক নায়লা জামান খান, নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, মানবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন যেভাবে আর্থিক অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছে, আগে কখনও দেখা যায়নি। আগের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। নির্বাচন কমিশনের নাম অবমাননা ও কলঙ্কিত করেছে।নির্বাচন কমিশনের অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কাছেও আবেদন করা হবে জানিয়ে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেছি, একইসাথে সরকার প্রধানের কাছেও যাব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছেও আবেদন করব। যতদিন সিদ্ধান্ত না হয়, ততদিন সিইসি ও কমিশনাররা স্বেচ্ছায় দায়িত্ব ছেড়ে দিতে পারেন, কেউ কেউ স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে পারেন। আমরা তা আশা করব।