উচ্চফলনশীল জাতের ধানের চাষ বাড়ালে চাল রপ্তানিও করা যাবে-কৃষিমন্ত্রী
সিলেট অফিস
সত্যবাণী
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ এমপি বলেছেন, নতুন উচ্চ ফলনশীল জাতের ধানের চাষ সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে চাল রপ্তানি করাও সম্ভব হবে। তিনি বলেন, আমাদের প্রধান খাদ্য ভাত। বর্তমানে আমাদের জনসংখ্যা ১৭ কোটি। ক্রমবর্ধমান এই বিশাল জনগোষ্ঠীর খাদ্য চাহিদা মিটাতে হলে চালের উৎপাদন আমাদেরকে অবশ্যই আরো বৃদ্ধি করতে হবে। সেজন্য, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং বিনা উদ্ভাবিত নতুন জাতের উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। এ জাতের ধান চাষ হলে নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে চাল রপ্তানি করাও সম্ভব হবে।
শ্রীমঙ্গল থেকে সংবাদদাতা জানান, ২২ এপ্রিল সোমবার দুপুরে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার হাইল হাওরে রুস্তমপুর গ্রামে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট আয়োজিত বোরো ধান কর্তন উৎসব অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। তাঁর আগে মন্ত্রী বাংলাদেশ বর্ডার গাড বিজিবি শ্রীমঙ্গল সেক্টর আয়োজিত ১১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে প্রীতিভোজে যোগ দেন।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের সারা বছরের মোট চাল উৎপাদনের অর্ধেকেরও বেশি যোগান দেয় বোরো ধান। সেজন্য এ বছরও বোরোর আবাদ ও ফলন বাড়াতে আমরা ২১৫ কোটি টাকারও বেশি প্রণোদনা কৃষকদেরকে প্রদান করেছি। এরফলে এ বছর সারাদেশে ৫০ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এবার ২ কোটি ২২ লাখ টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
কৃষকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ব্রি ধান-৮৯, ব্রি ধান-৯২, বঙ্গবন্ধু ধান-১০০, ব্রি ধান-১০২, বিনাধান-২৫ প্রভৃতি নতুন জাতগুলোর ফলন আগের পুরনো জাত ব্রি ধান-২৮ ও -২৯ এর তুলনায় অনেক বেশি। এসব জাতের নতুন ধান চাষ করে কৃষকরা অভূতপূর্ব ফলন পেয়েছেন। এলাকাভেদে জাতগুলোর বিঘাপ্রতি গড় ফলন হয়েছে ২৫-৩০ মণ। এগুলোর চাষ বাড়াতে হবে।
এরআগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বোরো ধানের উৎপাদন খরচ হিসেব করেই ধানের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে, যাতে কৃষকেরা ন্যায্যমূল্য পান। গত বছরের চেয়ে এ বছর ধানের মূল্য কেজি প্রতি ২ টাকা বাড়ানো হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, ৭০% ভর্তুকিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষকদের কৃষিযন্ত্র দিয়ে যাচ্ছেন। এটি বিশ্বের বিরল উদাহরণ। এই মুহূর্তে হাওরে প্রায় ৯ হাজার কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটা চলছে। এরফলে দ্রুততার সঙ্গে ধান কাটা সম্ভব হচ্ছে ও হার্ভেস্টের কারণে সময় ও ধানের অপচয়ও কম হচ্ছে।
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক উর্মি বিনতে সালাম-এর সভাপতিত্বে স্থানীয় এমপি মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শাহ মো. হেলাল উদ্দীন, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক তাজুল ইসলাম পাটোয়ারী, সিলেট অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মো. মতিউজ্জামান, উপ-পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ, মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মনজুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান শেষে কৃষকদের মধ্যে ভর্তুকিমূল্যে ধান কাটার অত্যাধুনিক কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন বিতরণ করেন কৃষিমন্ত্রী।
পরে অনুষ্ঠিত মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ধামাইল, ঝুমুর নৃত্যসহ লোকজ গান পরিবেশিত হয়।